বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

স্ত্রীর সহায়তায় প্রেমিকাকে খুন এইচএসসি পরীক্ষার্থীর

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৭:১৯

গত ৩ জানুয়ারি মুন্সীগঞ্জের কোর্টগাঁও এলাকায় বন্ধুর বাড়িতে ঘুরতে গিয়ে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী জেসির রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

একজনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে থাকার মধ্যেই আরেকজনের সঙ্গে প্রেমে জড়ান এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়া বিজয় রহমান। দুই প্রেমিকার মধ্যে একজনকে গোপনে বিয়ে করেন তিনি। এক পর্যায়ে গোপনে বিয়ে করা স্ত্রীর সহযোগিতায় ওই প্রেমিকাকে খুন করেন করেন বিজয়।

মুন্সীগঞ্জে স্কুলছাত্রী জেসিকা মাহমুদ ওরফে জেসি হত্যা মামলার প্রধান আসামি বিজয়কে শনিবার রাতে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৩-এর একটি দল গ্রেপ্তার করে।

রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব কথা জানান।

গত ৩ জানুয়ারি মুন্সীগঞ্জের কোর্টগাঁও এলাকায় বন্ধুর বাড়িতে ঘুরতে গিয়ে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী জেসির রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

র‌্যাব জানিয়েছে, বিজয় রহমান ২০১৯ সালে একই স্কুলে পড়ুয়া আদিবা আক্তারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। আদিবার সঙ্গে সম্পর্ক চলাকালীন বিজয় ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে জেসির সঙ্গেও প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। বিজয় উভয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক বজায় রেখে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আদিবাকে সঙ্গে বিয়ে করেন।

পরে বিজয় ও আদিবার গোপনে বিয়ের বিষয়টি জানতে পেরে জেসি তার এবং বিজয়ের সঙ্গে তার বিভিন্ন কথোপকথনের স্ক্রিনশট আদিবার মেসেঞ্জারে পাঠান। বিষয়টি নিয়ে বিজয় ও আদিবার মাঝে বিভিন্ন সময় কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া-বিবাদ হলে তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি শুরু হয়। এত পরই ঘটে পরিকল্পিত খুনের ঘটনা।

র‌্যাব মুখপাত্র জানান, ২০২২ সালের ডিসেম্বরের শেষের দিকে বিজয় আদিবার সঙ্গে আলোচনা করে ১ জানুয়ারি জেসিকে বিজয়ের বাসার ছাদে ডেকে উচিত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করেন। ঘটনার দিন বিকেলে আদিবা জেসির সঙ্গে দেখা করলে জেসি বিজয়ের সঙ্গে তার বিভিন্ন সময়ের কথপোকথনের স্ক্রিনশট দেখান। এই সমস্যা মিমাংসা করার জন্য আদিবা জেসিকে বিজয়ের বাসার ছাদে নিয়ে আসেন।

তিনি বলেন, পরে আদিবা ফোন করে বিজয়কে ছাদে আসতে বলেন। সেখানে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতির একপর্যায়ে বিজয় ও আদিবা জেসির গলাটিপে ধরলে শ্বাসরোধ হয়ে জেসি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে নিজেদেরকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য জেসিকাকে ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ার নাটক সাজানোর উদ্দেশে বিজয় ও আদিবা মিলে জেসিকে অজ্ঞান অবস্থায় ছাদ থেকে নামিয়ে এনে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে বাসায় চলে আসেন।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, এরপর পাশের বাসায় থাকা বিজয়ের চাচা জেসিকে রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার শুরু করলে বিজয় এবং তার পরিবারের সদস্যরা বাসা থেকে নেমে আসেন। একপর্যায়ে বিজয় এবং তার বাবাসহ স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাকে মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান তারা। পরে বিজয় জেসির ভাইকে জেসির অসুস্থতার কথা বলে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে জরুরি ভিত্তিতে আসতে বলেন।

র‍্যাব জানায়, জেসির ভাই হাসপাতালে পৌঁছালে চিকিৎসক জানান জেসির মৃত্যু হয়েছে। এ মৃত্যুর ঘটনা শুনে বিজয় এবং আদিবা কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে যান। জেসির মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে জেসির ভাই জানতে পারেন তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। পরে জেসির ভাই বিজয়, আদিবাসহ আরও ১-২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। শনিবার আদিবাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করে এবং তিন বর্তমানে জেল-হাজতে রয়েছেন।

র‍্যাবের মুখপাত্র জানান, বিজয় মুন্সীগঞ্জের একটি কলেজ থেকে ২০২২ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। তিনি জেসি হত্যার পর থেকে মুন্সীগঞ্জ সিরাজদিখান এলাকায় তার বন্ধুর বাড়িতে চারদিন আত্মগোপনে থাকেন। সেখানে নিজেকে নিরাপদ মনে না করে পরে ফরিদপুরের একটি মাজারে ছদ্মবেশে ২২ দিন আত্মগোপনে থাকেন।

তিনি বলেন, একপর্যায়ে তার সন্দেহ জাগে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাতে পারে। সেই আশঙ্কা থেকে তিনি ১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ওয়ারী এলাকায় তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বাসায় এসে আত্মগোপনে থাকেন।

এ বিভাগের আরো খবর