বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের এখনও উল্লেখযোগ্য সমর্থন আছে বলে মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক শীর্ষস্থানীয় নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনিশিয়েটিভের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান।
যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ম্যাগাজিনটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক প্রবীণ সাংবাদিক মার্ক লিওন গোল্ডবার্গ। সাক্ষাৎকারটি ফরেন পলিসির পডকাস্টে বুধবার প্রকাশিত হয়েছে।
সাক্ষাৎকারে কুগেলম্যান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার তার মেয়াদের শুরুর দিকে স্বাস্থ্য অবকাঠামোতে যে বিনিয়োগ করেছে তা স্পষ্টত কাজে লেগেছে। সব তথ্য-উপাত্তই বলবে, স্বাস্থ্য সুবিধা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য বাংলাদেশের অগ্রগতি হয়েছে। দারিদ্র্যের হার কমেছে, তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গণতান্ত্রিক দিক বিবেচনায় দেশটি পেছনে গেছে।’
সাংবাদিক মার্ক লিওন গোল্ডবার্গ গণতান্ত্রিকভাবে বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়ার উদাহরণ ও কারণ জানতে চান। জবাবে বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, ‘ধারাবাহিকভাবে বিষয়টি দেখলে বুঝতে সহজ হবে। এটি মনে রাখা উচিত যে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে বর্তমানে বিরোধী দল বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন একই ধরনের কৌশল নিয়েছিল। তখনও দমন-পীড়ন, গুম ছিল।’
কুগেলম্যান বলেন, ‘আজ যা যা ঘটছে তার অনেক কিছুই বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময়ও ঘটেছে। আমি মনে করি, এটি স্মরণ রাখা গুরুত্বপূর্ণ।’
দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির সমালোচনা করে আমেরিকান এ বিশ্লেষক বলেন, ‘‘বাংলাদেশের মতো অনেক দেশের শাসনব্যবস্থাকে ‘হাইব্রিড গণতন্ত্র’ বলা হয়, কিন্তু এই দেশগুলোতে অনেক পর্যায়ে গণতন্ত্র আছে। ওই দেশগুলোতেও নির্বাচন হয়। নির্বাচিত সরকার অগণতান্ত্রিকভাবে বিরোধীদের দমন করে। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ বিশ্বের অনেক দেশেই এমন হচ্ছে।’’
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে কুগেলম্যান বলেন, ‘আমি এমনটা মনে করেন না। বাংলাদেশের অর্থনীতি কোনোভাবেই শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতির কাছাকাছিও নেই।’
বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে জানতে চাইলে উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনিশিয়েটিভের পরিচালক বলেন, ‘আশা করছি সংবিধান অনুযায়ী দেশটিতে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’