বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আঞ্চলিক বাংলার প্রেমে কুমিল্লায় পড়তে আসা বিদেশিরা

  •    
  • ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১২:২৯

কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল আজাদ বলেন, ‘প্রতি বছর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা কুমিল্লায় আসেন। তারা বাংলা শিখেন। এ দেশের সংস্কৃতি সর্ম্পকে জানেন। সেগুলো আবার নিজের দেশে গিয়ে প্রচার করেন। দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আমাদের প্রাণের ভাষা সারাবিশ্বে এভাবেই ছড়িয়ে পড়ছে।’  

কুমিল্লায় সরকারি বেসরকারি চারটি মেডিক্যাল কলেজে লেখাপড়া করেন বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা। তাদের কাছে বাংলা ভাষা অনেক মধুর। তবে বাংলা ভাষার আঞ্চলিকতাকে বেশি পছন্দ বিদেশি শিক্ষার্থীদের।

কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ, ময়নামতি, ইস্টার্ন, সেন্ট্রাল ও আর্মি মেডিক্যাল কলেজ। তার মধ্যে আর্মি মেডিক্যাল কলেজ ছাড়া বাকি চারটাতে অন্তত ৭০০ বিদেশি শিক্ষার্থী এমবিবিএস পড়ছেন।

ইস্টার্ন মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে দেখা যায়, ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ, নেপাল, শ্রীলংকাসহ বেশ কয়েকটি দেশের শিক্ষার্থী রয়েছেন। কেউ নতুন ভর্তি হয়েছেন। কেউবা মাস দুয়েকের মধ্যে পরীক্ষা শেষ করে চলে যাবেন। কেউ আরও বেশ কয়েক বছর থাকবেন।

ভারতে কাশ্মির থেকে আসা সুজাত এহমাদ বলেন, ‘২০১৬ সালে ইস্টার্ন মেডিক্যালে ভর্তি হই। প্রথম প্রথম আমি কিছুই বুঝতাম না। পরে শিক্ষক ও বন্ধুদের সঙ্গে মিশে বাংলা ভাষা শিখেছি । জয় বাংলা আমার প্রিয় ডায়লগ। আমার কাছে বাংলা ভাষাটা এতো ভালো লাগ। এখন মনে হয় নিজের বাড়িতেই আছি।’

কলকাতা থেকে আসা ঋদ্ধি দে জানান, তার বাড়ি কলকাতা। তিনি ইস্টার্ন মেডিক্যাল কলেজের ১৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। বাংলাদেশে তার ভাষা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। কারণ এপাড়-ওপাড় দু বাংলাতেই ভাষা এক। তবে এখানকার আঞ্চলিক ভাষার মধ্যে অনেক মাধুর্য আছে বলে জানান ঋদ্ধি।

তিনি আরও জানান, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, বরিশাল ও সিলেটের আঞ্চলিক ভাষাটার প্রেমে পড়েছেন। এই ভাষাগুলো অনেক মিষ্টি। ভাষার এই আঞ্চলিকতাকে ঋদ্ধি অনেক সম্মান করেন।

ভারত থেকে আসা কপেশ্বর জানান, প্রথম প্রথম বাংলা ভাষা শিখতে কষ্ট হয়েছে। এখন বাংলাতেই কথা বলেন তিনি।

ভারতের কেরেলা রাজ্য থেকে আসা আদিত্য জানান, তিনি এখানে ৫ বছর আগে আসেন এমবিবিএস করতে। তার এমবিবিএস শেষ।

আদিত্য আরও জানান, প্রথম প্রথম বাংলা শিখতে কষ্ট হত। কারণ কেরালায় নিজেদের বাড়িতে তারা বেশিরভাগই ইংরেজিতে কথা বলেন। তবে বাংলা শিখে তারা আনন্দিত। এখন তাদের প্রিয় ভাষার একটা বাংলা। বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন মামা কেমন আছো, ভালো আছো। দেশে ফিরে গেলে বাংলা ভাষাকে খুব মিস করবেন বলে জানান আদিত্য।

ইস্টার্ন মেডিক্যাল কলেজের জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আতাউল মাসুদ রাজিব বলেন, ‘নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি হলে প্রথমে আমরা ভাষা শেখার ক্লাস নিই । শিক্ষকরা বিদেশি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলাতেও কথা বলেন। কারণ বিদেশী শিক্ষার্থীরা যেন ক্লাসের বাইরে গেলে তাদের যোগাযোগটা সহজ হয়। এতে করে বাংলা ভাষাটা দেশের বাইরেও সমৃদ্ধ হয়।’

‘কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল আজাদ বলেন, ‘প্রতি বছর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা কুমিল্লায় আসেন। এখনও কুড়ি জনের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছেন কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজে। তারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন। তারা বাংলা শিখেন। এ দেশের সংস্কৃতি সর্ম্পকে জানেন। সেগুলো আবার নিজের দেশে গিয়ে প্রচার করেন। দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আমাদের প্রাণের ভাষা সারাবিশ্বে এভাবেই ছড়িয়ে পড়ছে।’

এ বিভাগের আরো খবর