পৌষের হাড় কাঁপানো শীতে কাঁপছে চুয়াডাঙ্গা। চলমান মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে জবুথবু হয়ে পড়েছে সেখানকার জনজীবন।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় এ জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এটি চলতি মৌসুমের এ জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।’
ভোর থেকে বৃষ্টির মতো ঝরছে ঘন কুয়াশা। এতে ঢাকা থাকছে চারপাশ। সূর্যের দেখা মেলেনি চুয়াডাঙ্গার আকাশে।
হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। শীতে কষ্টে আছেন খেটে খাওয়া ছিন্নমূল মানুষ। সময়মতো কাজে যেতে পারছেন না তারা। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা যায় শ্রমজীবী মানুষকে।
চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় আগুন পোহাচ্ছিলেন দিনমজুর ছলিম মিয়া। তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন থেকি অনেক ঠান্ডা পড়চি। যতদিন যাচ্চি তত ঠান্ডা পড়চি। সকালে আমরা কাজে বেরুতি পারচিনি। হাত-পা ঠান্ডা হয়ি যাচ্চি। তাই আগুন তাপাতি হচ্চি।’
চলমান শৈত্যপ্রবাহে থমকে গেছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। শীতে সকাল সকাল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। লেনদেন কমেছে ব্যাংকে।
চুয়াডাঙ্গা সমবায় নিউ মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘দুপুর ১২টার আগে দোকানে কোনো ক্রেতা আসছেন না। অন্যবার শীত মৌসুমে কাপড় ব্যবসা ভালো হয়, এবার তেমন সাড়া পাচ্ছি না। বেচাকেনা নেই বললেই চলে।’
চলমান শৈত্যপ্রবাহ প্রভাব ফেলেছে ব্যাংক খাতেও। ব্যাংকগুলোতে অস্বাভাবিকভাবে কমেছে লেনদেন।
সোনালী ব্যাংক লিমিটেড চুয়াডাঙ্গা শাখার প্রধান সহকারী মহাব্যবস্থাপক বশির আহম্মেদ বলেন, ‘শীতে ব্যাংকে লেনদেন অনেকটা কমে গেছে। সকালের দিকে ব্যাংক প্রায় ফাঁকাই থাকছে, তবে দুপুরের দিকে বেতন-ভাতার টাকা উত্তোলনসহ সরকারের বিভিন্ন খাতে লেনদেনকারীরা আসছেন।’
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান বলেন, ‘চলতি জানুয়ারি মাসে ৪ দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গত ডিসেম্বর মাসে চার দিন ও নভেম্বর মাসে এক দিন এ জেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
‘অর্থাৎ, চলতি মৌসুমে ৯ দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায়। এ মৌসুমে তাপমাত্রা আরও কমে গিয়ে মাঝারি থেকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিতে পারে।’