ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই বিচারককে বদলি ও নাজিরের শাস্তি দাবিতে দেয়া আল্টিমেটামের সময়সীমা ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছেন আইনজীবীরা। জেলা জজ শারমিন নিগার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ফারুককে বদলি ও নাজিরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আইনজীবীদের বেঁধে দেয়া সময়সীমা শেষে তারা এই ঘোষণা দিয়েছেন।
আল্টিমেটামের শেষ দিন মঙ্গলবার বিকেলে আইনজীবীদের এক সাধারণ সভায় দাবি আদায়ে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানভীর ভূঞা ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান দুই আদালতের বিষয়ে আল্টিমেটামের সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়টি ঘোষণা করেন। তারা জানান, ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত ওই দুই বিচারকের আদালতে আইনজীবীরা যাবেন না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা জজ শারমিন নিগার ও মোহাম্মদ ফারুককে বদলি এবং নাজিরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সাত দিন আদালতে কর্মবিরতি পালন করেন আইনজীবীরা। এতে অচল হয়ে পড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিচার ব্যবস্থা।
পরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠকে দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস পেয়ে আইনজীবীরা আদালতে ফিরে যান। তবে তারা জেলা জজ শারমীন নিগার ও নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের বদলি না হওয়া পর্যন্ত সেই আদালতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ২৪ জানুয়ারি ছিল দুই বিচারক বদলির আল্টিমেটামের শেষ দিন।
এদিন আইনজীবীদের সাধারণ সভায় আল্টিমেটামের সময়সীমা আরও ৬ দিন বাড়িয়ে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি তারা দুই বিচারকের আদালত প্রত্যাহার অব্যাহত রেখেছেন।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, ‘দুই বিচারককে বদলিসহ নাজিরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি এখনও পূরণ হয়নি। এজন্য সাধারণ সভায় আমাদের আদালত প্রত্যাহারের সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
‘বিষয়টি নিয়ে প্রতিদিন আইনজীবীদের সাধারণ সভা করা সম্ভব নয়। তাই এ বিষয়ে সার্বিক সিদ্ধান্ত নিতে বর্তমান সভাপতি তানভীর ভূঞাকে প্রধান করে ২১ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। পরবর্তী করণীয় বিষয়ে তারা যে সিদ্ধান্ত নেবেন তা সবাই মেনে নেবেন।’
উল্লেখ্য, শীতকালীন ছুটির আগে ১ ডিসেম্বর আদালতের শেষ কার্যদিবস ছিল। ওইদিন তিনটি মামলা না নেয়ায় ১ জানুয়ারি বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জন করেন আইনজীবীরা। এরপর ২ জানুয়ারি বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের সঙ্গে আইনজীবীদের বাদানুবাদের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ৫ জানুয়ারি আইনজীবীরা তিন কার্যদিবসের কর্মবিরতির ডাক দেন। ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ছয় কার্যদিবস কর্মবিরতি পালন করেন তারা। এর আগে ৪ জানুয়ারি এক দিনের কর্মবিরতি পালন করে জেলা বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন।