ভোলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তুলে নেয়ার ১৪ দিন পরও সন্ধান মেলেনি এক মাদ্রাসা শিক্ষকের।
ওই মাদ্রাসা শিক্ষকের নাম মাওলানা মোহাম্মাদ মহিবুল্লাহ। তিনি ভোলা সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়নের চর ছিফলী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওই গ্রামের বায়তুল আমান হোসাইয়নিয়া জামে মাসজিদে ইমাম ও ভোলার চরনোয়াবাদস্থ ‘আনাস বিন আবদুল মালেক ইসলামী কমপ্লেক্স’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আরবি শিক্ষক।
রোববার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিখোঁজ ওই মাদ্রাসা শিক্ষকের শ্বশুর মাওলানা আবদুস সহিদ বলেন, ‘গত ৬ ফেব্রুয়ারি দুপুর পৌনে ১টার দিকে আমার জামাতা মহিবুল্লাহ মাদ্রাসায় ক্লাস নিচ্ছিলেন। ওই সময় সিভিল পোশাকে কয়েকজন লোক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তাকে মাদ্রাসার ক্লাসরুম থেকে বের করে নিয়ে যায়। পরে তার বাড়িতে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তল্লাশি চালায়। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত মহিবুল্লাহ নিখোঁজ।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার পরই আমরা ভোলা সদর থানায় খোঁজ নিলে থানার পুলিশ এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেন।’
একইভাবে ডিবি অফিসে খোঁজ নিলে ডিবি ওসি এনায়েত হোসেন জানান, ঢাকা থেকে একটি টিম এসেছে তারা মাওলানা মোহাম্মদ মহিবুল্লাহকে আনতে গেছেন। আমরা তাদেরকে সহযোগিতা করেছি। এর বাহিরে আমরা আর কিছু জানি না।
ওই মাদ্রাসা শিক্ষকের শ্বশুর বলেন, ‘ভোলা থানায় ও ডিবি অফিসে একাধিকবার যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।’
গত ১২ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজের সন্ধানের জন্য ভোলা মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ওই ওই মাদ্রাসা শিক্ষকের শ্বশুর। ১৪ দিন ধরে নিখোঁজ শিক্ষকের সন্ধান না পেয়ে তার স্ত্রী, সন্তান ও আত্মীয় স্বজনরা দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। দ্রুত মাদ্রাসার শিক্ষকের সন্ধানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ওই শিক্ষকের পরিবার।
মোহাম্মাদ মহিবুল্লাহ এর স্ত্রী আমেনা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী মাদ্রাসায় গিয়ে ১৪ দিন ধরে বাসায় ফিরেনি। সে কোনো রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমে জড়িত ছিল না।’
এ বিষয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘গত ৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে আমার প্রতিষ্ঠানে সিভিল পোশাকে ৮জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে আরবি শিক্ষক মাওলানা মোহাম্মাদ মহিবুল্লাহকে তুলে নিয়ে যায়। তারপর থেকে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। আমাদের দাবি মাওলানা মোহাম্মাদ মহিবুল্লাহ যদি রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কাজ করে থাকে তবে তাকে প্রকাশ্যে এনে আইন আদালতের মাধ্যমে শাস্তি দেয়া হোক। আর তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকলে তাকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাহিন ফকির জানান, মাদ্রাসা শিক্ষক নিখোঁজের ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।