দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিরাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ সভাপতির সভাপতিত্বে শনিবার দলের নবনির্বাচিত জাতীয় কমিটি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের যৌথ সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা নিজেরাই দুর্নীতিগ্রস্ত, তারাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলছেন। দুর্নীতি নিয়ে যে কথা বলে, আমি তো পার্লামেন্টে বলেছি, কোথায় দুর্নীতি হচ্ছে আমাকে তথ্য দেন, আমি ব্যবস্থা নেব।
‘(দুর্নীতির কথা) শুধু মুখে মুখে বললে তো হবে না। এখন এমন এমন লোকজনের কাছ থেকে আমাকে শুনতে হচ্ছে, যারা নিজেরাই দুর্নীতিগ্রস্ত। যাদের আমলে দুর্নীতিতে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অথবা কেউ বলতে গেলে ওই ক্ষুদ্রঋণের ব্যবসা করতে যেয়ে গরিব মানুষের ওপর এমন চাপ যে সুদ দিতে দিতে তাদের অনেক সময় বাড়িঘর ছেড়ে এলাকা থেকে চলে যেতে হয়েছে অথবা আত্মহত্যা করতে হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই গরিব মানুষের টাকা দিয়েই কিন্তু দেশে নামটাম করে কিন্তু বেশ ভালোই আছে এবং প্রচুর অর্থ সম্পদের মালিক। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগও করে ফেলেছেন। এই টাকাগুলো কোথা থেকে? এগুলো গরিবের রক্তচোষা টাকা তো। এটা তো বাস্তব কথা।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘১৪ বছরে সরকার যে কাজ করেছে তাতে দেশের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। করোনার পরে বিশ্বমন্দার মাঝে মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করতে সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর কথা চিন্তা করতে হবে। মন্দার কারণে সরকার অনেক হিসাব-নিকাশ করে চলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৪ বছরে দেশের যে উন্নতি হয়েছে তা অনেকেই স্বীকার করতে চায় না। আওয়ামী লীগ যে ওয়াদা করে তা রাখে। প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাজ করা হচ্ছে বলেই জনগণ তার সুফল পাচ্ছে।’
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ বলেও সভায় মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
বিগত সময়ে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নকাজের কথা তুলে ধরে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা যা যা চেয়েছিলেন আমরা সেগুলো কিন্তু একে একে করে দিচ্ছি মানুষকে। তার যে স্বপ্নটা সেটাই বাস্তবায়ন করা আমাদের লক্ষ্য। এত কাজ করার পরেও কিছু লোক আছে, তাদের কোনো কিছু ভালো লাগে না।’
দেশে বেকার থাকার সুযোগ নেই মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা কিন্তু আমাদের দেশের এক একটা সেক্টরকে ধরে ধরে আমাদের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার ফলে আজকে আমরা দারিদ্র্য কমাতে পেরেছি; কর্মসংস্থান ব্যাপকভাবে বাড়াতে পেরেছি।
‘এখন তো ওই রকম কেউ ইচ্ছে করলে বেকার থাকতে পারে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বেকার থাকার কোনো সুযোগ নেই। কারণ আমরা এত সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছি। ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে অনেক ছেলেমেয়ে কিন্তু এখন গ্রামে বসে টাকা উপার্জন করছে। কাজে এভাবে যত সুযোগ আছে আমরা করে দিয়েছি।’
আওয়ামী লীগ ওয়াদা রক্ষা করে মন্তব্য করে দলটির সভাপতি বলেন, ‘আমরা কথা দিয়েছি…প্রতি বাজেটে নির্বাচনের ইশতেহার সামনে রেখে আমরা পরিকল্পনা নিই। পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা যখন করি সেখানেও আমাদের ঘোষণাপত্র, আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার মাথায় রেখে, সামনে রেখেই আমরা কিন্তু করি। অর্থাৎ যে ওয়াদা জাতিকে দিই, সেটা আমরা রক্ষা করি।
‘আওয়ামী লীগ যেটা বলে মানুষের জন্য যে ওয়াদা করে, সে ওয়াদা আওয়ামী লীগ রক্ষা করে। এটা হলো বাস্তবতা। সারকথা হলো আওয়ামী লীগ যে কথা দেয় আওয়ামী লীগ সে কথা রাখে এবং জাতির কল্যাণে আমরা কাজ করি এবং মানুষ তার শুভ ফল পাচ্ছে।’