চট্টগ্রামে ২০০৪ সালে ধরা পড়া ১০ ট্রাক অস্ত্রে ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অফ আসামের (উলফা) অংশও থাকতে পারে। হবিগঞ্জ ও জামালপুরে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের ক্ষেত্রেও তা-ই। আর মিয়ানমারে ঘাঁটি থাকলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় একটা সময়ে বাংলাদেশে ঘাঁটি গাড়ে ভারতের আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনটি, তবে বাংলাদেশ হয়ে অস্ত্র আনা-নেয়ার চেষ্টাটা ছিল উলফার জন্য নিজের পায়ে কুড়াল মারার মতো।
উলফার প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়া শনিবার ঢাকায় এক হোটেলে কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন। ঢাকায় বসবাস করা মেয়ের সঙ্গে দেখা করে ভারতে ফিরে যাওয়ার আগে দেয়া সাক্ষাৎকারে একসময়ের এ গেরিলা নেতা বলেছেন তার না বলা অনেক কথা।
অনুপ চেটিয়া বাংলাদেশে ছিলেন দীর্ঘ ২৮ বছর। ১৯৯৭ সালের ২১ ডিসেম্বর ঢাকার মোহাম্মদপুরের আদাবর এলাকার একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান এবং অবৈধভাবে বিদেশি মুদ্রা ও স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহারের অভিযোগে তিনটি মামলা হয়। আদালত তিনটি মামলায় তাকে ৩, ৪ ও ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়।
তিনটি মামলার সাজাই একসঙ্গে কার্যকর হওয়ায় ৭ বছর পর ২০০৪ সালে তার কারাবাসের মেয়াদ শেষ হয়, তবে তারপরও তিনি কারাগারে আটক ছিলেন।
২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর কাশিমপুর কারাগার থেকে অনুপ চেটিয়াকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি ভারত সরকারের সঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার শান্তি আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতার শুরুতেই অনুপ চেটিয়া বাংলাদেশের জনগণ, সাংবাদিক ও আইনজীবীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ধন্যবাদ জানান।
উলফা সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমি প্রথমে বাংলাদেশে এসেছিলাম ১৯৮৮ সালে। সে বছর আসাম ও বাংলাদেশে বড় বন্যা হয়েছিল। আমরা তখন চেয়েছিলাম বাংলাদেশে একটা ঘাঁটি গড়ব, মূলত যেটি হবে ডিপ্লোম্যাটিক ঘাঁটি। কারণ বার্মায় আমাদের শেল্টার থাকলেও প্রচুর পাহাড় থাকায় সেখানে যোগাযোগের ভালো ব্যবস্থা ছিল না। দীর্ঘ পথ হেঁটে যেতে হয়। সেখান থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোনো যোগাযোগও করা যায় না। সে জন্য আমরা সিন্ধান্ত নিয়েছিলাম বাংলাদেশের ঘাঁটি গড়ে ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনটা করব।’
বাংলাদেশে ঘাঁটি গড়ার পরিকল্পনা কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে অনুপ চেটিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশে আসামের অনেকের আত্মীয়স্বজন আছে। তাদের মধ্যে পারস্পরিক পারিবারিক সম্পর্কও আছে। মূলত তাদের মাধ্যমেই আমরা প্রথম বাংলাদেশে আসি।
‘আমরা যখন এখানে আসা-যাওয়া করছিলাম, তখন এরশাদের শাসনামল। তারপর বিএনপি ক্ষমতায় এলো। তখনও এখানে যারা আসামের মানুষ থাকত, তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ও ভালো সম্পর্ক ছিল।
‘শুরুতে আমরা পারমানেন্টলি (স্থায়ীভাবে) বাংলাদেশে থাকতাম না। যখন দরকার হতো তখন আসতাম, আবার ফিরে যেতাম। আর ওই সময়ে বর্ডারে এত কড়াকড়িও ছিল না। তাই আমাদের আসা-যাওয়ায় কোনো অসুবিধা হতো না।’
