ভালোবাসার টানে গোপালগঞ্জে এসে এক যুবককে বিয়ে করেছেন জার্মানির এক নারী।
জেলা শহরে একটি আদালতে এফিডেভিটের মাধ্যমে রোববার তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। এতে হইচই পড়েছে পুরো এলাকায়।
কাশিয়ানী উপজেলার জোতকুরা গ্রামের চয়ন ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হওয়া জেনিফা স্ট্রায়াস জার্মানির মাধ্যমিক লেভেলের শিক্ষার্থী। দেশটির বাইলেফেল্ড স্টেটে বাবা-মার সঙ্গেই বসবাস করেন তিনি। তার বাবার নাম জোসেফ স্ট্রায়াস ও মায়ের নাম এসাবেলা স্ট্রয়াস।
চয়নের পরিবারের সদস্যরা জানান, জার্মানির তরুণী জেনিফার স্ট্রায়াস ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এসে নামেন। সেখানে তার প্রেমিক চয়ন ইসলাম ও স্বজনরা তাকে স্বাগত জানান এবং রাতেই তারা জেনিফারকে নিয়ে গোপালগঞ্জ শহরে চলে আসেন। রোববার সকালে পরিবারের লোকজন নিয়ে আদালতে গিয়ে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
চয়নের ইতালি প্রবাসী বাবা রবিউল ইসলামের সুবাদে চয়নও ইতালিতে যান বেশ কয়েক বছর আগে। এর কিছুদিন পর ইতালি থেকে জার্মানিতে চলে যান। প্রায় পাঁচ বছর আগে জার্মান ভাষা শিখতে একটি শিক্ষা কোর্সে ভর্তি হন। সেখান থেকেই পরিচয় হয় জেনিফারের সঙ্গে। আর সে পরিচয় থেকেই তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়।
২০২২ সালের ১০ মার্চ চয়ন বাংলাদেশে চলে আসলেও তাদের প্রেমের কোনো টানাপোড়েন হয়নি। ভালোবাসার টানে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে জেনিফার ছুটে আসেন প্রেমিক চয়নের কাছে। গোপালগঞ্জে পৌঁছানোর পরে চয়নের স্বজনরা ফুল দিয়ে বরণ করে নেন জেনিফারকে।
বাবা জোসেফ ট্রায়াস মেয়ে জেনিফারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে চলেছেন। এ বিয়েতে জেনিফারের বাবা-মাসহ পরিবারের সবাই খুব আনন্দিত।
জেনিফার তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, ‘বাংলাদেশের ছেলেকে আমি ভালোবেসে খুশি হয়েছি। এখানকার পরিবেশ, আতিথেয়তা ও সবার ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছে। পরিবারের সবাই আমাকে আপন করে নিয়েছে। সবাইকে নিয়ে মিলেমিশে চলতে পেরে আমি ভীষণ খুশি হয়েছি।’
চয়ন ইসলাম বলেন, ‘আমি জার্মানিতে পড়াশোনা করার সময় জেনিফারের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে ভালোবাসা হয়। দীর্ঘ ৫ বছরের সম্পর্ক আমাদের । আমি একটি চাকরি করতাম। সেখানে মালিকের সঙ্গে মনোমালিন্য হলে চাকরি ছেড়ে বাংলাদেশে চলে আসি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভালোবাসার টানে জেনিফার বাংলাদেশে চলে এসেছে। আমরা বিয়ে করেছি, এতে আমার ও জেনিফারের পরিবারের সবাই খুব খুশি হয়েছে। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’