কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্যাতনের অভিযোগকারী নবীন ওই ছাত্রী সোমবার সাক্ষ্য দিয়েছেন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির সামনে। একই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি জিজ্ঞাসাবাদ করেছে অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীকে।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে এসে তারা কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। বলেন, ‘যা বলার তদন্ত কমিটিকে বলেছি। তারাই জানাবেন কে অপরাধী।’
সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় অভিভাবকদের সঙ্গে করে নির্যাতিত ছাত্রী আসেন প্রক্টরের কার্যালয়ে। অন্যদিকে সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি কথা বলেছে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী ও তার সহযোগীর সঙ্গে। তদন্তে অনেক অগ্রগতি হয়েছে জানালেও জিজ্ঞাসাবাদে কী পাওয়া গেছে তা বলেননি কোনো কমিটির সদস্যরা।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ১২ ফেব্রুয়ারি নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ করেন নবীন এক শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে।
সোমবার দুপুরের পর তারা প্রক্টরের কার্যালয়ে অভিযোগকারী ছাত্রীর বক্তব্য শুনেছে। কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানা পুলিশের গাড়িতে করে ওই ছাত্রীকে নিয়ে আসা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রক্টরের রুমে তদন্ত কমিটির সদস্য কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আ. ন. ম. আবুজর গিফারী, কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা সুলতানা ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহবুব আলমের সামনে তিনি নির্যাতনের বর্ণনা দেন।
সোমবার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেন অভিযোগকারী শিক্ষার্থী। ছবি: নিউজবাংলা
এর আগে শনিবার দিনভর বিশ্ববিদ্যালয় ও নির্যাতনের স্পট দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল কর্তৃক গঠিত পৃথক দুটি তদন্ত কমিটির সামনে তিনি নির্যাতনের বর্ণনা দেন।
বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির সদস্য সহকারী অধ্যাপক শাহবুব আলম বলেন, ‘আমরা কাজ শুরু করলাম মাত্র। এখনই কিছু বলতে পারছি না।’
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি সোমবার সকাল থেকে কথা বলেছে অভিযুক্ত ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা এবং ফিনান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের ছাত্রী তাবাচ্ছুম ইসলামের সঙ্গে।
প্রক্টর প্রফেসর শাহাদাত হোসেন জানান, সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাদেরকে প্রধান ফটক থেকে নিয়ে আসা হয় আইন বিভাগে। সেখানে সাড়ে ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির প্রধান আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেবা মন্ডলের নেতৃত্বে অভিযুক্তদের বক্তব্য শোনা হয়। একেকজনকে আলাদা করে তদন্ত কমিটির সামনে নেয়া হয়।
দুপুর ১টার পর তদন্ত কমিটির কাজ বেশ এগিয়েছে জানালেও সাক্ষ্য-প্রমাণ কতটা পাওয়া গেছে সে বিষয়ে কথা বলতে চাননি কেউ। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক রেবা মন্ডল বলেন, ‘কে অভিযুক্ত সে ব্যাপারে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।’
তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হয়ে বেরিয়ে এসে অভিযুক্ত দুই ছাত্রী কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তারা বলেন, ‘যা বলার তদন্ত কমিটির কাছে বলেছি। তারাই জানাবেন কে অপরাধী।’
অভিযুক্ত সানজিদা চৌধুরী অন্তরা আগে থেকেই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। তিনি বলছেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।