এখন জনগণের কথা বলার অধিকার, মুক্ত চিন্তার অধিকার ও লেখার অধিকার নেই দাবি করে এগুলো প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রোববার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশে সম্পূর্ণভাবে একনায়কতন্ত্র ও একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য ভয়াবহ রকমের চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এই একুশে ফেব্রুয়ারিতে নতুন করে শপথ নিতে চাই, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করব। জনগণের কথা বলার অধিকার, মুক্ত চিন্তার অধিকার, জনগণের লেখার অধিকার আমরা নিশ্চয়ই প্রতিষ্ঠা করব।’
জাতি তার গণতান্ত্রিক ও চিন্তার স্বাধীনতার অধিকার থেকে বঞ্চিত মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘স্বাধীনতার এত বছর পরেও জাতি তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। গণতান্ত্রিক অধিকার, চিন্তার স্বাধীনতা, কথা বলার স্বাধীনতা, লেখার স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।’
বইমেলায় বিভিন্ন বইয়ের প্রদর্শনী বন্ধ করা ও প্রকাশনীকে স্টল না দেয়ায় বাংলা একাডেমির সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন,‘কী দুর্ভাগ্য যে বাংলা একাডেমির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল বাংলা ভাষা ও বিকাশের জন্য, চিন্তা চেতনা বিকাশের জন্য, মুক্তচিন্তার জন্য, সেই বাংলা একাডেমি অন্যায়ভাবে বিভিন্ন স্টল বন্ধ করে দিয়ে, বিভিন্ন বইয়ের প্রদর্শন বন্ধ করে দিয়ে, একটা কলঙ্কজনক অধ্যায় সৃষ্টি করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
এ সময় ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি। এর আগে বিএনপির যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
যৌথসভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ মুয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন-নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ প্রমুখ।
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি মহাসচিব জানান, ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ছয়টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে।
সকাল পৌনে ছয়টায় কালো ব্যাচসহ নিউমার্কেট এলাকায় বলাকা সিনেমা হলের সামনে দলের নেতা-কর্মীদের জমায়েত শুরু হবে। এরপর আজিমপুর কবরস্থানে ভাষাশহীদদের মাজার জিয়ারতের পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
বিএনপি মহাসচিব আরও জানান, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সোমবার বেলা দুইটায় রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে দলের পক্ষ থেকে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভা শুরুর আগে জাসাসের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।
এ ছাড়া সারা দেশে মহানগর, জেলা, উপজেলা, থানা ও বিভিন্ন ইউনিটে সকাল ছয়টায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। স্থানীয় শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করবেন স্থানীয় নেতারা।
ওই দিন সারা দেশে দলের প্রতিটি ইউনিট স্থানীয় ব্যবস্থা অনুযায়ী ভাষাশহীদদের স্মরণে আলোচনা সভার আয়োজন করবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, হাবিব উন নবী খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস প্রমুখ।