ব্যক্তিগত গাড়ির চালক হুমায়ুন কবিরের সহায়তায় বাসায় ঢুকে একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রবীণ ফটোসাংবাদিক আফতাব আহমেদকে হত্যা করা হয়। হত্যাকারীদের একজন ওই গাড়ি চালকের আত্মীয়।
আফতা আহমেদকে হত্যার মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া রাজু মুন্সিকে গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছে পুলিশের এন্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ)।
এটিইউ জানায়, বাসা ভাড়ার কথা বলে ঘাতকরা সাংবাদিক আফতাব আহমেদের বাসায় ঢোকে। তাদের সহায়তা করেছিলেন আফতাব আহমেদের গাড়ির চালক হুমায়ুন কবির। বাসায় ঢুকে ডাকাতি করার চেষ্টা করলে সাংবাদিক আফতাব তাদের বাধা দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়।
ঘাতক রাজু মুন্সি ও গাড়ির চালক হুমায়ুন আত্মীয় বলেও জানায় এটিইউ।
রাজধানীর বাড়িধারায় এটিইউর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির পুলিশ সুপার (ইন্টেলিজেন্স) এম এম হাসানুল জাহিদ বলেন, ‘প্রবীণ ফটোসাংবাদিক আফতাব আহমেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া পলাতক আসামি রাজু মুন্সিকে মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে দিনাজপুরে ফুলবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
‘রাজু দীর্ঘ নয় বছর বিভিন্ন ছদ্মবেশ দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। তিনি পরিবারের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করতেন না।’
তিনি বলেন, ‘আফতাব আহমেদ পশ্চিম রামপুরা ওয়াপদা রোড এলাকায় নিজস্ব ফ্ল্যাটে থাকতেন। তার ব্যক্তিগত গাড়ির ড্রাইভার হুমায়ুন কবিরের সহায়তায় বাসা ভাড়া নেয়ার কথা বলে রাজুসহ বেশ কয়েকজন ২০১৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর বাসায় ঢোকেন। বাসায় ঢুকে তারা টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করার চেষ্টা করেন।
‘এ সময় বাধা দেয়ার চেষ্টা ও চিৎকার করতে থাকেন সাংবাদিক আফতাব। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তারা তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। ঘটনার পর দিন ২৫ ডিসেম্বর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।’
পুলিশ সুপার এম এম হাসানুল জাহিদ বলেন, ‘ওই ঘটনায় ২০১৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর রাপুরা থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গ্রেপ্তারের এক বছরের মাথায় রাজু মুন্সিসহ দুইজন জামিনে বের হয়ে আত্মগোপন চলে যান। পরে ২০১৭ সালে রাজুসহ পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে সাত বছর কারাদণ্ড দেয় আদালত।’
সাংবাদিক আফতাব আহমেদকে হত্যার মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচজন হলেন বিলাল হোসেন কিসলু, হাবিব হাওলাদার, রাজু মুন্সি, রাসেল ও গাড়িচালক হুমায়ুন কবির মোল্লা। আর সবুজ খানকে নামের আসামিকে সাত বছর কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়।