করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উদ্ভূত সংকট কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তার জন্য বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গের সঙ্গে সোমবার সকালে নিজ কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় প্রধানমন্ত্রীর এসব কথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য লেখক মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
বৈঠকে বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাস মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিদ্যমান সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা করুন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৫০ মার্কিন ডলার, কিন্তু তা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নত দেশগুলো মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের জন্য দায়ী,কিন্তু উন্নত দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি যথাযথভাবে পালন করছে না। তাই জলবায়ু তহবিলে অর্থ প্রদানে তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণের আহ্বান জানান তিনি।’সরকারপ্রধান বলেন, ‘রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকার কারণে বিগত ১৪ বছরে বাংলাদেশে দ্রুত উন্নয়ন হয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন অনুযায়ী, দেশবাসীকে একটি সুন্দর ও উন্নত জীবন দিতে অক্লান্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেল, খাদ্যসামগ্রী, পরিবহন ব্যয় আকাশচুম্বী হওয়ায় উন্নয়নশীল দেশগুলো সমস্যায় পড়েছে।’
এদিকে বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাংলাদেশের উন্নয়নকে ‘অবিশ্বাস্য’ হিসেবে হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর উচিত নতুন প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।’
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী, প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তিন দিনের সরকারি সফরে গত শনিবার প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এসেছেন।