বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করছিলেন ফাঁসির আদেশ পাওয়া আলবদর নেতা মজিদ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৪:৫৯

নেত্রকোণা থেকে ঢাকা হয়ে পালিয়ে মাদারীপুরে গিয়ে একটি কামিল মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করছিলেন তিনি; বুধবার মাদারীপুর সদর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী সাত অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আলবদর নেতা মো. আব্দুল মজিদকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

নেত্রকোণা থেকে ঢাকা হয়ে পালিয়ে মাদারীপুরে গিয়ে একটি কামিল মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করছিলেন তিনি; বুধবার মাদারীপুর সদর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান র‌্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

২০১৫ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার বিচার শুরুর পর পরই আত্মগোপনে যান আলবদর নেতা ৮২ বছর বয়সী মজিদ। ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে ফাঁসির আদেশ দেয়।

র‌্যাব বলছে, ১৯৭১ সালে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী সাত অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এই আসামি নেত্রকোণা থেকে পালিয়ে ঢাকায় আসেন। এরপর এক আত্মীয়ের মাধ্যমে মাদারীপুরে একটি কামিল মাদ্রাসায় শিক্ষকতার মাধ্যমে পলাতক জীবন শুরু করেন।

র‌্যাব-৩-এর অধিনায়ক আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৯৭০ সালে গঠিত জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী এই মজিদ নেত্রকোণার পূর্বধলা থানা জামায়াত ইসলামীর সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন রাজাকারদের প্রধান বাহিনী আলবদর পূর্বধলা রামপুর থানা কমিটির প্রধান ছিলেন তিনি।

তিনি জানান, পূর্বধলা রামপুর মৌদাম গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেকসহ তারা আপন দুই ভাই এবং পাঁচজন চাচাতো ভাই মিলে একই বাড়িতে সাতজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। ১৯৭১ সালের ২১ আগস্ট দুপুরে আব্দুল মজিদ দলবল নিয়ে আব্দুল খালেকের বাড়িতে আক্রমণ করে। সে সময় বাড়িতে থাকা আব্দুল খালেকসহ মুক্তিবাহিনীর সবাইকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, হত্যার পর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেকের লাশটি পার্শ্ববর্তী কংস নদীতে ফেলে দেয় তারা। এই হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি আব্দুল খালেকের বাড়িতে লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়। ঘটনার সময় আব্দুল খালেকের ভাই আব্দুল কাদের বাড়ি থেকে পালিয়ে প্রাণে বেঁচে যান।

তিনি বলেন, ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আব্দুল মজিদসহ ৪ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন আব্দুল কাদের। পরে মামলার তদন্তে আরও তিনজনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।

র‌্যাব অধিনায়ক জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে আনা সাতটি অভিযোগই প্রমাণ হলে ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল সাতজনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়। বিচার চলাকালে মামলার দুই আসামি আহম্মদ আলী ও আব্দুর রহমান মারা যায় এবং রায় হওয়ার পর পলাতক অবস্থায় মারা যায় আরও দুই আসামি। মজিদ গ্রেপ্তার হলেও মামলার আরও দুই আসামি আব্দুল খালেক তালুকদার ও কবির খাঁ বর্তমানে পলাতক।

আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, মামলাটির বিচারিক প্রক্রিয়া চলমান অবস্থায় ২০১৫ সালে আব্দুল মজিদ তার নিজ এলাকা ছেড়ে ঢাকায় চলে আসে এবং ফকিরাপুল এলাকায় কিছুদিন আত্মগোপনে থাকে। এরপর আত্মীয়ের সহযোগিতায় মাদারীপুরে গিয়ে আত্মগোপন করে একটি কামিল মাদ্রাসায় শিক্ষকতার মাধ্যমে পলাতক জীবন শুরু করে এই ব্যক্তি। ২০১৫ সাল থেকে মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া চলাকালীন সে কখনই আদালতে হাজিরা দেয়নি।

র‌্যাব জানিয়েছে, আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় মজিদ সাধারণত জনসমাগম স্থান, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান ছাড়াও তার ব্যক্তিগত পরিচয় প্রকাশ পায় এমন স্থান এড়িয়ে চলতো। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

এ বিভাগের আরো খবর