চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন করেছেন চারুকলার ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। মূল ক্যাম্পাসে আন্দোলন চলমান রাখার পাশাপাশি অনশনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
শহীদ মিনারের সামনে সোমবার সকাল ১০টায় প্ল্যাকার্ড হাতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিল নিয়ে শহীদ মিনার থেকে প্রক্টরের কার্যালয় ও প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রদক্ষিণ করেন আন্দোলনরতরা। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সোমবারের আন্দোলন শেষ হয়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি, এতদিন তারা শহরের ক্যাম্পাসে আন্দোলন চালিয়েছেন। শহরের ক্যাম্পাস বন্ধ হওয়ায় এখন তারা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই আন্দোলন করছেন। তারই ধারাবাহিকতায় মূল ক্যাম্পাসে দ্বিতীয় দিন তারা তাদের কর্মসূচি পালন করেছেন। শিক্ষার্থীরা মূল ক্যাম্পাসেই ফিরতে অনড়।
আন্দোলনরত চারুকলা স্নাতকোত্তর বর্ষের শিক্ষার্থী জহির রায়হান অভি বলেন, ‘আমাদের শহরস্থ ক্যাম্পাসটা এই আন্দোলনের অজুহাতেই বন্ধ করা হয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিলাম। আন্দোলন ৯৭ তম দিন চলছে। আমাদের আন্দোলন বন্ধ করতেই প্রশাসন ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করেছে। রোববার ও সোমবার দুইদিনই আমরা আমাদের অবস্থান দেখিয়েছি। কিন্তু প্রশাসনের কোনো সাড়াশব্দ নেই।’
অনশনের হুঁশিয়ারি দিয়ে আন্দোলনরত চারুকলা স্নাতকোত্তর বর্ষের শিক্ষার্থী জহির রায়হান অভি বলেন, ‘আমরা আগেই অনশনের ঘোষণা দিয়েছিলাম। আমরা হয়তো সেই ঘোষণাতে ফিরে যাব। স্থানান্তর শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। প্রশাসন শহরের ক্যাম্পাস বন্ধ করে আমাদের আন্দোলন করার জায়গায়টা প্রশস্ত করে দিয়েছে। আমরা মূল ক্যাম্পাসে আন্দোলন চলমান রাখব।’
প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া জানান, চারুকলার বিষয়ে সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত দিয়েছে। তাদের পড়াশুনার জন্য চারুকলা ক্যাম্পাসে সংস্কার কাজ চলছে।
এর আগে ২০২২ সালের ২ নভেম্বর থেকে ২২ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি ও ক্লাস বর্জন শুরু করেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন দাবি মানতে ইতিবাচক সাড়া দিলেও পরে ২২ দফা দাবি হঠাৎ মূল ক্যাম্পাসে ফেরার এক দফা দাবিতে রূপ নেয়।
শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, মূল ক্যাম্পাস ছাড়া তাদের এই ২২ দফা দাবির সবগুলো পূরণ করা সম্ভব নয়। এর বাইরে ১২ বছর ধরে দৃশ্যমান কোনো সংস্কার কিংবা অগ্রগতি তারা দেখেননি। তাই মূল ক্যাম্পাস বিচ্ছিন্ন তারা আর থাকতে চান না। এক দাবিতেই ৯৭ দিন ধরে তারা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যান। সর্বশেষ আন্দোলনের বিষয়ে শনিবার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রী।
২২ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক ও মহানগর আওয়ামী এর সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম নাছির উদ্দিনের সঙ্গে আলোচনার পর আন্দোলন স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে ক্লাসে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা। তবে শর্তপূরণ না হওয়ায় গত ৩১ জানুয়ারি ফের আন্দোলনে নামেন তারা। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার সংস্কার কাজের জন্য ক্যাম্পাস ও হোস্টেল ১ মাসের জন্য বন্ধের ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।