গাজীপুরের টঙ্গীতে আদালতের বুঝিয়ে দেয়া জমিতে কাউন্সিলরের বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় দুই পক্ষের হাতাহাতিতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূরুল ইসলাম নূরু লাঞ্ছিত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
টঙ্গীর দত্তপাড়া ব্র্যাক টাউন এলাকায় সোমবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৪ সাল থেকে দত্তপাড়া মৌজায় এসএ ৩৬১ আরএস ৫৭৮ খতিয়ান ভূক্ত ৩৬.৫০ শতাংশ জোত জমির মালিকানা দাবি করে নূরুল ইসলাম জনি আদালতে দেওয়ানী মোকাদ্দমা করেন। মামলায় ২০ জনকে বিবাদি করা হয়। নয় বছর শেষে আদালত নূরুল ইসলাম জনির পক্ষে মালিকানার রায় দেন।
সোমবার আদালতের আদেশে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ও লাল নিশান টানিয়ে জমির সীমানা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। ওই জমির পাশেই কাউন্সিলর নূরুর পরিবারের ৮৭ শতাংশ জমি রয়েছে।
তবে অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন যাবত কাউন্সিলর নুরু পার্শ্ববর্তী নূরুল ইসলাম জনিদের ওয়ারিশের জমিটি দখলের পায়তারা করে আসছিল। সোমবার আদালত জমি বুঝিয়ে দেয়ার পর বিকেলে কাউন্সিলর নূরু তার লোকজন নিয়ে ওই জমিতে গিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণে বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের লোকজনের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
জমির মালিক নূরুল ইসলাম জনির বড় ভাই জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘সকালে আদালতের আদেশে পুলিশের উপস্থিতিতে আমাদেরকে জমি বুঝিয়ে দেয়া হয়। এরপর আমরা সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ করছিলাম। হঠাৎ কাউন্সিলর নূরু তার লোকজন নিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণে বাধা দেয়। বিষয়টি আমরা থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কাউন্সিলরসহ তার লোকজনকে সরিয়ে দেয় এবং আমাদের নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়।’
থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অহিদ মিয়া বলেন, ‘দুপক্ষের উত্তেজনা শুরু হলে উভয়পক্ষকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি।’
এ ব্যাপারে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূরুল ইসলাম নূরু বলেন, ‘সোমবার বিকেলে যুবলীগ নেতা সোহেল রানা তার লোকজন নিয়ে আমার জমি দখল করার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। থানা পুলিশকেও জানিয়েছি। তবে তিনি লাঞ্চিত হওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যান।’
যুবলীগ নেতা সোহেল রানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আদালতের রায়ের ভিত্তিতে নাজির ও পুলিশের উপস্থিতিতে জমিটি আমার নিকটআত্মীয় জহিরুল ইসলামের পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়া হয়। বিকেলে জমির সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে গেলে কাউন্সিলর নূরু তার লোকজন নিয়ে নির্মাণ কাজে বাধা দেয়। এ সময় আমার লোকজন কাউন্সিলরকে বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা ছড়ায়। তাৎক্ষনিক আমি আমার লোকজনকে বুঝিয়ে সরিয়ে নেই।’
টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আদালতের আদেশের অনুলিপি পেয়ে সকালে জমি মালিক পক্ষকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। বিকেলে কাউন্সিলর নুরু ওই জমিতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আপাতত সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখতে বলেছি।’