‘কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণের সুবাদে চীনের সাংহাই শহরে রূপ নেবে চট্টগ্রাম। এই বন্দর নগরী হবে ওয়ান সিটি টু টাউন।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেছেন।
শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন তিনি।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘চট্টগ্রাম বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। দেশের জাতীয় অর্থনীতির সমৃদ্ধির স্বার্থে চট্টগ্রাম অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এখানে কর্ণফুলীর তলদেশে নির্মিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু টানেল, যা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম।
টানেলটি নির্মাণ কাজের ৯৫ দশমিক ৫০ শতাংশ কাজই শেষ। ২৪ ফেব্রুয়ারি টানেলটি উদ্বোধন হওয়ার কথা রয়েছে। এক সময় কেউ ভাবেনি বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণের মাধ্যমে চট্টগ্রাম সাংহাই শহরে রূপ নেবে। আমি আশাবাদী চট্টগ্রাম আরও অনেকদূর এগিয়ে যাবে।’
বিশ্ব পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশের রিজার্ভ পরিস্থিতি এখনও ভালো অবস্থানে রয়েছে বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘আমরা চ্যালেঞ্জিং সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। একদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, অন্যদিকে ইউরোপ ও আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞা। আইএমএফ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এর ফলে বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ দেশ মহামন্দার দিকে দ্রুত ধাবিত হচ্ছে। ইউরোপের মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় গত ৪০ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে।
‘আমাদের প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ তলানিতে। পাকিস্তানের রিজার্ভও সংকটাপন্ন অবস্থায় আছে। আমাদের দেশেও জ্বালানি তেলসহ সব জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। তারপরও প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে বিশ্ব পরিস্থিতি বিবেচনা করলে বাংলাদেশের রিজার্ভের অবস্থা এখনও ভালো আছে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জাতির পিতার ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের দুটি অংশ। একটি অংশ স্বাধীনতা আরেকটি হলো অর্থনৈতিক মুক্তি। দেশের মানুষকে অর্থনৈতিক মুক্তি দেয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন বঙ্গবন্ধু-কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
‘অর্থনৈতিক মুক্তির বড় স্থাপনা পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে যখন বিশ্বব্যাংক মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল তখন পদ্মা সেতুর স্বপ্ন ছিল হতাশায় ঘেরা। ঠিক তখনই বঙ্গবন্ধুর সাহসী কন্যা সংসদে দাঁড়িয়ে দেশের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। সেই পদ্মা সেতু আজ স্বপ্ন নয়, দৃশ্যমান বাস্তবতা।’
আশাবাদ ব্যক্ত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো উন্নয়শীল দেশের রিজার্ভ এখন ৩৪ বিলিয়ন ডলার। এখনও দেশে ৫ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর রিজার্ভ আছে। দেশের অর্থনীতির চলমান ধারার মধ্যে একটি বলিষ্ঠ আভাস আছে। আগামীতে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ও জিডিপি আরও বাড়বে।’
মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আজম নাছির উদ্দীন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দসহ উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।