ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক বিএনপি নেতা আবু আসিফ আহমেদের খোঁজ মিলেছে।
নানা ঘটনার পর ওই আসনের ভোটে বিএনপির দলছুট নেতা আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার জয়ী হওয়ার পরদিন বৃহস্পতিবার পুলিশের পক্ষ থেকে তার খোঁজ মেলার তথ্য দেয়া হয়েছে।
ছয় দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত আবু আসিফ। ঘটনা তদন্তে নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে একটি কমিটিও গঠন করেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন আসিফের খোঁজ পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,আবু আসিফ আহমেদ নিখোঁজ থাকার বিষয়ে তার স্ত্রী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন। এ বিষয়ে খোঁজ নিতে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আসিফের সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, জিডি তদন্তের ক্ষেত্রে আমরা তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তার পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তিনি ঢাকায় আছেন। এখন তিনি বসুন্ধরার বাসায় আছেন, শিগগিরিই ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে আসবেন।
এসপি শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আসার পর সরাসরি তাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করে বুঝতে পারবো আসল ঘটনা কি হয়েছিল; তিনি কোথায় গিয়েছিলেন এবং কেন গিয়েছিলেন।
বুধবারের নির্বাচন সামনে রেখে গত শুক্রবার রাত থেকে আসিফের খোঁজ মিলছিল না। এমন পরিস্থিতিতে আবু আসিফের স্ত্রী ও বাসার কেয়ারটেকারের মধ্যকার একটি ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তৈরি হয় নতুন প্রশ্ন-তাহলে কি ভোটের আগে এই স্বতন্ত্র প্রার্থী স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে যান?
ওই ফোনালাপে উঠে আসে আসিফ নিখোঁজ হওয়ার আগের ঘটনা। স্বেচ্ছায় আত্মগোপনের জন্য জিনিসপত্র গুছিয়ে দেয়া ও সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ রাখার কৌশলের বিষয়ও রয়েছে ওই টেলি কথোপকথনে।
আবু আসিফ আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। সম্প্রতি তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা ও এই আসন থেকে পাঁচবার নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হন আসিফ। তার প্রতীক ছিল মোটরগাড়ি।
নির্বাচনে সাত্তারকে জেতাতে আওয়ামী লীগের তৎপরতার অভিযোগ করেন অনেকেই। এ অবস্থাতেই আসিফের স্ত্রী মেহেরুননিছা মেহরীন নিউজবাংলাকে বলেছিলেন, ‘প্রতিনিয়ত আমাদের হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। বাড়িতে পুলিশ এসে অযথা তল্লাশি করে হয়রানি করছে। বাড়ির সামনেও কিছু পুলিশ আসা-যাওয়া করছে। এতে আমি অনেকটাই আতঙ্কিত!’
গত ১১ ডিসেম্বর উকিল আব্দুস সাত্তার বিএনপির অন্য সংসদ সদস্যদের সঙ্গে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। এতে আসনটি শূন্য হয়। পরে আসনটিতে উপনির্বাচন আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন। ভোটে আসনটি থেকে আওয়ামী লীগের কোনো দলীয় কোনো প্রার্থী ছিল না।