স্থানীয় নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের নিজের পক্ষে রাখতে পবিত্র কোরআন শরীফে হাত রেখে শপথ করিয়েছেন রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের এই সাংসদ জাতীয় সংসদ ভবনে নিজ কার্যালয়ে এমন শপথ করিয়েছেন।
শনিবার রাতে এই শপথ করানোর সময় ওমর ফারুক চৌধুরী নিজেই পুরো বিষয়টি মোবাইলে ভিডিও করেন। এরপর শপথ পাঠ করার একাধিক ভিডিও ও ছবি ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, পবিত্র কোরআনের ওপর হাত রেখে গোদাগাড়ীর জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা শপথ পাঠ করছেন। তারা বলছেন, ‘আজকে আমি পবিত্র কোরআন নিয়ে বলছি, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিপক্ষে কোনোদিন যাবো না। মাননীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরীর নির্দেশনা অনুযায়ী দলীয় সকল কার্যক্রম পরিচালনা করব। নৌকার সাথে বেঈমানী করব না।’
শনিবার রাতে জাতীয় সংসদ ভবনের অফিসে এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে রাজশাহীর আওয়ামী লীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা। ছবি: নিউজবাংলা
পবিত্র কোরআন শরীফে হাত রেখে সাংসদ ফারুক চৌধুরীর প্রতি আনুগত্যের শপথ করা নেতাদের মধ্যে রয়েছেন- গোদাগাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, গোদাগাড়ী পৌরসভার মেয়র ওয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস, মাটিকাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহেল রানা, দেওপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেল, গোদাগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ রানা, মোহনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খায়রুল ইসলাম, বাসেদেবপুর ইউনিয়নের নজরুল ইসলামসহ তানোর ও গোদাগাড়ীর বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়র।
তানোর উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়নাকে শপথ গ্রহণের পুরো প্রক্রিয়াটি ভিডিও করতে দেখা যায়।
পবিত্র কোরআনে হাত রেখে শপথ গ্রহণের বিষয়টি স্বীকার করেন গোদাগাড়ী পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘আমি গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। আমরা শেখ হাসিনার পক্ষে থাকব, নৌকার পক্ষে থাকব। এজন্য কিছু নেতাকর্মী ও চেয়ারম্যানরা ঐক্যবদ্ধ হই। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকার পক্ষে কাজ করব- এটাই আমাদের ওয়াদা।
‘মরা নিজেরাই কোরআনে হাত রেখে শপথ নিয়েছি। এখানে কেউ কিছু বলেননি বা জোর করেননি।’
গোদাগাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘নৌকার পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে এমপি তাদের শপথ করিয়েছেন। তাদের শপথ করাতে বাধ্য করা হয়নি।’
শপথ পাঠের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর এ নিয়ে রাজশাহীতে ব্যাপক আলোচনা চলছে। তবে এ নিয়ে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনীল কুমার সরকার কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানি না। তবে পবিত্র কোনআন শরীফ সবার ঊর্ধ্বে। এটা নিয়ে শপথ করতে পারে কি পারে না সেটা নিয়ে আমি মন্তব্য করব না।
রাজনীতি করতে হলে অনেক সময় অনেক কথা বলা লাগে। তিনি কোন মাইন্ডে এটা করেছেন তা নিয়ে আমি মন্তব্য করতে পারব না। এটা ওনার ব্যাপার। তাকে প্রশ্ন করেন।
তবে এ বিষয়ে জানতে এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীকে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। এসএমও পাঠালেও কোনো জবাব দেননি তিনি।