বাবার সঙ্গে বিরোধের জেরে বগুড়ার নন্দীগ্রামে চার বছরের শিশু মুনিম হোসেনকে হত্যা করে প্রতিবেশী আমিনুল ইসলাম। হত্যার তিন দিন পর সন্দেহভাজন হিসেবে আসামিকে আটকের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নন্দীগ্রাম থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে শনিবার দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম।
এর আগে শুক্রবার রাতে নিজ বাড়িতে থেকে আমিনুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায় পুলিশ।
২০ বছরের আমিনুল ইসলাম উপজেলার থালতা মাঝগ্রাম ইউনিয়নের ছোট চাঙ্গুইর গ্রামের বাসিন্দা। ওই শিশুও একই গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে।
গত বুধবার বাড়ির পাশের পরিত্যাক্ত এক কুয়া থেকে মুনিমের মরদেহ উদ্ধার হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম বলেন, ‘মুনিমের বাবা ইদ্রিসের প্রতিবেশী আশরাফের সঙ্গে পারিবারিক বিরোধ ছিল আমিনুলদের। আর ইদ্রিস আলী এসব ক্ষেত্রে আশরাফদের পক্ষে থাকতেন। মনস্তাত্ত্বিক এসব ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন আমিনুল।’
তদন্তের বিষয়ে নন্দীগ্রাম থানার ওসি আনোয়ার ইসলাম জানান, শিশুটির মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশ রহস্য উদঘাটনে নামে। স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে জানা যায়, মুনিমকে সব শেষ আমিনুলের সঙ্গে দেখা গেছে।
আনোয়ার হোসেন আরও জানান, একাধিক জনের তথ্যের ভিত্তিতে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় আমিনুলের কথায় প্রচুর অসংলগ্নতা পাওয়া যায়। পরে আমিনুলের মা হত্যার বিষয়টি বলে দেন আমাদের। এরপর আমিনুলও ঘটনা স্বীকার করেন। তিনি ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে মুনিমকে হত্যা করেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন।
ওসি বলেন, ‘আমিনুলকে হত্যা মামলার আসামি করে বেলা ১টার দিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ হত্যার সঙ্গে আর কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও আইনের আওতায় নেয়া হবে।’
গত বুধবার সকাল ৮টার দিকে মুনিম বাড়ি থেকে খেলার জন্য বেরিয়ে যায়। মুনিমকে খাওয়ানোর জন্য মা-বোন খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বড় বোন তাবাসসুম বাড়ি থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূরে মলত্যাগের ভরাট হওয়া পরিত্যাক্ত কুয়ার মধ্য মুনিমের পা দেখে চিৎকার দেয়। পরে প্রতিবেশীরা এসে মৃত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে।
এ সময় মুনিমের শরীর ও মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। ওই ভরাট কুয়ায় তার লাশ রেখে বিভিন্ন লতাপাতা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল। পরের দিন বৃহস্পতিবার মুনিমের বাবা ইদ্রিস আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।