লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বিয়ের পাঁচ মাসের মাথায় শ্বশুরবাড়ির সুপারি গাছ থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের দাবি, তাকে পরিকল্পিতভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তার স্ত্রী ও শ্বাশুড়িকে আটক করেছে পুলিশ।
উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরবংশী গ্রামের মাইচ্ছাখালি ব্রিজ এলাকার শ্বশুরবাড়ির পাশের সুপারি বাগান থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত হারুনুর রশিদ হারুন সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের নবীগঞ্জ বাজার এলাকার বাসিন্দা। তিনি পেশায় মাংস ব্যবসায়ী।
হাজিমারা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (ইনচার্জ) মফিজ উদ্দিন নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানান।
নিহতের পরিবারের বরাতে তিনি জানান, প্রায় পাঁচ মাস আগে পাশ্ববর্তী ইউনিয়নের চরবংশী গ্রামের বৈশাখীর সঙ্গে হারুনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। এর কিছুদিন পরই জানা যায় বৈশাখীর অন্য ছেলের সঙ্গে প্রেম রয়েছে। বৈশাখী নিয়মিত ওই ছেলের সঙ্গে কথা বলতো। এ নিয়ে হারুন ও বৈশাখীর মধ্যে প্রায়ই কথা কাটাকাটি হতো। এসব কারণে কয়েকদিন আগে বৈশাখী তার বাবার বাড়িতে চলে যায়। রাতে হারুনকে বৈশাখীর বোনের জামাই শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে মরদেহ সুপারি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে, পরে আত্মহত্যার প্রচার চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নিহত হারুনুর মা কহিনুর বেগম বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে হারুনের স্ত্রী বৈশাখী তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করত। বৈশাখী ঠিকমতো সংসার করত না, অন্য ছেলের সঙ্গে তার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে তাদের সংসারে অশান্তি লেগেই ছিল। সোমবার রাতে হারুন তার শ্বশুরবাড়িতে ছোট শালিকা প্রিয়ার জন্মদিনের দাওয়াত খেতে যায়। সেখানে তার ভায়রা জুয়েলসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে হারুনের ঝগড়া হয়।
‘এরপর তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে মরদেহ গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে তারা। প্রেমের সম্পর্কে বাধা দেয়ায় হারুনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’
হাজিমারা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (ইনচার্জ) মফিজ উদ্দিন বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতের কপালে জখম রয়েছে। দুপুরে মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
‘এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হারুনের শ্বাশুড়ি খুকি বেগম ও স্ত্রী বৈশাখী বেগমকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে হারুনের শ্বশুর মনছুর আহমেদ ও ভায়রাভাই জুয়েল পলাতক রয়েছে।’
নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।