পরিবার নিয়ে বাংলাদেশে
উলফার প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘১৯৯৫ সালের ডিসেম্বরে আমি আমার পরিবার নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসি। কারণ তখন সেখানে (আসামে) আর্মির উপস্থিতি বেড়ে গিয়েছিল, তবে বাংলাদেশে পরিবার নিয়ে এলেও এখানে আমি কম সময়ই থেকেছি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সংগঠনের প্রচার, ক্যাম্পেইন ও লবিংয়ের জন্য বেশির ভাগ সময় আমাকে বিদেশেই থাকতে হয়েছে।’
বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়া সম্পর্কে পরিবারের লোকজন জানতেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে অনুপ চেটিয়া বলেন, ‘পরিবারের সবাই আমার আসল পরিচয় জানত, তবে বাইরে আসল পরিচয়টা গোপনই রেখেছিলাম। নিজেকে বিজনেসম্যান হিসেবে তুলে ধরতাম। আমার নাম ছিল জন ডেভিড সোলাবার।
‘নিজেকে খাসিয়া উপজাতির লোক হিসেবে পরিচয় দিতাম। কারণ এখানে খাসিয়া উপজাতির অনেক লোক ছিল। আর থাকতাম মোহাম্মদপুরের আদাবরে।’
ঢাকায় পরিবারের সদস্যদের কোনো সমস্যায় পড়তে হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যাওয়ার সময় আমার মেয়ের বয়স ছিল দেড় বছর। আমার স্ত্রী সন্তানদের বিভিন্ন স্কুলে ভর্তি করেছে। কারণ বিশেষ করে মেয়েটা অনেক স্কুল পরিবর্তন করেছে। শেষে মাস্টার মাইন্ড স্কুলে পড়েছিল। তখন সেখানে সে মুসলিম নাম নিয়েছিল, তবে আমি জেলে যাওয়ার আগে ছেলেটা আসল নামেই স্কুলে ভর্তি হয়।
‘ওর নাম সাগর বড়ুয়াই লিখছিলাম, তবে অভিভাবকের জায়গায় নিজের নাম কী দিয়েছিলাম সেটা ভুলে গেছি। আর বাংলাদেশে অনেকেই নামের শেষে বড়ুয়া লিখে থাকে। তাই কোনো সমস্যা হয়নি।’
গ্রেপ্তারের পর উলফার নেতৃত্ব সংকট
বাংলাদেশে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর উলফার নেতৃত্ব কে দিতেন, এমন প্রশ্নের জবাবে অনুপ চেটিয়া বলেন, ‘আমি অ্যারেস্ট হওয়ার পর দলের নেতৃত্ব নিয়ে একটু সমস্যা হয়েছে, তবু আমাদের সংগঠন ভালোভাবেই চলছিল। দলে ওপরের সারিতে যারা ছিল তারা ভালোভাবেই চালিয়ে নিচ্ছিল।
‘সংগঠন বড় একটি সমস্যায় পড়ে ভুটানে আমাদের ক্যাম্পে হামলার পর। সেখানে আমাদের ২৬ জনের মতো লিডার মিসিং হয়। তারা এখনও নিখোঁজ। অনেকে মারা যায়। ওই ঘটনা ছিল আমাদের সংগঠনের ওপর বড় আঘাত।
‘আমি কারাগারে। ভুটানে হামলার পর অনেক নেতা মিসিং এবং অনেকে মারা যাওয়ার এই পর্যায়ে আমাদের বার্মা বেজ হাল ধরতে পারত, কিন্তু বার্মার ঘাঁটি থেকে সংগঠন পরিচালনায় অসুবিধা হচ্ছিল। মূল কারণটা ছিল যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকা। এ অবস্থায় আমাদের অনেক লিডার বাংলাদেশে চলে আসে।’
বাংলাদেশ থেকে উলফা পরিচালনা
বাংলাদেশে অবস্থান করে উলফার সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে এখানে কোনো বাধা বা সমস্যায় পড়তে হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে এই গেরিলা নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ইস্যুতে কিছু সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, তবে বাংলাদেশের নিরাপত্তায় সমস্যা সৃষ্টি করা আমাদের উদ্দেশ্য ছিল না। প্রথম দিকে এখান দিয়ে অস্ত্র আনা-নেয়ার কোনো পরিকল্পনাও ছিল না, কিন্তু আমি গ্রেপ্তার হওয়ার পরই সেসব আরম্ভ হয়। আর সেটা ছিল নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারার মতো।’
অস্ত্রের চালান কার
