বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শিশুর কান্নায় আদালতেই বাবা-মায়ের বিয়ে

  • প্রতিনিধি, রাজশাহী   
  • ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ২২:৪১

বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিচারক স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই তার খাসকামরায় ডেকে নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানান এবং শিশুটিকে কোলে নিয়ে কিছুক্ষণ আদর করেন। আদালতের এই মানবিক উদ্যোগে বাদী, আসামি, আইনজীবী, আদালতের পেশকার, পিয়ন, ম্যাজিস্ট্রেটসহ সবাই তখন আনন্দাশ্রুতে ভিজছেন।

স্বামী-স্ত্রীর মনোমালিন্যের জেরে ঘটেছিল বিচ্ছেদ। পরে স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুকের একটি মামলাও করেছিলেন স্ত্রী। সেই মামলার শুনানি চলাকালে তাদের একমাত্র শিশু সন্তানের কান্নায় চোখ আটকে যায় আদালত কক্ষের বিচারকসহ উপস্থিত সবার। শেষ পর্যন্ত এতে হস্তক্ষেপ করেন বিচারক নিজেই। আদালতেই বিয়ে পড়ানো হয় ওই শিশুর বাবা ও মায়ের ।

রাজশাহী মেট্রপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে-২-এ বৃহস্পতিবার এমন ঘটনা ঘটেছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, রেলওয়ে কর্মচারী শিমুল পারভেজের সঙ্গে ২০২১ সালের ২ এপ্রিল জান্নাত ফেরদৌসের বিয়ে হয়। তাদের বাড়ি রাজশাহীর পবা উপজেলার কাঁটাখালি এলাকায়, তবে নিজেদের মধ্যে মনোমালিন্যের জেরে গত বছরের অক্টোবর মাসে তাদের সংসার ভেঙে যায়। গত ১২ অক্টোবর শিমুলের বিরুদ্ধে জান্নাত ফেরদৌস আদালতে মামলা করেন।

বৃহস্পতিবার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদুজজামানের আদালতে সেই মামলার জামিন শুনানি চলছিল। সাক্ষীর কাঠগড়ায় মামলার বাদী জান্নাত ফেরদৌসের কোলে তার ছয় মাসের শিশু কাঁদছিল। আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বাবা শিমুল। আদালতে জান্নাতের বাবা-মা এবং শিমুলের বাবা উপস্থিত ছিলেন। শুনানিকালে জান্নাতের কোলে কাঁদছিলো তার ছোট্ট সন্তান। জান্নাতের চোখ গড়িয়েও পড়ছিল পানি। মাথা নিচু করে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন শিমুল। দুই পক্ষের আইনজীবী পক্ষে-বিপক্ষে তাদের বক্তব্য রাখছিলেন। ওই সময়ই আদালতের দৃষ্টি পড়ে শিশুটির ওপর।

একপর্যায়ে আদালত দুই পক্ষকেই কিছু উপদেশমূলক কথা বলেন। এ সময় শিমুল ও জান্নাত দুজনই আপস করতে রাজি হন, কিন্তু তা অবশ্যই আদালতের মধ্যস্থতায়। এ সময় দুই পক্ষের আইনজীবীর অনুরোধে আদালত বিচারকাজ শেষে আদালতে কক্ষের ভেতরেই উভয় পক্ষের আইনজীবী, অভিভাবক ও বার সমিতির সম্পাদকের উপস্থিতিতে কাজী ডাকেন। আদালতের ভেতরেই এক লাখ টাকা দেনমোহর নির্ধারণ করে ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক পুনরায় শিমুল ও জান্নাতের বিয়ে দেয়া হয়। পরে আদালত সবাইকে মিষ্টিমুখ করান।

বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিচারক স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই তার খাসকামরায় ডেকে নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানান এবং শিশুটিকে কোলে নিয়ে কিছুক্ষণ আদর করেন। আদালতের এই মানবিক উদ্যোগে বাদী, আসামি, আইনজীবী, আদালতের পেশকার, পিয়ন, ম্যাজিস্ট্রেটসহ সবাই তখন আনন্দাশ্রুতে ভিজছেন।

বাদী পক্ষের আইনজীবী রেবেকা সুলতানা বলেন, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদুজ্জামান এই আদালতে যোগ দেওয়ার পর থেকে মানবিক বিচারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাচ্ছেন। তার আন্তরিক প্রচেষ্টায় এবার আদালতকক্ষে ব্যতিক্রমী বিয়ের আয়োজনের মাধ্যমে একটি সংসারের ভাঙন ঠেকানো গেল।

এ বিভাগের আরো খবর