এতদিন ধরে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ নানা দাবিতে আন্দোলন করে আসা বিএনপি এবার দেশের সংবিধানের পরিবর্তন চেয়েছে। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সংবিধানে দেশ চলবে না।
রাজধানীর গোপীবাগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত পদযাত্রা কর্মসূচির আগে এক সমাবেশে শুক্রবার বিকেলে তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘উনি (মো. সাহাবুদ্দিন) নিজেও জানেন না উনি রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন। তা তিনি আবার এক সাক্ষাৎকারেও বলেছেন। এ থেকে প্রমাণ হয় এ সংবিধানে দেশ চলবে না। সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের উত্থাপিত ২৭ দফার আলোকে সংবিধান পরিবর্তন করে ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে হবে। ’
দেশের অর্থনৈতিক সংকটের কথা তুলে ধরে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আজকে ক্ষমতাসীনদের চুরির কারণে ব্যাংক খালি, ডলার নেই। ব্যবসায়ীরা এলসি খুলতে পারছে না। দেশে আজ গণলুট চলছে। এরা যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই দেশের সম্পদ লুট করে। ’
তিনি বলেন, ‘ক্ষমতায় টিকে থাকতে আওয়ামী লীগ প্রশাসনকে ব্যবহার করছে। যুক্তরাষ্ট্র র্যাব এবং পুলিশকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, আমরা এটি চাইনি, এটি জাতির জন্য লজ্জাজনক। সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে র্যাব ও পুলিশকে দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে ।এবারও আমেরিকায় অনুষ্ঠিত গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশ দাওয়াত পাইনি, এতে বিশ্বের কাছে আমাদের মাথা নিচু হয়ে যায়। যে গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ হয়েছে, সে গণতন্ত্র হরণের অভিযোগই গণতন্ত্র সম্মেলনে দাওয়াত পায়নি বাংলাদেশ। ’
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বিদেশিদের বলেছেন- উনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে! তার এ বক্তব্যে মানুষ হাসে। আমাদের পরিষ্কার কথা এ সরকারের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে যাবে না। দেশের অনেক ক্ষতি করেছেন। দেশের মানুষের কোনো উন্নয়ন হয়নি, আপনাদের উন্নয়ন হয়েছে। ’
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন-বিএনপি আন্দোলন করতে পারে না। তাহলে কেন পাহাড়া দেন? এখনো সময় আছে, সময় থাকতে পদত্যাগ করুন, নতুবা রেহাই পাবেন না। ’
আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ও রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় পদযাত্রা সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন প্রমুখ।
এসময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম উদ্দীন আলম, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, বিএনপি প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান, শামসুদ্দিন দিদারসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি ও মিথ্যা মামলা, অবৈধ সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা দাবিতে পদযাত্রা করে বিএনপি। পদযাত্রাটি গোপীবাগ থেকে শুরু হয়ে টিকাটুলি, দয়াগঞ্জ, রায়শাহ বাজার মোড় হয়ে নয়াবাজার গিয়ে শেষ হয়।