বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নওগাঁর ১ হাজার ৭০৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার

  •    
  • ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৪:১৮

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. লুৎফর রহমান জানান, সরকারের নির্দেশনা রয়েছে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপনের। কিন্তু করোনার কারণে অনেক কাজ বন্ধ ছিল। ইতোমধ্যে নতুন করে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য প্রতিটি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার প্রধান শিক্ষকদের চিঠি দেয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের ৭১ বছর পরও নওগাঁ জেলার প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ১ হাজার ৭০৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই কোনো শহীদ মিনার। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্বীকৃতি পেলেও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস, গুরুত্ব ও ভাষা আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার ১১টি উপজেলায় ১ হাজার ৩৭৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এরমধ্যে শহীদ মিনার আছে মাত্র ২৪১টিতে। শহীদ মিনার নেই ১ হাজার ১৩৩টিতে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে সরকারি ও বেসরকারি মোট ৯২৫টি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। এর মধ্যে ৫৭৩টিতে শহীদ মিনার নেই।

জেলার আত্রাই উপজেলার চকশিমলা উচ্চ বিদ্যালয়ে নেই কোনো শহীদ মিনার। ফলে ভাষা আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রাণ বল্লভ মন্ডল বলেন, ১৯৬৯ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে কোনো শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি। শহীদ মিনার নির্মাণে কোনো বাজেটও নেই। যার কারণে উদ্যোগ গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

এ বিদ্যালয়ের পাশেই চকশিমলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেখানেও নেই শহীদ মিনার। ১৯০৫সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। তবুও নেই কোনো শহীদ মিনার।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চাঁদ সুলতানা জানান, একটি শহীদ মিনার করতে গেলে অনেক অর্থের প্রয়োজন। সরকারিভাবে বরাদ্দ নেই যার কারণে প্রতি বছর অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

বিদ্যালয়টির সহসভাপতি ওমর ফারুক জানান, একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করতে প্রায় ৩ লাখ টাকার প্রয়োজন। কিন্তু ফান্ডেও টাকা নেই। তাছাড়া শহীদ মিনার নির্মাণে কোনো বরাদ্দও পাওয়া যায়নি।

সদর উপজেলার খাস নওগাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেজবাউল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়টি ১৬৬২ সালে স্থাপিত হলেও এখন পর্যন্ত শহীদ মিনার নির্মাণ সম্ভব হয়নি ফান্ড না থাকার কারণে। আর সরকারিভাবেও কোনো অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি।’

জেলার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন একুশে পরিষদ নওগাঁর সভাপতি এডভোকেট ডিএম আব্দুল বারী বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্টানে সরকারিভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করার বিধান রয়েছে। শহীদ মিনার নির্মাণ করার দাবি জানাচ্ছি। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্বীকৃতি পেলেও এর ইতিহাস ও গুরুত্ব সম্পর্কে ধারণা নেয়া থেকে সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত হচ্ছে গ্রাম পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা আবশ্যক বলে মনে করছি।’

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সিদ্দীক মোহাম্মদ ইউসুফ রেজা বলেন, ‘সরকার থেকে প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার তৈরি কথা বলা হয়েছে। কিন্তু কোনো বরাদ্দ দেয়া হয় না। স্থানীয়ভাবে কেউ অনুদান বা কোনো বরাদ্দ সংগ্রহ করে সে অর্থ দিয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করতে হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগে খুব দ্রুত শহীদ মিনার নির্মাণ করা যেত। কিন্তু এখন সরকার শহীদ মিনার নির্মাণে নকশা দেয়ার কারণে একটু সময় লাগে। ইতোমধ্যে উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষককে চিঠি দেয়া হয়েছে যাতে করে খুব দ্রুত প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়।’

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. লুৎফর রহমান জানান, সরকারের নির্দেশনা রয়েছে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপনের। কিন্তু করোনার কারণে অনেক কাজ বন্ধ ছিল। ইতোমধ্যে নতুন করে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য প্রতিটি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকদের চিঠি দেয়া হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর