মেহেরপুরের গাংনী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেচ্ছা মুজিব প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে নিয়োগ দেয়ার নামে নিয়োগ প্রত্যাশীদের কাছ থেকে ৬৫ লাখ টাকা নিয়ে তা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ আনিসুজ্জামান লুইসের বিরুদ্ধে।
বারবার টাকা ফেরত চাওয়ায় পর ব্যার্থ হওয়ায় অবশেষে বাধ্য হয়ে বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পযর্ন্ত ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীরা গাংনী উপজেলা চত্বরের ভেতরে অবরুদ্ধ করে রাখেন ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি শেখ আনিসুজ্জামান লুইসকে।
তাদের অভিযোগ, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টিকে স্বীকৃতি ও এমপিও ভুক্তির জন্য তাদের কাছ থেকে রশিদের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে ৬৫ লাখ টাকা নিয়েছেন তাদের প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ওই যুবলীগ নেতা।
তবে অভিযুক্ত ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি যুবলীগ নেতা আনিসুজ্জামান লুইস ৬৫ লাখ টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেন নি, তবে ৩৫ লাখ টাকা নিয়েছেন এমনটি স্বীকার করেছেনক। এ টাকা একটা সময় ফেরত দেবেন বলেও জানান লুইস।
ভুক্তভোগী শিক্ষক-কর্মচারীরা বলেন, ‘২০১৫ সালে বিদ্যালয়টি গাংনী উপজেলার বাঁশবাড়িয়া নামক স্থানে একটি খাস জমির ওপর স্থাপন করা হয়। বিদ্যালয়টি উদ্বোধন করেন মেহেরপুর-২ গাংনী আসনের সংসদ সদস্য সাহিদুজ্জামান খোকনের স্ত্রী লায়লা আরজুমান আরা বানু শীলা। তিনিও ওই বিদ্যালয়ের সহ-সভাপতি পদে মনোনীত হন।
‘সে সময় বিদ্যালয়ে নিয়োগ দেয়া হয় প্রধান শিক্ষকসহ বিভিন্ন পদে ২৪ জনকে। বিভিন্ন অজুহাতে ওই শিক্ষক কর্মচারী ছাড়াও আরও ৬ জনের কাছ থেকে নানা প্রলোভনে টাকা নেয়া হয় মোট ৬৫ লাখ টাকা। টাকা গ্রহণের রশিদও দেন তিনি।’
বিভিন্ন কারণে ২০১৭ সালে বিদ্যালয়টি উপজেলার পশ্চিম মালসাদহ নামক স্থানে স্থানান্তর করা হয়। তবে কোনো স্বীকৃতি না পাওয়ায় বিদ্যালয়টির শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের দেয়া টাকা ফেরতের জন্য সভাপতি আনিসুজ্জামান লুইসকে চাপ দিতে থাকেন। তারপর থেকেই তিনি আত্মগোপনে চলে যান।
বিদ্যালয়ের এমন অচলাবস্থা দেখে প্রাথমিক অবস্থায় যেসব শিক্ষার্থী ছিল, তারা সবাই অন্যত্র ভর্তি হওয়ায় শিক্ষার্থী শূন্য হয়ে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে ধার দেনা ও সম্পদ বিক্রি করে দেয়া টাকা না পেয়ে ক্ষোভে ফুসে ওঠেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। সুযোগ খুঁজতে থাকেন বিদ্যালয়টির সভাপতির আগমনের অপেক্ষায়।
আনিসুজ্জামান লুইস উপজেলা চত্বর সংলগ্ন নিজ বাড়িতে ফিরে আসার সংবাদে সব শিক্ষক-কর্মচারীরা তার বাড়িতে উপস্থিত হয়। পরে কৌশলে তিনি পালিয়ে যাবার চেষ্টা করলে শিক্ষকরা তাকে গাংনী উপজেলা চত্বর থেকে ধরে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কক্ষে অবরোধ করে রাখে।
পরে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক শিক্ষকদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন এবং সবাইকে শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়ে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রয়োজনে আমি উভয়পক্ষকে নিয়ে একসঙ্গে বসিয়ে এর সমাধান করব।’