রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভারে গাড়ি থামিয়ে ছিনতাই চেষ্টার অভিযোগে র্যাব সদস্য পরিচয় দেয়া এক ব্যক্তিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার সন্ধ্যায় তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আজম মিয়া।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন মো. মুমিনুল, তার গাড়িচালক ও একজন আত্মীয়।
ওসি নূরে আজম বলেন, ‘র্যাব সদস্য পরিচয়ে শুক্রবার রাতে মহাখালী ফ্লাইওভার থেকে দুই ব্যক্তিকে অপহরণের চেষ্টায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার বাদী শহিদুল ইসলাম এ ঘটনায় একজন ভুক্তভোগী।
‘গ্রেপ্তার তিনজনের মধ্যে মুমিনুল নিজেকে র্যাব সদস্য পরিচয় দিয়েছেন। বাকি দুজনের মধ্যে একজন গাড়িচালক ও অপরজন মুমিনুলের আত্মীয়। তাদেরকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন জানিয়ে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।’
মধ্যরাতে ওই ঘটনার সময় একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের গাড়ি মহাখালী ফ্লাইওভার দিয়ে যাচ্ছিল। ওই গাড়ির আরোহী সংবাদকর্মীরা ঘটনার দৃশ্য ধারণ করেন।
ওই টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, রাত সোয়া ২টার দিকে তাদের গাড়িটি মহাখালী ফ্লাইওভার দিয়ে যাওয়ার সময় সেটিকে থামতে বলেন জড়ো হওয়া লোকজন। সেখানেই দেখা মেলে হ্যান্ডকাফ পরিহিত দুই ব্যক্তির। তাদের একজনের নাম শহীদুল ইসলাম ও অন্যজনের নাম রিয়াজ। সম্পর্কে তারা মামা-ভাগ্নে।
ওই দুজনের অভিযোগ, বিমানবন্দর এলাকা থেকে গাড়ি ভাড়া করে যাচ্ছিলেন তারা। ফ্লাইওভারে উঠতেই তাদের গাড়ির গতিরোধ করে পেছন থেকে আসা আরেকটি গাড়ি। আরোহী চার ব্যক্তি র্যাব পরিচয়ে অস্ত্র দেখিয়ে তুলে নিয়ে যেতে চেয়েছিল তাদের। এক পর্যায়ে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে তাদেরকে মারধর করে। সন্দেহ হওয়ায় চিৎকার শুরু করেন ভুক্তভোগীরা।
ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসায় যুক্ত শহীদুল ওই সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘ওরা আমাদের গাড়ি থামিয়ে জানালা দিয়ে পিস্তল ধরে। গাড়ি থেকে বের হওয়ার পর বলে- আমরা সোনা চোরাচালানকারি। আমরা বলি, আমাদের চেক করে দেখেন। তখন তারা আমাদের মারধর শুরু করে। বলে, গুলি করে মেরে ফেলব। তারপর হ্যান্ডকাফ পরিয়ে দেয়। এ সময় আমরা চিৎকার শুরু করি।’
তাদের চিৎকার শুনে এক ব্যক্তি গাড়ি থামিয়ে পরিস্থিতি দেখে ৯৯৯ নম্বরে কল করেন। আর তখন সে পথ দিয়ে মোটরসাইকেলে বাসায় ফিরছিলেন এক পুলিশ সদস্য। হট্টগোল দেখে তিনি এগিয়ে আসেন ভুক্তভোগীদের সহায়তায়।
সাকিব নামের ওই পুলিশ সদস্য বলেন, ‘র্যাবের কটি পরা তিনজন দুই ব্যক্তিকে ধরে মারধর করছিলেন। দুই ব্যক্তি বাঁচানোর আকুতি জানাচ্ছিলেন। পুলিশ দেখে তিনজনের একজন গাড়ির পেছনে পিস্তল রেখে রাস্তা পার হয়ে চলে যান, আরেকজন দৌড়ে পালিয়ে যান।’