বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আড়াই বছরেও চালু হয়নি রংপুর শিশু হাসপাতাল

  •    
  • ১৫ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৩:১৫

রংপুর সিভিল সার্জন ড. শামীম আহমেদ বলেন,‘চিঠি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে পাঠানো হয়েছে, অনুমোদন হলে হাসপাতালটি চালু করা সম্ভব হবে। তবে কবে নাগাদ এই হাসপাতাল চালু হবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।’ 

কাজ শেষে ভবন বুঝে নেয়ার প্রায় আড়াই বছর হলেও ঝুলে আছে ১০০ শয্যার রংপুর শিশু হাসপাতালের কার্যক্রম । কী কারণে বিশেষায়িত এই হাসপাতালটি চালু হচ্ছে না তা অস্পষ্ট। এ নিয়ে নগরবাসীর ক্ষোভ বাড়ছে। তবে সিভিল সার্জনের দাবি, হাসপাতালটি চালুর জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে।

রংপুরের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানায়, রংপুরের তৎকালীন সদর হাসপাতালের ১ দশমিক ৭৮ একর জমির মধ্যে শিশু হাসপাতাল নির্মাণের কার্যাদেশ দেয়া হয় ২০১৭ সালের ২১ নভেম্বর। ৩১ কোটি ৪৮ লাখ ৯২ হাজার ৮০৯ টাকা মূল্যের সেই কাজটি করেছেন ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মল্লিক এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স অণিক ট্রেডিং করপোরেশন।

ভবন নির্মাণের জন্য দুই বছরের সময়সীমা বেধে দেয়া হলেও নির্ধারিত সময়ের আড়াই মাস আগে কাজ শেষ করে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২০ সালের ৮ মার্চ এই হাসপাতাল ভবনটি আনুষ্ঠানিকভাবে জেলা সিভিল সার্জনকে হস্তান্তর করা হয়।

হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা জানান, হাসপাতালটি হয়েছে তিন তলার। মূল ভবনের ১ম তলায় থাকবে ইমার্জেন্সি, আউটডোর, চিকিৎসকদের চেম্বার এবং ল্যাব। দ্বিতীয় তলায় অপারেশন থিয়েটার, বার্ন ইউনিট এবং ৩য় তলায় ওয়ার্ড এবং কেবিন থাকবে।

প্রতি তলার আয়তন ২০ হাজার ৮৮২ দশমিক ৯৭ বর্গফুট। এ ছাড়া নির্মাণ করা হয়েছে চার তলা ভিত্তির তিন তলা সুপারিনটেনডেন্ট কোয়ার্টার। সিঁড়ি বাদে প্রতি তলার আয়তন দেড় হাজার বর্গফুট। ছয় তলা ডক্টরস কোয়ার্টারের নিচতলায় গাড়ি পার্কিং, দ্বিতীয় তলা থেকে ডাবল ইউনিট। আছে ছয় তলা বিশিষ্ট স্টাফ অ্যান্ড নার্স কোয়ার্টার। দুই তলা বিশিষ্ট গ্যারেজ কাম ড্রাইভার কোয়ার্টার। নিচে দুটি গাড়ি রাখার ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে। বিদ্যুৎ সাবস্টেশন স্থাপনের জন্যও নির্মাণ করা হয়েছে একটি ভবন।

রংপুর মহানগর নাগরিক কমিটির সদস্য এ্যাডভোকেট পলাশ কান্তি নাগ বলেন, ‘দীর্ঘ আড়াই বছর আগে নির্মাণ কাজ শেষ হলেও এর কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় গরীব সাধারণ মানুষ সরকারি চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হচ্ছে।

‘অন্যদিকে বেসরকারি ক্লিনিক, হসপিটাল ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা ব্যয় সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। এমনকি চিকিৎসাসেবার মান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। সে ক্ষেত্রে এই শিশু হাসপাতালটি চালু হলে অল্প ব্যয়ে সাধারণ মানুষ উন্নত চিকিৎসা সেবা পাবে। আমরা কোনো অজুহাত দেখতে চাই না, দ্রুত হাসপাতালের কার্যক্রম চালু চাই।’

জনতার রংপুর এর আহবায়ক ড. সৈয়দ মামুনুর রহমান বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি এই হাসপাতালের কার্যক্রম সব কমপ্লিট, এখন শুধু পোস্টিং পর্যায়ে ম্যান পাওয়ার আর অবকাঠামোগত সুবিধা দরকার। সব মানুষের দাবি থাকা সত্ত্বেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় এটি হচ্ছে না। এই অবস্থায় জনপ্রতিনিধিদের সক্রিয় ভুমিকা প্রয়োজন।’

রংপুরের কামালকাচনা এলাকার বাসিন্দা আজহার আলী বলেন, ‘রংপুরে একটি পূর্ণাঙ্গ শিশু হাসপাতাল নির্মাণের জন্য অনেক আন্দোলন হয়েছে। বর্তমান সরকার আমাদের সেই দাবি পূরণ করে সদর হাসপাতালের জমিতে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট শিশু হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করেছেন । কিন্তু ভবন হল, হাসপাতাল চালু হচ্ছে না। কেন হচ্ছে না তা সংশ্লিষ্টরাই বলতে পারবেন, আমরা এতটুকু বলতে চাই যেকোনো উপায়ে এটি চালু করা হোক।’

নগরীর পূর্ব কামালকাচনা আরসিসিআই এলাকার বাসিন্দা ফেরদৌস আলী বলেন, ‘বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে শিশুদের চিকিৎসার যে খরচ তার অর্ধেকে আমরা এখানে চিকিৎসা পেতাম। তখন ক্লিনিকে ক্লিনিকে যাওয়ার দরকার পড়তো না। আমাদের খরচ অনেক কম হত।’

সুজন রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, ‘প্রশাসনিক কী জটিলতা আছে আমরা সেটা জানি না। কিন্তু সরকার এই হাসপাতাল যে উদ্দেশে তৈরি করল তার সুফল ভোগ করতে পারছেন না রংপুরবাসী।

‘অন্যদিকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে জায়গা সংকুলান হচ্ছে না। মানুষজন চিকিৎসা নিতে পারছেন না। এই অবস্থা আমরা জোর দাবি করছি, যত দ্রুত সম্ভব এই শিশু হাসপাতালটি চালু করতে হবে।’

রংপুর সিভিল সার্জন ড. শামীম আহমেদ বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা একটি চিঠি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় সেটি পেয়েছে বলে আমি জানি। আমরা খোঁজখবর রাখছি, চিঠিটি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে পাঠানো হয়েছে, অনুমোদন হলে হাসপাতালটি চালু করা সম্ভব হবে। তবে কবে নাগাদ এই হাসপাতাল চালু হবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।’

এ বিভাগের আরো খবর