বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৬ জনের নামে মামলা

  • প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া    
  • ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০৯:০৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ওসি মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, মামলাগুলো তদন্ত করা হচ্ছে। এক মাসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে নারীকে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৬ জনের নামে দ্রুত বিচার আইনে মামলা হয়েছে।

উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ ভূঁইয়া ও তার সমর্থকদের নামে এ মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী।

ভুক্তভোগী নারী সৈয়দা বদরুননেছা সুহিলপুর ইউনিয়নের হিন্দুপাড়ার বাসিন্দা মো. সারওয়ারের স্ত্রী। ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ ভূঁইয়াও একই গ্রামের বাসিন্দা।

গত মঙ্গলবার বদরুননেছা চেয়ারম্যান ও তার লোকজনের নামে দ্রুত বিচার আইনে আদালতে একটি মামলা করেন। বুধবার তিনি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে বিরোধপূর্ণ জায়গায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার আদেশ চেয়ে আরেকটি মামলা করেন। বৃহস্পতিবার বদরুননেছার শ্বশুর সামছুল হুদা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আরেকটি মামলা করেন।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মাসুদুর রহমান জানান, আদালত দ্রুত বিচার আইনের ধারার মামলাসহ দুটি মামলা তদন্ত করে এক মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

অভিযুক্ত আবদুর রশিদ ভূঁইয়া সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। তিনি সদর উপজেলা আওয়ামী লীগেরও সদস্য। ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ায় পুলিশ উল্টো মামলার বাদীদের হয়রানি করছে বলে অভিযোগ করেছেন মামলার বাদী। মামলার বাদী সম্পর্কে ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রশীদের চাচি।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ওই নারী ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রশিদের চাচা আনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে ১৯৬৯ নম্বর দলিলমূলে দেড় শতক এবং তার স্বামী ১৩৩২৩ নম্বর দলিলমূলে ৫ শতক জায়গা কেনেন। গত ইউপি নির্বাচনের আগে তাদের সেই জায়গার পেছনে ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রশিদের আরেক চাচা রেনু ভূঁইয়ার কাছ থেকে ৫ থেকে ৭ শতকের একটি জায়গা কিনে নেন স্থানীয় কালু মিয়া। ওই জায়গায় যাওয়ার রাস্তা না থাকলেও বিক্রির সময় চেয়ারম্যানের আত্মীয় ওই দম্পতির জায়গা দেখিয়ে নির্ধারিত দাম থেকে দ্বিগুণ মূল্যে দলিল করেন।

এরপর ওই জায়গায় যাওয়ার জন্য রেনু ভূঁইয়া ও কালু মিয়ার পক্ষ হয়ে চেয়ারম্যানসহ তার লোকজন ওই নারীর জায়গার ওপর দিয়ে রাস্তা তৈরি করতে যায়। এতে ওই নারী বাধা দেন। পরে চেয়ারম্যানসহ তার লোকজন জোরপূর্বক ওই দম্পতির জায়গার ওপর দিয়ে রাস্তা তৈরি করার হুমকি দেন। এ সময় তাদের হত্যার হুমকিও দেয়া হয়।

গত ৩০ জানুয়ারি সকাল ৮টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান ও তার লোকজন দা, লাঠি, রড, কুড়াল, কোদাল ও শাবল নিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে ওই দম্পতির জায়গার গাছপালা কাটতে শুরু করে। ওই সময় মামলার আসামি রুবেল ভূঁইয়া ওই নারীকে মাটিয়ে ফেলে টানা হেঁচড়া করে কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে তার শ্লীলতাহানি করেন।

চেয়ারম্যানের চাচাতো ভাই মমিন ভূঁইয়া ও লিটন মিয়া ভুক্তভোগী নারীর এক আত্মীয়াকে মাটিতে ফেলে চুলে ধরে টানাহেঁচড়া করেন। এরপর তাদের দুইজনের কাছ থেকে মোট সাড়ে তিন ভরি ওজনের স্বর্ণাংলকার ছিনিয়ে নেন তারা। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন তাদের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। নিরুপায় হয়ে সকাল সোয়া ৯টার দিকে ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চান ওই নারী।

মামলার বাদী সৈয়দা বদরুননেছা বলেন, ‘প্রতিপক্ষ চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা ও তার লোকজন অত্যন্ত প্রভাবশালী। আদালতে মামলার করার পর উল্টো পুলিশের হয়রানির শিকার হচ্ছি। টাকা দিয়ে জায়গা কিনে এখন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি।’

সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ ভূঁইয়া বলেন, ‘সেখানে আমার পারিবারিক জায়গা রয়েছে। দুই চাচা আনোয়ার হোসেন ও রেনু ভূঁইয়া দুইজনের কাছে জায়গা বিক্রি করে। ২০০৭ সালে আমাদের একটি পারিবারিক বন্টকনামা করা হয়। সেখানে পেছনের জায়গায় যেতে তিন ফুট দৈর্ঘ্যের একটি রাস্তার বিষয় উল্লেখ করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার দিন কয়েকজন গিয়ে গাছপালা কেটে ফেলে। সে সময় টানাহেঁচড়া হয়ে থাকতে পারে। তবে আমি দেখিনি। জানতে পেরে আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে মাটিতে একটি দা পড়ে থাকতে দেখি। দুর্ঘটনা এড়াতে আমি সেটি হাতে নেই।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, মামলাগুলো তদন্ত করা হচ্ছে। এক মাসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

তিনি আরও জানান, পুলিশ বাদীপক্ষকে কোনো ধরনের হয়রানি করেনি। এ অভিযোগ সত্য না।

এ বিভাগের আরো খবর