বরগুনা সদরে আদালতের রায়ের পর আপিল শুনানির আগেই বিরোধপূর্ণ জমির সহস্রাধিক গাছ কেটে ফেলেছেন মামলার বাদীপক্ষের লোকজন।
হেউলীবুনিয়া এলাকায় শুক্রবার বিকেল ও শনিবার সকালে ‘ইহান পল্লী’ নামের বাগানে এ ঘটনা ঘটে।
জমির মালিক আরিফ খান জানান, ১০ বছর আগে স্থানীয় রহিম মিয়া ও আবু জাফরের কাছ থেকে দুই একর ২০ শতাংশ জমি সাফ কবলায় কেনেন। এর মধ্যে এক একরের বেশি জমিতে ‘ইহান পল্লী’ নামের একটি বাগান গড়ে তোলেন।
তিনি জানান, পল্লীর ভেতরে পুকুর খনন করে চারপাশ ঘিরে দেশীয় ফলদ গাছ রোপণ করেন। জমি কেনার তিন বছর পর স্থানীয় জাফর হোসেন নামের এক ব্যক্তি জমি দাবি করে বিক্রেতা আবদুর রহিম ও আবু জাফরকে বিবাদী করে বরগুনা আদালতে দুটি মামলা করেছিলেন, কিন্তু আদালত মামলাগুলো খারিজ করে দেয়। মামলায় হারার পর বাদী জাফর হোসেন বিবাদীদের সঙ্গে আপস করে ইহান পল্লীর দেখভালের দায়িত্ব নেন।
গত বছরের মার্চের দিকে জাফর তার চাচাতো ভাই জাকির হোসেনকে বাদী করে ফের বরগুনা আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলার বাদী জাকির হোসেনের পক্ষে রায় দেয়।
রায় পাওয়ার পর শুক্রবার বিকেলে জাফর, জাকির, হারুন, শাহ আলম ও তার ছেলে সানি ইহান পল্লীর ভেতরের এক হাজারেরও বেশি গাছ কেটে ফেলেন।
আরিফ খান বলেন, ‘রায় শুনে আমরা আপিল করেছি। রোববার আপিলের শুনানি হবে। অথচ তার আগেই ওরা গাছগুলো কেটে ফেলল।’
তিনি বলেন, ‘আমি কয়েক বছর ধরে আম, জাম, আমলকী, জলপাই, কামরাঙা, চালতাসহ কয়েক হাজার দেশীয় ফলদ গাছ রোপণ করেছিলাম। আমার সেই গাছ কেটে ফেলা মানে আমাকেই হত্যা করা। রায় পেয়েছে শুনে আমি বিবাদীদের অনুরোধ করেছিলাম। জমি যদি পেয়ে যান তাহলে আপনারাই গাছ ভোগদখল করেন; আমার কোনো দাবি নেই, কিন্তু নির্মমভাবে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। আমরা আপিল করেছি।
‘আগামীকাল শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। শুনানির পর আমরা ফৌজদারি আইনের আশ্রয় নেব।’
মামলার বাদী জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা রায় পেয়েছি। আদালত লাল নিশান পুঁতে জমি বুঝিয়ে দিয়েছে।’
গাছ কেটে ফেলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আপনার বিষয়টি আদালতের কাছে জানতে চান।’
বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী আহম্মেদ বলেন, ‘যেহেতু বিষয়টি আদালতের আদেশ, এখানে আমাদের হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগ নেই, তবে সেখানে যদি ফৌজদারি অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকে তবে কোনো পক্ষ চাইলে প্রতিকারের জন্য থানায় আসতে পারেন। আমরা তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেব।’