বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনের ফল নিয়ে আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম যে অভিযোগ করেছেন তার ভিত্তি নেই বলে মনে করছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রাশেদা সুলতানা নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে বুধবারের ওই ভোট নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘হিরো আলম অসেন্তাষ হয়েছে। ওনার অভিযোগের কোনো ভিত্তি নাই। তার অভিযোগ আমলে নিয়ে সকাল থেকে আমরা ডিসি সাহেবের সঙ্গে, জেলা নির্বাচন অফিসাদের সঙ্গে; সবার সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, এ ধরনের কোনো বিষয় তাদের কাছে নাই। তদের রেজাল্ট শতভাগ ঠিক।’
বিএনপির ছেড়ে দেয়া ছয় আসনে ভোট হয় বুধবার। একতারা প্রতীক নিয়ে এই নির্বাচনে হিরো আলম বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বগুড়া-৪ আসনে উপনির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনের কাছে ৮৩৪ ভোটে হেরে যান তিনি।
পরে রাতে বগুড়ায় নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে ভোটের ফল পাল্টে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন হিরো আলম। ভোটের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন, ভোট চুরি হয়নি, ফলাফল ছিনতাই হয়েছে। ন্যায়বিচার পেতে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথাও জানিয়েছেন এই প্রার্থী।
ছয়টি আসনের উপনির্বাচনে নির্বাচন কমিশন সন্তুষ্ট জানিয়ে ইসি রাশেদা সুলতানা বলেন,‘আমাদের কাছে যে রেজাল্ট শিটগুলো আসছে, আসলে কোথাও কোনো ব্যতয় নাই।’
হিরো আলমের অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘একজন প্রার্থী যখন হেরে যায়, আমাদের দেশের সংস্কৃতিটা কিন্তু এরকমই। হেরে গেলে প্রশ্নবিদ্ধ করার নানান ধরনের প্রবণতা কিন্তু আছে আমাদের দেশে।
‘এটা শুধু হিরো আলম সাহেব নয়, যতগুলো ইলেকশন করলাম সব জায়গায়তে এ ধরনের প্রবণতা আমার লক্ষ্য করেছি।’
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা। ছবি: নিউজবাংলা
এজেন্টের হাতে ফলাফল দেয়া হয়নি- এমন প্রশ্নে ইসি রাশেদা সুলতানা বলেন,‘খোঁজ নিয়ে জেনেছি, নন্দীগ্রামে খুব একটা এজন্টে দেননি প্রার্থী। ডিসি সাহেবের সঙ্গে কথা হয়েছে, তিনি বলেছেন- আমি আর এসপি অনেকগুলো কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। আমরা ওখানে গিয়ে ওনার (হিরো আলমের) এজন্ট পাই নাই।’
কাহালু উপজেলায় হিরো আলমের কিছু এজেন্ট ছিল জানিয়ে তিনি বলেন,‘কাহালু ওনার নিজের এলাকা। এজন্টেই ছিল না। অন্যান্য প্রার্থীর কিন্তু এ ধরনের অভিযোগ নাই। উনি হেরে গেছেন তাই এ ধরনের অভিযোগ করছেন।
‘উনি বরাবরই বলেছেন ভোট ভালো হয়েছে। উনি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, হেরে গেলেও ফলাফল মেনে নেব। হেরে গেছে কষ্ট হইছে। কষ্ট উনি নানাভাবে প্রকাশ করছেন। এটা উনি করতে পারেন। একজন মানুষ বললে তো হয় না। প্রমাণ থাকতে হবে।’
হিরো আলমের আসনের কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল ওয়েবসাইটে দেবেন কি না- এমন প্রশ্নে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন,‘আমরা নিশ্চয়ই দেব। আমাদের ওয়েবসোইটে দিতে সমস্যা কোথায়? ফলাফল এখনো হয় নাই। যেটা পেয়েছি সেটা তো বেসরকারি। আসার পরে দিয়ে দেব।’
হিরো আলম আদালতে যাবেন, গেলে অসুবিধা তো নাই মন্তব্য করে এই কমিশনার বলেন,‘অভিযোগ দেয়া আর অভিযোগ এস্টাবলিশ করা দুটোর মধ্যে অনেক তফাৎ।’
ভোটের আগে আচরণবিধি খুব বেশি ভঙ্গ হয়েছে বলে মনে করেন না ইসি রাশেদা সুলতানা। বলেন, ‘কোনো প্রার্থী কোনো লিখিত অভিযোগ করে নাই। নির্বাচনের পূর্বের প্রস্তুতি সন্তোষজনক ছিল। ভোটের দিন ভোটের ভেতরে কোনো অনিয়ম হয় নাই। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দু-একটা দেখতে পেরেছি। তবে ইভিএম নিয়ে কোনো সমস্যা হয় নাই। পুরোপুরি ভোটটা সন্তোষজনক হয়েছে।’