উদ্বোধনের পর প্রথম ছুটির দিনেই জমে উঠেছে বাঙালির প্রাণের মেলা অমর একুশে বইমেলা।
উদ্বোধনের তৃতীয় দিনেই এত মানুষের উপস্থিতিকে অবিশ্বাস্য বলছেন অনেকেই। বিকেলে লাইনে দাঁড়িয়ে মেলায় ঢুকতে দেখা যায় বইপ্রেমীদের। সব স্টলেই ছিল বেশ ভিড়।
এবারের মেলায় প্রথম শিশু প্রহর শুরু হয়েছে এদিন সকাল ১১টায়। পরে নির্ধারিত সময়ে প্রবেশ করতে থাকেন বড়রা।
অন্বেষা প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী মো. শাহাদাত হোসাইন বলেন, প্রথম ছুটির দিনে এত মানুষ আর কখনই হয়নি। অনেক মানুষ এসেছেন, বই দেখছেন, ক্যাটালগ কালেক্ট করছেন, বইও কিনছেন। তবে পাঠকের চেয়ে দর্শনার্থীদের সংখ্যা অনেক বেশি।
মেলা ঘুরে দেখা যায় জনস্রোত। দেশের নানাপ্রান্থ থেকে পাঠকরা আসতে শুরু করেছেন প্রাণের মেলায়। স্টলগুলোও পুরোদমে শুরু করেছে বই বিক্রি কার্যক্রম।
সরেজমিনে দেখা যায়, গ্রন্থ উন্মোচন অংশের সামনে অবস্থিত লিটলম্যাগেও অনেকগুলো স্টলে বই বিক্রির কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে। যদিও প্রতিবছরই এখানে অনেকটাই দেরিতে বই বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয়।
অনিন্দ্য প্রকাশের প্রকাশক মো. আফজাল হোসাইন বলেন, মেলা উদ্বোধনের পর আজ প্রথম সাপ্তাহিক ছুটির দিন। অনেক অনেক পাঠক আসছেন এবং বই কিনছেন। পরবর্তী দিনগুলোতেও আরো ভালো বই বিক্রি হবে বলে আশা করছি। তবে আজ মেলার তৃতীয় দিনেও প্রস্তুতির অনেক ঘাটতি রয়ে গেছে। মেলা প্রাঙ্গণে কোনো পানি ছেটানো হয়নি। এখনো স্টলগুলোর মাঝখানে হাঁটার জায়গায় ইট বসানো হয়নি। আর তা বসানো হবেও না বোধহয়।
পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স এর বিক্রয়কর্মী কিবরিয়া বলেন, উদ্বোধনের মাত্র তৃতীয় দিন আজ। কিন্তু মেলায় প্রচুর মানুষজন আসছেন। অনেকেই বই কিনছেন। তবে পাঠকদের চেয়েও দর্শনার্থীদের সংখ্যা অনেক বেশি। আমরা এভাবে পুরো মাস জুড়ে বই বিক্রিতে ব্যস্ত থাকবো বলে প্রত্যাশা করছি।
মেলায় ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ চোখ পড়লো অন্যধারা প্রকাশনীর দিকে। সামনে গিয়ে দেখা যায় জনস্রোত। বোঝাই যাচ্ছিল হয়তো কোনো জনপ্রিয় লেখককে ঘিরে এই ভিড়।
স্টলের উপরিভাগের একটি বড় ব্যানারে চোখ পড়তেই দেখা যায়, সাদাত হোসাইনের একটি বিখ্যাত উক্তি ‘’আমাকে হারাতে দিলে নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তিতে ছেয়ে যাবে তোমার শহর’। স্টলের চারপাশে জনপ্রিয় এই তরুণ লেখককে ঘিরে রেখেছেন প্রায় অর্ধশত পাঠক-দর্শনার্থী।
লেখকের ছদ্মবেশ বইটা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন মামুনুর রহমান। সাদাত হোসাইনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তার বইগুলো অনেক মর্মস্পর্শী। তার বইগুলোর লিখা অনেক গভীর অর্থবোধক। ওনার এমন কোনো বই নেই যা আমি পড়িনি। ওনার লিখায় আমি ডুবে যাই।’
বাংলা একাডেমির জানিয়েছ, বইমেলা ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত চলবে। তবে দর্শক, ক্রেতা ও পাঠকেরা রাত সাড়ে আটটার পর মেলা প্রাঙ্গণে ঢুকতে পারবেন না। সরকারি ছুটির দিনে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।