ধর্ষণ মামলায় হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন পুলিশের আরও তিন কর্মকর্তা।
বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে এই সাক্ষ্য গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
আদালতে সাক্ষ্য দেয়া পুলিশ কর্মকর্তারা হলেন সোনারগাঁ থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) কর্ন কুমার, শেখ ফরিদ ও মতিউর রহমান।
মামলার বরাত দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) রকিব উদ্দিন জানান, তিন পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১৮ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়েছে। বুধবার সাক্ষীরা আদালতে জানিয়েছেন মামলার বাদী জান্নাত আরা ঝর্না তাদের ঘটনাস্থলে বলেছে মামুনুল হক তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেছে। সাক্ষীরা যা জেনেছে ও দেখেছে আদালতে তাই জানিয়েছে। আদালত তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছে।
এর আগে মামলার বাদী, পুলিশ কর্মকর্তা, রয়েল রিসোর্টের কর্মকর্তা কর্মচারী, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতা ও স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের সাক্ষ্য দিয়েছেন।
মামুনুল হকের আইনজীবী ওমর ফারুক নয়ন জানান, বুধবার ৫ জন সাক্ষীর মধ্যে তিন জন পুলিশ সদস্য উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষীরা আদালতে যে সাক্ষ্য দিয়েছেন তার সঙ্গে তাদের আগে তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার সঙ্গে কোনো মিল নেই।
আইনজীবী ওমর ফারুক নয়ন বলেন, জেরার সময় পুলিশ সদস্যরা সদোত্তর দিতে পারেনি। আমরা আদালতকে আগে থেকেই জানিয়ে আসছি এটি একটি মিথ্যা ও পাতানো মামলা।’
এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে কাশিমপুর কারাগার থেকে মামুনুল হককে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে কঠোর নিরাপত্তায় তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান।
২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে একটি রুমে কথিত স্ত্রীসহ হেফাজতে ইসলামের সে সময়ের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় হেফাজত ও মাদ্রাসার ছাত্ররা রিসোর্টে হামলা চালিয়ে মামুনুল ও তার কথিত স্ত্রীকে ছিনিয়ে নেয়। ঘটনার ১৫ দিন পর ওই বছরের ১৮ এপ্রিল মামুনুল হককে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে ঢাকা মহানগর তেজগাঁও বিভাগের পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
রয়েল রিসোর্ট কাণ্ডের ঘটনার ২৭ দিন পর ২০২১ বছরের ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে ওই নারী বাদী হয়ে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। একই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর ধর্ষণের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। একই বছরের ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের নামে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।