রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় পাঁচ যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একইসঙ্গে অপহৃত ওই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকে উদ্ধার করা হয়েছে।
রাজশাহী মহানগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার হড়গ্রাম কোর্ট স্টেশন মোড়ের জামিল চত্বর এলাকা থেকে কাশিয়াডাঙ্গা থানা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
অপহরণকারীরা বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বলে জানিয়েছে পুলিশ। তারা নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে অপহৃত রাবি ছাত্রের মায়ের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে।
উদ্ধার হওয়া রাবি ছাত্র রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী থানার চান্দলাই গ্রামের মৃত অসীম কুমার বর্মনের ছেলে রাতুল কুমার বর্মন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।
অন্যদিকে গ্রেপ্তার হওয়াদের মধ্যে রয়েছেন- রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার রানীনগর হিন্দুপাড়ার ইন্দ্রজিৎ সরকারের ছেলে পবন সরকার উদয়, রাজপাড়া থানার হড়গ্রাম বাজার এলাকার মৃত সাইদুল ইসলামের ছেলে দাউদ ইব্রাহিম সাফি, একই এলাকার মৃত সুরে জামাল শেখের ছেলে পলাশ কবির, কাশিয়াডাঙ্গা থানার হড়গ্রাম পালপাড়ার হরেন্দ্রনাথ পালের ছেলে প্রবীন পাল রুদ্র ও একই এলাকার শামসুর রহমান বাদলের ছেলে ওয়াহিদুর রহমান নুর।
মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার রফিকুল আলম বলেন, ‘অপহরণের শিকার রাতুল কুমার বর্মনের সঙ্গে আসামি পবন সরকারের মোবাইলফোনে পরিচয় হয়। সেই সূত্র ধরে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় পবন মোবাইলফোনে কল দিয়ে রাতুলকে কাশিয়াডাঙ্গা থানার হড়গ্রাম কোর্টস্টেশন মোড়ের জামিল চত্বরে যেতে বলেন। রাতুল সেখানে পৌঁছালে পবনের সহযোগী দাউদ ইব্রাহিম ও পলাশ তাকে অপহরণ করে। পরে হড়গ্রাম বাজারে দাউদ ইব্রাহিমের একতলা বিল্ডিংয়ের নিচতলার একটি কক্ষে রাতুলকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই রাতে আসামিরা রাতুলের মোবাইলফোন থেকে তার মাকে ফোন করে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। রাতুলের মা বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা পাঠান। আসামিরা অবশিষ্ট টাকার জন্য রাতুলকে মেরে জখম করে। রাতুল আসামিদের সঙ্গে ধ্বস্তাধস্তি করে এক পর্যায়ে ঘরের বাইরে আসেন এবং চিৎকার শুরু করে।
পরে স্থানীয় এক বাসিন্দা পুলিশকে বিষয়টি জানায়। খবর পেয়ে কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসির নেতৃত্বে একটি দল রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ওই বাড়ি থেকে পাঁচ অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করেন। পাশাপাশি রাতুলকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।’
কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি মশিউর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনায় রাতুল পাঁচ জনের নামে অপহরণ, মারধর ও টাকা আদায়ের অভিযোগে মামলা করেছেন। ঘটনার সঙ্গে পাঁচ জনই জড়িত ছিল এবং সবাই ধরা পড়েছে। গ্রেপ্তারদের আদালতের মাধ্যমে শনিবার দুপুরে রাজশাহী কারাগারে পাঠানো হয়েছে।