বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দইয়ের মেলা

  •    
  • ২৬ জানুয়ারি, ২০২৩ ১০:৩৭

সিরাজগঞ্জ শহর পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি হীরক গুন বলেন, ‘খাঁটি দুধের সম্ভারখ্যাত সিরাজগঞ্জবাসী প্রাচীন আমল হতেই রসনাবিলাসী আর অতিথিপরায়ণ। দই মেলাটি জেলার আদি ঐতিহ্যের অংশ। সরস্বতী পূজা উপলক্ষে এ মেলার আয়োজন করা হলেও এখানে হিন্দু মুসলিম সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আসেন।’

সিরাজগঞ্জে হচ্ছে দই মেলা। প্রতি বছর মাঘ মাসের শ্রী-পঞ্চমী তিথিতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত হতে দইয়ের পসরা সাজিয়ে মেলায় অংশ গ্রহণ করে বিক্রেতারা।

প্রায় ২২৫ বছর ধরে জেলার তাড়াশ উপজেলাসহ জেলা সদরের মুজিব সড়কে এ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

ঐতিহ্যবাহী সরস্বতী পূজা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দিনব্যাপী দইয়ের মেলা অনুষ্ঠিত হবে।

শহরের মুজিব সড়ক, তাড়াশের ঈদগাহ মাঠ, কামানখন্দে রেল ষ্টেশন মোড়ে, শাহজাদপুর দ্বারিয়াপুরে, উল্লাপাড়া ঘোষগাতীতে ঘোষদের দই আসার মধ্য দিয়ে মেলার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মেলাকে ঘিরে এলাকায় সাজসাজ রব পড়ে গেছে। সকালে শুরু হতে যাওয়া দিনব্যাপী ওই মেলায় দইয়ের পাশাপাশি মুড়ি, মুড়কি, চিড়া, মোয়া, বাতাসা, কদমা, খেজুর গুড়সহ বাহারি সব খাবার বেচাকেনা হবে।

সিরাজগঞ্জের তারাশ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি তপন কুমার গোস্বামী বলেন, ‘১৮০০ শতাব্দীর গোড়ার দিকে তৎকালীন জমিদারি আমলে জমিদার বনোয়ারী লাল রায় বাহাদুর সিরাজগঞ্জের তারাশ উপজেলায় প্রথম দই মেলার আয়োজনকে আনুষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিলেন। তবে, এর আগে থেকেই মাঘ মাসের শ্রী পঞ্চমী তিথিতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত হতে ঘোষরা দইয়ের পসরা সাজিয়ে মেলার আসতেন বলে জানা যায়।

‘জমিদার বনোয়ারী লাল রায় বাহাদুর এই মেলায় আসা ভালো দইওয়ালা ঘোষকে জমিদারের পক্ষ থেকে উপঢৌকন দেয়ার রেওয়াজ চালু করেন। তবে জমিদার আমল থেকে শুরু হওয়া দইয়ের মেলা এখনও মাঘ মাসের শ্রী পঞ্চমী তিথিতে উৎসবের আমেজে বসলেও ভালো ঘোষকে পুরস্কার দেয়ার নিয়মটি আর নেই।’

কালের বিবর্তনে তারাশের দই মেলা এখন সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। বুধবার বিকেল থেকেই শত বছরের ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় সিরাজগঞ্জের মুজিব সড়কে ও তাড়াশ উপজেলার রসিক রায় মন্দির সংলগ্ন ঈদগাহ মাঠে ঐতিহ্যবাহী এ মেলা শুরু হয়েছে।

এতে শহরের সকল ধর্মালম্বীর দইপ্রেমী মানুষ দই কেনার জন্য ভিড় জমিয়েছেন।

সিরাজগঞ্জ শহর পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি হীরক গুন বলেন, ‘খাঁটি দুধের সম্ভারখ্যাত সিরাজগঞ্জবাসী প্রাচীন আমল হতেই রসনাবিলাসী আর অতিথিপরায়ণ। দই মেলাটি জেলার আদি ঐতিহ্যের অংশ। সরস্বতী পূজা উপলক্ষে এ মেলার আয়োজন করা হলেও এখানে হিন্দু মুসলিম সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আসেন।’

দই মেলা এখন এ অঞ্চলের প্রাণের মেলায় রুপ নিয়েছে বলেও জানান তিনি।

সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর রনি মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক রাজিব ঘোষ বলেন, ‘একজন দই প্রস্তুতকারী হিসেবে প্রতি বছর আমি এ মেলার জন্য অপেক্ষা করি। কারণ এখানে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ আসে দই কিনতে। মেলায় দই বিক্রি করা শুধু লাভের জন্য নয় বরং ঐতিহ্যকে ধারণ করার জন্য এ মেলায় অংশ নিতে আসি।’

স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী বেলকুচি রাজাপুর, এনায়েতপুর, বেলকুচিসহ বগুড়ার শেরপুর এলাকার হরেক রকম দই এ মেলায় পাওয়া যায়। এবারই প্রথমবারের মতো মেলায় নানা রকম মাটির হাড়িসহ প্লাস্টিকের পাত্রেও দই এসেছে।

মেলায় বিভিন্ন স্বাদের দই ভিন্ন ভিন্ন দামে বেচাকেনা হয়। মেলায় আসা একেক অঞ্চলের দইয়ের স্বাদের কারণে নামেরও ভিন্নতা রয়েছে। মেলায় জনপ্রিয় দইয়ের মধ্যে রয়েছে ক্ষীর খাসা, চন্দনচুর, খাসা, শাহী দই, টক দই ইত্যাদি।

এ বিভাগের আরো খবর