অনুপ চেটিয়াকে প্রশ্ন করা হয়, বাংলাদেশের চট্টগ্রামে ধরা পড়া ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান উলফার জন্য এসেছিল কি না। বিষয়টি তিনি কৌশলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও একেবারে অস্বীকার করেননি।
উলফা নেতা বলেন, ‘সে সময় আমি জেলে ছিলাম। তাই সে ব্যাপারে কিছু জানি না, তবে উলফা ছাড়াও আমাদের ওই অঞ্চলে আরও অনেক পার্টি ছিল। হয়তো এই অস্ত্র উলফাসহ অন্যদের ছিল।’
অস্ত্রের চালান ধরা পড়ার সময় তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সঙ্গে উলফার সম্পর্ক কেমন ছিল, এমন প্রশ্নেও কৌশলের আশ্রয় নেন অনুপ চেটিয়া। তিনি বলেন, ‘আমি সে সময় জেলে ছিলাম। আমার অবর্তমানে যারা উলফার দায়িত্বে ছিল, তাদের সঙ্গে এ দেশের সরকারের ভালো সম্পর্ক ছিল কি না, আমি জানি না।’
বাংলাদেশে হবিগঞ্জের সাতছড়ি ও জামালপুরের হালুয়াঘটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কয়েক দফায় অনেক অস্ত্র পেয়েছে। এসব অস্ত্র উলফার কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে উলফার সাধারণ সম্পাদক কৌশলী জবাব দেন।
তিনি বলেন, ‘সে সময় আমি কারাগারে ছিলাম। তাই জানি না এটা কাদের অস্ত্র, তবে আমি এটা বলতে চাই, অস্ত্র তো কেউ খাওয়ার জন্য আনে না। আর বাংলাদেশ সরকার তো এভাবে রাখঢাক করে এত অস্ত্র আনবে না।
‘শুধু উলফা বলা যাবে না, আমাদের অঞ্চলের কোনো না কোনো গোষ্ঠী এগুলো এনেছিল এটা সত্য। একইভাবে ১০ ট্রাক অস্ত্রের মধ্যেও কিছু হয়তো উলফার ছিল। আবার অন্যদেরও থাকতে পারে। আমি সে সময় গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে ছিলাম। সে জন্য সবটা জানি না।’
বাংলাদেশের অনেক ব্যবসায়ীর প্রতিষ্ঠানে উলফা টাকা লগ্নি করার খবর শোনা গেছে। এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে অনুপ চেটিয়া বলেন, ‘এটা সত্য নয়। এখানে আমাদের কোনো ব্যবসা ছিল না। কোথাও অর্থ লগ্নিও করা হয়নি।’
শান্তির পথে উলফা
আসামের দীর্ঘদিনের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফা। এই দীর্ঘ সময় শেষে বর্তমানে সংগঠনের অবস্থান ও কার্যক্রম কী, এমন প্রশ্নে অনুপ চেটিয়া শান্তিপূর্ণ পন্থায় দাবি আদায়ের কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ভারত সরকারের সঙ্গে আমরা আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের দাবি হলো আমাদের আদিবাসী জনগোষ্ঠী অনেক কমে গেছে। বর্তমানে তা ৩৪ শতাংশে নেমে এসেছে। ভবিষ্যতে আমাদের আইডেন্টিটি যাতে শেষ হয়ে না যায়, আমরা যাতে টিকে থাকতে পারি, সে বিষয় নিয়ে আলোচনা করছি। বিশেষ করে সাংবিধানিক সুরক্ষাটা যাতে আমাদের থাকে সে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছি।
‘এ ছাড়া আমাদের ভূমির অধিকার, রাজনৈতিক অধিকারের জন্যও কথা বলছি। সরকার এখনও বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কিছু বলেনি, তবে আমরা আশাবাদী।’
পরেশ বড়ুয়া মিয়ানমারে
উলফার আরেক প্রভাবশালী নেতা পরেশ বড়ুয়া। অনুপ চেটিয়ার পরই তার নেতৃত্ব সবসময় আলোচনায় থেকেছে। তার সম্পর্কে দীর্ঘদিন ধরেই তেমন কিছু জানা যায় না।
সে বিষয়ে জানতে চাইলে অনুপ চেটিয়া বলেন, ‘সে এখন বার্মায়। সেখানে ক্যাম্পে আছে। শুনেছি ভারত সরকার তাকে দেশে আনতে চাচ্ছে। সে বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা ও যোগাযোগ চলছে।
