‘রাতে শুনতে প্যানু যে হাঁর ছ্যালাকে পিটিয়া ম্যারা ফ্যালাছে। হ্যামার ছ্যালা দোষী লয়, হামি হাঁর ছ্যালাকে মারার বিচার চায়।’
আহাজারি করে কথাগুলো বলছিলেন রাকিবুল ইসলামের (রাকিব) মা। রাজশাহীতে পিটিয়ে মেরে ফেলা দুই শ্রমিকের একজন এই রাকিব।
ছেলের মৃত্যুর খবরে মা বেদনা বেগমের কান্না আর থামছে না। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহী নগরীতে এই ঘটনা ঘটলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জে মায়ের কাছে এই খবর পৌঁছে রাত ১২টায়।
রাজশাহীতে খাদ্যপণ্য প্রস্তুতকারী একটি প্রতিষ্ঠানের মালিকের বাসায় দুই নির্মাণ শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় কারখানা মালিকসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। মহানগরীর বিসিক শিল্প এলাকায় বৃহস্পতিবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রাকিবের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চৈতন্যপুর গ্রামে। শুক্রবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের মানুষ রাকিবের এমন করুণ মৃত্যুর খবরে হতবাক। তারা বলছেন, রাকিবকে তারা ভালো ছেলে হিসেবেই চেনেন, জানেন।
চৈতন্যপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে রাকিবুল ইসলাম ছিলেন সবার বড়। গত ৮ বছর ধরে তিনি রাজশাহীতে থেকে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। স্ত্রী শ্যামলী খাতুন এবং দুই মেয়ে রাবিয়া বাসরী ও রাইসা খাতুনকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।
স্বজনরা জানান, রাকিব নির্মাণ শ্রমিকদের সর্দার বা ঠিকাদার ছিলেন। বিভিন্ন নির্মাণ কাছে তিনি গ্রাম থেকে শ্রমিকদের নিয়ে যেতেন।
প্রতিবেশী শাহানারা বেগম বলেন, ‘বিনা অপরাধে একটা নির্দোষ ছেলেকে ওরা মিটিয়ে ম্যারা ফেলল; এটার সত্য বিচার চাই। দেশে আইন আদালত আছে, থানা-পুলিশ আছে। কোনো কিছু না কর্যার পরও কোনো মানুষ এভাবে মারা ফেল্যা দিতে পারে? এখন ওই যে দুটো ছোট ছোট মেয়ে আছে, স্ত্রীটা আছে, এদের কী হবে? এখন পরিবারটার কী হবে?’