সুনামগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ফটক বর্তমানে দখল করে নিয়েছে কোচিং সেন্টারের বিজ্ঞাপন পোস্টারে। সরকারি একটি বিদ্যালয়ের ফটকে এভাবে পোস্টার লাগিয়ে কোচিং সেন্টারের বিজ্ঞাপন দেয়াকে কর্তৃপক্ষের অবহেলার ফল বলে মনে করছেন অভিভাবক ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানের একমাত্র প্রবেশদ্বার যে ফটক রয়েছে সেটি ঘিরে ফেলা হয়েছে শহরে বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন পোস্টারে, তার মধ্যে অন্যতম ছিল ইউনিএইড কোচিং সেন্টারের বিজ্ঞাপন। বিদ্যালয়ে ফটক জুড়ে রয়েছে তাদের আকর্ষনীয় বিজ্ঞাপন। এ ছাড়া রয়েছে প্রাইম কোচিং সেন্টারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ওয়াজ মাহফিলের পোস্টার।
ছেলেকে বিদ্যালয় থেকে নিতে আসা ফরিদুল হক জানান, ১৩৬ বছরের ঐতিহ্যবাহী একটি বিদ্যালয় এই জুবিলী, তবে কর্তৃপক্ষের অবহেলায় কারণে এটির সৌন্দর্য্য হারাচ্ছে। বিদ্যালয়ের ফটকে এভাবে কোচিংয়ের বিজ্ঞাপন পোস্টার লাগানো যা আর কোনো বিদ্যালয়ে নেই, এগুলোর ব্যাপারে শক্ত ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ডা. সৈকত দাস জানান, একটি ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়ের গেইটে এভাবে কোচিং সেন্টারের পোস্টার লাগানো শুভনীয় নয়, প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের উচিত এগুলোকে ব্যবস্থা নেয়া। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোকে নোটিশ দেয়া যেন এভাবে কেউ পোস্টার না লাগাতে পারে।
আরেক প্রাক্তন শিক্ষার্থী জয় তালুকদার জানান, বিদ্যালয়ে মূল গেইটে এভাবে পোস্টার লাগানোটা ঠিক হয়নি, এসব কারণে বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য্য নষ্ট হয়, পোস্টার লাগানোর অনেক জায়গা আছে, এই জায়গাটি সংরক্ষিত করা হোক তাহলে এইসব কাজ কেউ করতে পারবে না।
বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে নিজের কোচিং সেন্টারের বিজ্ঞাপনী পোস্টার লাগানোর ব্যাপারে ইউনিএইড কোচিং সেন্টারের সুনামগঞ্জ শাখার পরিচালক সুয়েব আহমেদ বলেন, ‘এই কাজে আমাদের কোনো হাত নেই। আমরা পোস্টার লাগানোর জন্য যাদের টাকা দিয়েছি তারা এগুলো করেছে। তাদের শিক্ষাদীক্ষা কম থাকায় তারা বুঝে না কোথায় কী লাগাতে হয়।’
পোস্টার লাগানোর কাজ দেয়ার সময় প্রতিষ্ঠান থেকে কী কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল কী না এমন প্রশ্নে কোনো উত্তর না দিয়ে শ্রমিকদের উপর দায় চাপিয়ে দেন এই পরিচালক।
সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মনসুর রহমান খান বলেন, ‘আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখব, সরকারি এই বিদ্যালয়ের ফটকে যেন আর কেউ পোস্টার লাগাতে না পারে সেই ব্যবস্থা নেব।’