বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সবুজ মাঠে লাল বাহুবলি

  •    
  • ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১১:৫০

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘কুমিল্লায় এ বছর এক হাজার ৮৪৬ হেক্টর জমিতে টম্যাটোর চাষ হয়। প্রতি হেক্টরে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩০ টন। বাহবলি, মানিক-রতনসহ বিভিন্ন হাইব্রিড জাতের টম্যাটো চাষ করেছেন ১৭ উপজেলার কৃষকরা। তবে ভালো লাভ পাওয়ায় বাহুবলির চাহিদা বেশি।’

প্রজাদের কষ্টে পাশে থাকা মহারাজা বাহুবলি অমর হয়ে আছেন যাকে নিয়ে সিনেমাও তৈরি হয়েছে। নাম অমেরন্দ্র বাহুবলি। সেই বাহুবলির নামের লাল টম্যাটো এবার কৃষকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।

কুমিল্লার দাউদকান্দির বিস্তৃর্ণ সবুজ মাঠে লাল বাহুবলির রাজত্ব ছড়িয়ে পড়েছে। কাকডাকা ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে টম্যাটো সংগ্রহ। বিকেলের আগে পাইকারদের গাড়িতে করে বাহুবলিরা চলে যায় হাটে। দেখতে বড় স্বাদ ও ঘ্রাণে অসাধারণ। তাই হাট-বাজারে বাহুবলির চাহিদাও অনেক। ফলন ভালো হওয়ায় মুনাফাও পাচ্ছেন চাষিরা।

সরেজমিনে দাউকান্দি উপজেলার আদমপুর, বিটমান ও টামটা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাচায় ঝুলে আছে লাল সবুজ টম্যাটো। দেশি অন্য কোনো জাতের তুলনায় আকারে বড়। মাচা থেকে ঝুলে মাটি স্পর্শ করছে অধিকাংশ টম্যাটো। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সেই টম্যাটো সংগ্রহ করে জমির পাশে স্তুপ করছেন চাষিরা। পাইকাররা আসছেন, দরদাম করে বস্তাবন্দি করে দূরের হাটে নিয়ে যাচ্ছেন বাহুবলিদের।

বিটমান গ্রামের বকুল রাণী দেবনাথ নামের এক কৃষাণী নিজের ছেলে ও কাজের লোক নিয়ে টম্যাটো সংগ্রহ করছেন। তার জমির আইলে দাঁড়িয়ে রয়েছেন পাইকার ও স্থানীয় খুচরা ক্রেতারা। জমির পাশে স্তুপ করা টম্যাটো পাল্লায় মেপে পাইকারদের হাতে তুলে দিচ্ছেন।

বকুল রানী জানান, এ বছর বাহুবলি জাতের টম্যাটো চাষ করেছেন। চারা, মাঁচা ও জমি প্রস্তুতসহ তার খরচ হয়েছে এক লাখ টাকা। দেড়কানি (৩০শতকে কানি) জমিতে বাহুবলি জাতের টম্যাটোর ভালো ফলন হয়েছে। তিনি আশা করছেন সব খরচ বাদ দিয়ে তার লাভ হবে অন্তত দুই লাখ টাকা।

বাহুবলি হাইব্রিড প্রজাতির টম্যাটো। এই বীজের নাম দিয়েছে এ আর মালিক সিড কোম্পানি। তারাই মূলত নাম দিয়েছে বাহুবলি।

ঢাকা থেকে বাহুবলি টম্যাটো কিনতে আসা পাইকার দবির মিয়া জানান, তিনি সারা বছরই কাওরানবাজারে পাইকারি শাকসবজি বিক্রি করেন। তার পছন্দের জায়গা কুমিল্লার দাউদকান্দি। এবার দাউদকান্দিতে বাহুবলি নামের টম্যাটোর ভালো ফলন হয়েছে। আকারে বড় স্বাদও ভালো। আকার-আকৃতি অনুযায়ী পাইকারি প্রতি ১৫-২০ কেজি দরে কেনেন। পরিবহন খরচ এবং নেয়ার সময় কিছু নষ্ট হয়। এসব মিলে প্রতি কেজি টম্যাটো ৩০-৩৫ টাকা দরে বিক্রি করেন।

কুমিল্লা রাজগঞ্জ থেকে আসা পাইকার জুয়েল হোসেন বলেন, ‘দাউদকান্দির এসব গ্রামগুলোতে যে টম্যাটো হয় সেগুলো আকারে বড়। দেখতে সুন্দর। কাঁচা পাকা মিলিয়ে আমি ১০ মণ টম্যাটো কিনেছি। পাকাগুলো আজকালই বিক্রি হয়ে যাবে। কাঁচাগুলো দোকানে রেখে দিলে পেকে যাবে। তখন বিক্রি করতে পারব।’

দাউদকান্দির আদমপুর গ্রামের শিক্ষক মতিন সৈকত বলেন, ‘আদমপুর, বিটমান, পুটিয়া ও টামটা গ্রামের মাঠে প্রতি বছরই প্রচুর টমেটোর চাষ হয়। এখানের অধিকাংশ কৃষক প্রাকৃতিক বালাইনাশক ব্যবহার করে ফসল উৎপাদন করে। টম্যাটোর ক্ষেত্রেও তাই।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘কুমিল্লায় এ বছর এক হাজার ৮৪৬ হেক্টর জমিতে টম্যাটোর চাষ হয়। প্রতি হেক্টরে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩০ টন। বাহবলি, মানিক-রতনসহ বিভিন্ন হাইব্রিড জাতের টম্যাটো চাষ করেছেন ১৭ উপজেলার কৃষকরা। তবে ভালো লাভ পাওয়ায় বাহুবলির চাহিদা বেশি।’

এ বিভাগের আরো খবর