এজলাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ শারমিন নিগারের নামে ‘কুরুচিপূর্ণ’ স্লোগান ও বিচার বিঘ্নিত করার অভিযোগে হাইকোর্টে হাজির হওয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সম্পাদকসহ ২১ আইনজীবীকে শব্দ ব্যবহারে সতর্ক হতে বলেছে উচ্চ আদালত।
বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার আইনজীবীদের উদ্দেশে বলে, ‘বিজ্ঞ আইনজীবীদের ভাষা এমন হওয়া উচিত না। আপনাদের ভাষা কুলিদের ভাষার থেকেও খারাপ।’
গত ১০ জানুয়ারি আইনজীবীদের তলব করে আদালত অবমাননার রুল জারি করে হাইকোর্ট, যার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার হাইকোর্টে আসেন ২১ আইনজীবী। তাদের পক্ষে সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী হাজিরার জন্য ১৯ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করে উচ্চ আদালত।
২১ আইনজীবী হলেন মিনহাজুল ইসলাম, এমদাদুল হক হাদি, নিজামুদ্দিন খান রানা, আনিছুর রহমান মঞ্জু, জুম্মন চৌধুরী, রাশেদ মিয়া হাজারী, জাহের আলী, আবদুল আজিজ খান, দেওয়ান ইফতেখার রেজা রাসেল, ছদর উদ্দিন, মাহমুদুর রহমান রনি, মাহবুবুর রহমান, আরিফুল হক মাসুদ, মীর মোহাম্মদ রাইসুল আহম্মেদ, মহিবুর রহমান, জাকারিয়া আহমেদ, মোবারক উল্লা, ফারুক আহমেদ ও সফিক আহমেদ।
গত ২ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে ‘এজলাসে আদালতের বিচারক ও কর্মচারীদের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও অশালীন আচরণের জন্য আদালত অবমাননার ব্যবস্থা গ্রহণের প্রার্থনা’ শীর্ষক একটি চিঠি পাঠান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-১ বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুক।
এ চিঠি প্রধান বিচারপতির কাছে উপস্থাপন করেন রেজিস্ট্রার জেনারেল। পরে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে উপস্থাপনের নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি।
সে অনুযায়ী এই বেঞ্চে নথি উপস্থাপন করা হয়। এরপর ৫ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারি করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানভীর ভূঁইয়া, সম্পাদক (প্রশাসন) আক্কাস আলী এবং আরেক আইনজীবী জুবায়ের ইসলামকে তলব করেন।
একই দিন (৫ জানুয়ারি) ও ৮ জানুয়ারি এজলাস চলাকালে কয়েকজন আইনজীবী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা জজ শারমিন নিগারের নামে ‘কুরুচিপূর্ণ’ স্লোগান দেন। এতে বিচারকাজ বিঘ্নিত হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিকার চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে ৯ জানুয়ারি চিঠি পাঠান জেলা জজ।
এরপর বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে উপস্থাপন করেন রেজিস্ট্রার জেনারেল। প্রধান বিচারপতি বিষয়টি বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠানোর নির্দেশ দেন।