মাদারীপুরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পরিচিতি সভায় স্থানীয় সংসদ সদস্য শাজাহান খানের উপস্থিতিতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।
সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের পূর্ব পাঁচখোলা এলাকায় রোববার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে ৬ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন পাঁচখোলা ইউনিয়নের মহিষেরচর এলাকার জুয়েল হাওলাদারের ছেলে ২৫ বছর বয়সী ইমন হাওলাদার, মনা খলিফার ছেলে ৩৫ বছর বয়সী মাসুদ খলিফা, নূর মোহম্মদ হাওলাদারের ছেলে ২৮ বছর বয়সী আল-আমিন হাওলাদার, খালেক মুনশির ছেলে ১৭ বছর বয়সী নাঈম মুনশি, লিটন হাওলাদারের ছেলে ১৬ বছর বয়সী অর্ক হাওলাদার, ছালাম জমাদ্দারের ছেলে ১৮ বছর বয়সী আলী হোসেন।
স্থানীয়রা জানান, পাঁচখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এক পরিচিতি সভায় আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন পাঁচখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হক ওরফে স্বপন হাওলাদার। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খান। এ ছাড়াও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। সভায় রাস্তি ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান বেল্লাল মোল্লা ও পাঁচখোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসিরউদ্দিন মোল্লার নেতৃত্বে একটি মিছিল সমাবেশ স্থলে আসে।
এরপরেই শুরু হয় হট্টগোল। একপর্যায়ে বেল্লাল মোল্লা ও নাসিরউদ্দিন সমর্থকদের সঙ্গে পাঁচখোলা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ সভাপতি এনামুল হকের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে আহত হয় উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন।
স্থানীয়রা আরও জানান, আহতদের মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হওয়ায় সংক্ষিপ্ত আকারে পাঁচখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পরিচিতি সভা শেষ করা হয়। হামলায় আহতদের দেখতে সন্ধ্যা ৭টার দিকে হাসপাতালে আসেন সংসদ সদস্য শাজাহান খান। এ সময় তিনি আহত নেতা-কর্মীদের বিষয়ে খোঁজখবর নেন।
পাঁচখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হক বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে আওয়ামী লীগের পরিচিতি সভা চলছিল। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সংসদ সদস্য শাজাহান খানও অনুষ্ঠানে আসেন। তার বক্তব্য দেয়ার আগেই বেল্লাল মোল্লা ও নাসিরউদ্দিনের লোকজন মিছিল নিয়ে সভায় অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় ৬ জন আহত হয়েছেন। পরে সংক্ষিপ্ত আকারে সমাবেশ শেষ করা হয়।’
অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে পাঁচখোলা ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান নাসিরউদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘আমাদের নামে মিথ্যে অভিযোগ দেয়া হচ্ছে। এখানে রাস্তি ইউনিয়নের লোকজন ঝামেলা করছে। আমার কোনো লোকজন কাউকে কোনো আঘাত করে নাই।’
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমাদের এমপি মহোদয়কে নিয়ে যথাসময় সভাস্থলে চলে আসি। সভা চলাকালীন এক কোনায় কিছু পোলাপান হট্টগোল করে। এ সময় এক ছেলেকে হাঁতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে। পরে আমাদের জ্যেষ্ঠ নেতারা এগিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন । ৮ থেকে ১০ মিনিট হট্টগোল ছিল। পরে শান্তিপূর্ণভাবেই অনুষ্ঠান শেষ হয়।’
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, আওয়ামী লীগের সভায় চেয়ারে বসা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি থেকে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তবে ঘটনা তেমন বড় নয়। কেউ গুরুতর আহত হয়নি।
তিনি আরও জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় আমরা এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি।