বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জামালপুরে যেতে চান না সারিয়াকান্দির ১০ হাজার বাসিন্দা

  •    
  • ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১১:৩৩

বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ওই দুই ইউনিয়নের অংশটি এখনও বগুড়ার প্রশাসনের আওতায় আছে। আর বগুড়ার অন্তর্ভূক্ত থাকার জন্য কেউ যদি রিট করে বৈধভাবে যেটুকু আইনি সাপোর্ট আছে সেটি আমরা দেখব।’

২০২২ সালে জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার দুই ইউনিয়নের ৫টি মৌজা পাশের জামালপুরের সীমানায় সংযোজন করা হয়েছে। এর ফলে ওই দুই ইউনিয়নের জমিসহ প্রায় দশ হাজার মানুষের বাপ-দাদার ঠিকানা বদলে যায়। কিন্তু সীমানা পরিবর্তন হলেও স্থানীয়রা তাদের নতুন ঠিকানা মানতে নারাজ। পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে নিকার সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করা হয়।

চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি এই রিট পিটিশন করেন সারিয়াকান্দির কাজলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ এ এস এম রফিকুল ইসলাম।

এর আগে ২০২২ সালের ২৭ নভেম্বর রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) এক সিদ্ধান্তে সারিয়াকান্দির বেশ কিছু অংশ জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় সংযোজন করা হয়। এরমধ্যে সারিয়াকান্দির কাজলা ইউনিয়নের ৪ এবং কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের একটি মৌজার ২ হাজার ৭৫ একর জমি মাদারগঞ্জের অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। একইসঙ্গে ৫ মৌজার অন্তত দশ হাজার মানুষের ঠিকানা বদলে যায়।

এ বিষয়ে রিটের বাদী অধ্যক্ষ এ এস এম রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এর আগে জামালপুর ও বগুড়া জেলার সীমানা নির্ধারণ সম্পর্কিত দুইটি রায় আমাদের বগুড়ার পক্ষে রয়েছে। এ রায়গুলোকে তোয়াক্কা না করে হঠাৎ নিকারের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ ছাড়া ১৯২৭ সালের ময়মনসিংহ বিভাগের ওভাররাইট বা টেম্পারিং করা নকশা দিয়ে জমির জরিপকাজ পরিচালনা করা হয়েছে।’

রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘এই এলাকার জমির জরিপ কাজের সময় আমাদের রাজশাহী বিভাগের নকশা ব্যবহার করা হয়নি। এমনকি জরিপকাজের সময় আমাদের বগুড়া জেলার কাউকে রাখাও হয়নি। আমরা মনে করি এটি একটি মনগড়া সিদ্ধান্ত। এজন্য চ্যালেঞ্জ করে আমি সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন করেছি।’

উপজেলার কর্ণিবাড়ী ইউপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন দিপন বলেন, ‘আমাদের বাপ-দাদা চৌদ্দ পুরুষের ঠিকানা, জমিজমার কাগজপত্র সব বগুড়া সারিয়াকান্দির নামে। হঠাৎ করে এই ইউনিয়নের কিছু মৌজা জামালপুর মাদারগঞ্জের মধ্যে কেটে যাওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে।’

রিটের বাদী পক্ষের আইনজীবী আমান ফেরদৌস বলেন, ‘রিটের শুনানির তারিখ এখনও পাওয়া যায়নি। যেহেতু সিএস জরিপে এ জমি বগুড়া জেলার অন্তর্ভুক্ত, এ এলাকার শত বছরের ইতিহাসও বগুড়ার। তাই সুনির্দিষ্ট যৌক্তিক কারণ ছাড়া এক জেলার বিশাল আয়তনের এলাকা অন্য জেলায় সংযোজন করার কোনো নিয়ম নেই। আশা করছি উচ্চ আদালত বিষয়টি অনুধাবন করে আমাদের পক্ষে রায় দেবেন।’

সারিয়াকান্দি উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের জামথল মৌজার পুরোটাই মাদারগঞ্জে সংযোজন হয়েছে। এই মৌজায় ১২০০ একর জমিসহ দেড় হাজার পরিবারের সাড়ে ৬ হাজার মানুষের বাস। টেংরাকুড়া মৌজার ৩০০ একর জমি ও ৩৫০টি পরিবারের ২ হাজার, বেড়াপাঁচবাড়িয়া মৌজার ১৭৫ একর জমিসহ ২০০টি পরিবারের ৫০০ এবং পাকুড়িয়া মৌজার ১৫০ একর জমিসহ ১৫০টি পরিবারের ৩০০ জন মানুষ বসবাস করেন। আর কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের ছোনপচা মৌজার ২৫০ একর জমি ও ২৫০টি পরিবারের ৭৫০ জন আছেন। তাদের বর্তমান ঠিকানা জামালপুরের মাদারগঞ্জে।

বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনের সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান রিটের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘কাজলা ও কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের ৫টি মৌজা প্রাচীনকাল থেকেই বগুড়ার অংশ। এটি কেন যে জামালপুরের অন্তর্ভূক্ত হলো তা আমিও জানি না। প্রায় ২৮ থেকে ২৯ বছর ধরে এই জায়গা সীমানা নিয়ে মামলা চলমান ছিল। সেটি নাকি একতরফা রায় পেয়েছে, যা আমরা কেউই জানতাম না। পরবর্তীতে গত বছরের নভেম্বরে হঠাৎ করেই নিকার বৈঠকে সীমানা পরিবর্তন হয়।

‘কাজলা ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম হাইকোর্টে এটি নিয়ে একটি রিট করেছেন। আর আমার এলাকার বাসিন্দারা জামালপুরের ঠিকানা চান না। যেহেতু বিষয়টিতে সরাসরি জেলা প্রশাসক সম্পৃক্ত। তার সঙ্গে এ সমস্যা নিয়ে কথা বলব।’

বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ওই দুই ইউনিয়নের অংশটি এখনও বগুড়ার প্রশাসনের আওতায় আছে। আর বগুড়ার অন্তর্ভূক্ত থাকার জন্য কেউ যদি রিট করে বৈধভাবে যেটুকু আইনি সাপোর্ট আছে সেটি আমরা দেখব।’

এ বিভাগের আরো খবর