‘সরকারের সঙ্গে আলোচনায় সেও বলেনি যে আসবে না, তবে কিছু দাবি-দাওয়া নিয়ে তাদের মধ্যে যোগাযোগ চলছে মনে হয়। যুদ্ধ করে তো আর জিততে পারবে না! সে জন্য আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই দাবি আদায় করতে হবে।’
উলফা এখন কারা চালাচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “উলফা এখন দুই ভাগে বিভক্ত। মূল সংগঠন থেকে আলাদা হয়ে ‘উলফা স্বাধীন’ নাম দিয়ে আরেকটি সংগঠন করেছে পরেশ বড়ুয়ারা। সে ওখানকার চেয়ারম্যান। আর আমরা উলফার মধ্যেই আছি। ২০১১ সালে ওরা আলাদা হয়ে গেছে।”
উলফার অর্থের জোগান
উলফা পরিচালনা করতে অর্থের জোগানটা কোথা থেকে আসত, এমন প্রশ্নের জবাবে এই গেরিলা নেতা বলেন, ‘আমরা জনগণ থেকে কালেকশন করতাম। বিশেষ করে আসামের চা বাগানের মালিকদের কাছ থেকে টাকা নিতাম। বাগান মালিকদের সে সময় প্রতি কেজি চায়ের ওপর আমাদের ৫০ পয়সা হারে ট্যাক্স দিতে হতো।’
বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন চালাতে প্রয়োজনীয় অস্ত্রের জোগান কীভাবে পেতেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে অনেক চোরাকারবারি বসে আছে। আপনার টাকা থাকলে আপনি কী না পাবেন? সেখান থেকেই আসত।’
‘আসামের মানুষ উলফার বিরুদ্ধে যায়নি’
অনুপ চেটিয়া বলেন, ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের সময় আমাদের হাতে অনেক লোক মারা গেছে। স্বাভাবিকভাবেই তাদের খারাপ লাগবে। আমাদের লোকও মারা গেছে। তাদের পরিবারেরও খারাপ লাগে, তবে সার্বিকভাবে আসামের মানুষ আমাদের বিরুদ্ধে যায়নি।
‘বর্তমান সময়ে এসেও আমরা আসামের জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য কাজ করছি। আসামের অর্থনৈতিক উন্নয়ন কীভাবে করা যায় সে চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
‘অনুপ্রবেশের অভিযোগ রাজনৈতিক’
আসামে ব্যাপকসংখ্যক বাংলাদেশির অনুপ্রবেশ ঘটেছে— ভারত সরকারের কেউ কেউ জোর গলায় এমনটা দাবি করেন।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে এই উলফা নেতা বলেন, ‘আসলে এটি একটি পলিটিক্যাল ইস্যু। এখন সবাই তাদের নিয়ে ইস্যু তৈরি করে। এটা রাজনৈতিক।’
তিনি বলেন, ‘আসামের জনগণের মধ্যে বাংলাদেশ সম্পর্কে একটা ভুল ধারণা আছে, এটা সত্য। এই ভুল ধারণাটা আমাদের দূর করতে হবে। সে জন্য আমাদের ম্যান টু ম্যান রিলেশন গড়ে তুলতে হবে।
‘আসামের অনেক মানুষই জানে না বাংলাদেশে এত অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে, অগ্রগতি হয়েছে। আসামের লোকগুলো যদি একবার বাংলাদেশে আসে তাহলে তাদের ভুল ধারণা দূর হয়ে যাবে। কারণ আসামের লোক তো বাংলাদেশে আসে না। আবার বাংলাদেশ থেকে অনেকেই বিদেশে যান।
‘আমাদের আবেদন থাকবে, তারা যেন আসামেও যান। বাংলাদেশ ও আসামের লোকজনের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ বাড়লে সম্পর্কটা গভীর হবে। আমাদের সামাজিক অবস্থাও অনেকটা একই, ভাষাও প্রায় এক। আপনার পহেলা বৈশাখ পালন করেন, আমরাও করি। তাই আমাদের মধ্যে আসা-যাওয়া শুরু হলে বাধার প্রাচীরটা দূর হবে।’
বাংলাদেশের ব্যাপারে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে অনুপ চেটিয়া বলেন, ‘এই দেশে আমি ২৮ বছর থেকেছি। এখানেই পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করেছে। কারাগারে যেতে হয়েছে, তবে বাংলাদেশ সরকার আমাকে ধরলেও কারাগারে যথাযথ সম্মান দিয়েছিল।
‘বর্তমানে ভারতে আমার নামে দুটি মামলা রয়েছে। দুটিতেই জামিনে আছি। এখন আমি সব দেশেই যেতে পারি। সরকারের অনুমতি আছে।’