ঠাকুরগাঁওয়ে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাঁশ দিয়ে শহীদ মিনার বানিয়ে তাতে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।
সদর উপজেলার শহরতলী গ্রাম আকচা মুন্সিপাড়ার শামসিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মঙ্গলবার সকালে দেখা যায় এমন চিত্র। গ্রামের পথ দিয়ে প্রভাতফেরি করে বাঁশের তৈরি শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শিশুসহ স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্কুলটিতে কোনো শহীদ মিনার নেই। এ ব্যাপারে দায়িত্বশীল কারো বক্তবও পাওয়া যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গ্রামের সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের আয়োজনে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের লক্ষ্যে বাঁশ দিয়ে এই শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানেই প্রভাতফেরি করে ভাষা শহীদদের ফুলের শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। এ শহীদ মিনারে ফুল দিতে আসেন আশেপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের সাবেক ছাত্র মাহাবুব আলম রুবেল বলেন, ‘শহরতলীর একটি গ্রামে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে এমন প্রভাতফেরি এখন আর দেখা যায় না। এ আয়োজন যেমন এই গ্রামের মানুষের একুশের চেতনাকে জাগ্রত করেছে তেমনই একুশের চেতনা ছড়িয়ে দিয়েছে আশেপাশের কয়েকটি গ্রামে। আমার এমন উদ্যোগ দারুণ লেগেছে।’
উপজেলার শহরতলী গ্রাম আকচা মুন্সিপাড়াতে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে প্রভাতফেরি। ছবি: নিউজবাংলা
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আফসানা আক্তার বলেন, ‘শহীদ মিনারে ফুল দিতে পেরে আমার ভালো লেগেছে। আমি সকালে ফুল নিয়ে প্রভাতফেরি করেছি। এখানে আমাদের জন্য চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতারও ব্যবস্থা আছে।’
স্থানীয় ফাতেমা আক্তার বলেন, ‘গত বছর থেকে আমাদের গ্রামে বাঁশ দিয়ে শহীদ মিনার বানানো হচ্ছে। একুশে ফেব্রুয়ারিতে গত বছর প্রথম ফুল দিয়েছিলাম। এবারও ফুল দিয়েছি। গত বছরের ভালো লাগা থেকে দিনটির জন্য এক বছর অপেক্ষা করেছি। আমরা আমাদের সন্তানদের এখানে নিয়ে এসেছি।’
আকচা তরুণ শক্তি (আতশ) এর সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক বলেন, ‘একুশ আমাদের অহংকার। আমরা চাই আমাদের গ্রামের নতুন প্রজন্ম একুশের চেতনায় উজ্জীবিত হোক। আমরা গত দুই বছর ধরে বাঁশের তৈরি শহীদ মিনার নির্মাণ করছি। এখানে একটি স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করার দাবি জানাই।’