বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

র‍্যাবের বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে: লু

  •    
  • ১৫ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৬:৩৯

ডোনাল্ড লু বলেন, ‘আপনারা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতি লক্ষ করলে দেখবেন, বিচারবহির্ভূত হত্যার সংখ্যা কমানোর ক্ষেত্রে র‍্যাবের অসাধারণ অগ্রগতির কথা স্বীকার করা হয়েছে। আমরাও এই অগ্রগতির বিষয়টি স্বীকার করি। এটি একটি অসাধারণ কাজ।’

র‍্যাবের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রোববার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।এক প্রশ্নের উত্তরে ডোনাল্ড লু বলেন, ‘আপনারা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিবৃতি লক্ষ করলে দেখবেন, বিচারবহির্ভূত হত্যার সংখ্যা কমানোর ক্ষেত্রে র‍্যাবের অসাধারণ অগ্রগতির কথা স্বীকার করা হয়েছে। আমরাও এই অগ্রগতির বিষয়টি স্বীকার করি। এটি একটি অসাধারণ কাজ। এতে প্রমাণিত হয়, মানবাধিকার সমুন্নত রেখে র‍্যাব আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও সন্ত্রাসবাদ দমনে ভালো কাজ করছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। আমরা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কোনো বিষয়ে সমস্যা থাকলে আমরা আলোচনা করি, পরামর্শ দিতে পারি। আমরা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখায় বিশ্বাস করি। বাংলাদেশের মতো অংশীদারদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করি।’

ডোনাল্ড লু বলেন, ‘আমি এখানে এসেছি দুই দেশের বন্ধুত্বকে শক্তিশালী করতে, যখন বর্তমান বিশ্বশান্তি ও ন্যায়বিচারের জন্য সংগ্রাম করে চলছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শ্রমিক অধিকারের বিষয়ে যে আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে আমরা গর্ব বোধ করি। শ্রম অধিকারের বিষয়টি আমরা কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি, শ্রম অধিকারের মান উন্নয়নের বিষয়ে কীভাবে কাজ করতে পারি, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে একে অপরকে সহযোগিতা করার বিষয়ে আমার আত্মবিশ্বাস রয়েছে।’

ডোনাল্ড লু বলেন, ইন্দো–প্যাসিফিক কৌশল (আইপিএস) নিয়ে চমৎকার আলোচনা হয়েছে। এটি কোনো ক্লাব নয়, বরং একটি কৌশল।

এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমাদের মধ্যে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। কীভাবে সামনের ৫০ বছর সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি, সেটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের মধ্যে যদি কোনো কিছু নিয়ে সমস্যা থাকে, তবে আমরা আলোচনা করব। যদি গঠনমূলক পরামর্শ আসে, আমরা অবশ্যই তা গ্রহণ করব। এর নমুনা আমরা দেখিয়েছি। আমাদের যদি কোনো দুর্বলতা থাকে, তা আমরা দূর করব।’

মোমেন বলেন, ‘আমরাও অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। আমার দল আওয়ামী লীগ সব সময় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় এসেছে। ব্যালটের মাধ্যমে এসেছে, বুলেটের মাধ্যমে নয়। আমাদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে।’

পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘আমাদের মধ্যে বেশ কয়েকটি বৈঠক হয়েছে। আমি নিজে খোলামেলা আলোচনা করেছি। বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শ্রমপরিস্থিতি, নিষেধাজ্ঞা, মানবাধিকার, গণতন্ত্র, উন্নয়ন, সহযোগিতা, ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে।’

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘গত বছর মতো এবারও আমাদের মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে। আমরা একটি সময়সূচি ধরে চলমান মেকানিজমের মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জনের জন্য সম্পর্ককে পরের ধাপে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করব। আমাদের যে সম্পদ ও প্রক্রিয়া আছে, সেগুলো ব্যবহার করে সম্পর্ককে পরের ধাপে উন্নতি করব।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক

এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকে ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট নানা বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

বৈঠকে উভয় পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ, উন্নয়ন সহায়তা, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল, শ্রম, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারসহ দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

বাংলাদেশে অবস্থানরত দশ লক্ষাধিক জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের জন্য মানবিক সহায়তা, তাদের প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসনের বিষয়গুলো আলোচনায় উঠে আসে। এ সময় লু রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

এছাড়াও বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ করে র‍্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) কার্যক্রমের ইতিবাচক পরিবর্তনের বিষয়ে সাধুবাদ জানান তিনি।

উভয় পক্ষ দুই দেশের বর্তমান সুসম্পর্কের বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং এ ধারা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও পারস্পরিক সহযোগিতা সম্প্রসারণে নতুন পথ খোঁজার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে অভুতপূর্ব সাফল্য অর্জনের জন্য লু বাংলাদেশের প্রশংসা করেন।

১০ কোটিরও বেশি কোভিড ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানানো হয়। ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো অতিমারির ক্ষেত্রেও একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারেও যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহ প্রকাশ করে।

উভয় পক্ষ পারস্পরিক অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশীদারত্ব বজায় রেখে অন্যান্য খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হয়।

বাংলাদেশে ব্যাপক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করে লু বলেন, বাংলাদেশের সব ইতিবাচক প্রচেষ্টার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের অব্যাহত সমর্থন ও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

সফররত যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক তার সম্মানে পররাষ্ট্র সচিব আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে অংশগ্রহণ করেন। সেখানে শিক্ষক, গবেষক, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ডোনাল্ড লু এছাড়াও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমানের সঙ্গে পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ও স্টাফ অফিসার উইলিয়াম শিবার বৈঠকগুলোতে উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সচিব (মেরিটাইম বিষয়ক) রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মাদ ইমরান, সচিব (পশ্চিম) শাব্বির আহমেদ চৌধুরী, মহাপরিচালকগণ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

এ বিভাগের আরো খবর