জাতীয় বয়সভিত্তিক দলের ফুটবলার মিলি আক্তার। থাকতেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ছোট ঘরে। কিন্তু সেখানে প্রতিবেশীর উৎপীড়নের শিকার হয়ে বসবাস করতে পারলেন না তিনিসহ পরিবার। প্রায় দুই মাস ধরে নিজ বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করতে হচ্ছে মিলিকে।
মিলির বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের বারুইগ্রামে। তিনি অনূর্ধ্ব-১৭ নারী ফুটবল দলের গোলরক্ষক। এছাড়াও বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টে নান্দাইল উপজেলার রানার্সআপ দলের নিয়মিত গোলকিপার ছিলেন।
স্থানীয়দের ভাষ্য, মিলিদের পরিবারের নামে ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর একটি ঘর বরাদ্দ হয়। ঘর তৈরির পর বৃদ্ধ বাবা-মা ছাড়াও চার বোন কোনোমতে বসবাস করে আসছিল। বাবা দিনমজুরি করে সংসার চালাতেন। বিপত্তি বাধান প্রতিবেশী আবুল হোসেন ও তার পরিবারের লোকজন। দুর্ব্যবহার ও বাড়ির সামনে আবর্জনা ফেলে রাখার প্রতিবাদ করলে মিলিকে ভিটে ও ঘর বিক্রি করে চলে যেতে বলেন সেই প্রতিবেশী। অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ঘর ছেড়ে এখন ভাড়া বাসায় থাকছেন ওই ফুটবলারের পরিবার।
আশরাফুল ইসলাম নামের একজন নিউজবাংলাকে বলেন, ওই নারী ফুটবলার আমাদের গর্ব। অথচ চোখের সামনে নিজের ভিটা ছেড়ে চলে গেছে। বিষয়টি দুঃখজনক।
মিলি বলেন, আমার ফুটবল খেলা নিয়ে প্রতিবেশী আবুল হোসেনের মেয়েরা বাজে কথা বলে আসছে। প্রধানমন্ত্রী ঘর দেয়ার পর বাড়িছাড়া করতে সবসময় হুমকি দিয়ে আসছিল। এখন তা-ই করল।
তিনি বলেন, বাড়িতে ঝামেলা হওয়ায় ঢাকায় ক্যাম্প থেকে কয়েক দিনের ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়ি এসেছিলাম। এখন আর যেতে পারছি না। আমি ফুটবলটা খেলতে চাই। দেশকে কিছু দিতে চাই। এ জন্য আমার পরিবারকেও নিরাপদে রাখা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবুল হোসেন বলেন, আমি কাওকে তাড়িয়ে দিইনি। তারা (মিলিসহ পরিবার) নিজের হচ্ছেতেই অন্যত্র চলে গেছে। এতে আমার কিছু করার নেই।
চণ্ডীপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, বিষয়টি আমি আগে থেকেই জানি। কয়েকবার সমাধান করতে চেষ্টা করেছি, কিন্তু পারিনি। আবারও ওই দুই পরিবারকে নিয়ে বসব।
নান্দাইল মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ওবায়দুল রাহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ঘটনাটির বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে। বাড়িটি পরিদর্শন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।