বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অর্থ পাচার ঘৃণা করি, কর্মকর্তাদের এত বিদেশ সফর কেন: কাদের

  •    
  • ৫ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৫:০২

‘কিছু মানুষ টাকা ছাড়া কিছুই বোঝে না। তাদের আরও টাকা দরকার, আরও সম্পদ দরকার। কেউ কেউ কষ্টার্জিত টাকা বিদেশে পাচার করে, তাদের আমরা ঘৃণা করি। এই দেশ আরও উন্নত হবে যদি সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি, চুরি, পাচার বন্ধ করতে পারি।’

অর্থ পাচার ঠেকাতে পারলে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যেত বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ জন্য এই অপকর্মকে তিনি ঘৃণা করেন বলে জানিয়েছেন। সরকারি কর্মকর্তারা অকারণে বিদেশ সফর করেন বলেও মনে করেন তিনি। বলেছেন, এর কোনো মানেই হয় না।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সড়ক ও জনপথ প্রকৌশলী সমিতির ৩০তম সম্মলনে প্রধান অতিথির হয়ে যান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। এ সময় এসব কথা বলেন।

২০০৯ সালের শুরুতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ১৪ বছরে উন্নয়নে অর্জনে বাংলাদেশ বদলে গেছে বলেও দাবি করেন আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ কষ্টার্জিত টাকা বিদেশে পাচার করে দেশের ক্ষতি করছে বলে মন্তব্য করছে। এদের আমরা ঘৃণা করি।’

কাদের বলেন, ‘কিছু মানুষ টাকা ছাড়া কিছুই বোঝে না। তাদের আরও টাকা দরকার, আরও সম্পদ দরকার। কেউ কেউ কষ্টার্জিত টাকা বিদেশে পাচার করে, তাদের আমরা ঘৃণা করি। ‘এই দেশ আরও উন্নত হবে যদি সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি, চুরি, পাচার বন্ধ করতে পারি।

‘প্রয়োজন ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা বিদেশে ভ্রমণ করতে যায়, এটা আমাদের ভাবায়। সরকারি চাকরিজীবীদের কোনো একটা কারণ দেখিয়ে বিদেশে যেতেই হবে। এই বিদেশ ভ্রমণ কেন? অনেকে চিকিৎসার জন্য কথা বলে যায়, কেউ কেউ হয়তো আসলেই চিকিৎসা করতে যায়। সব বিষয়ে বাস্তবতা উপলব্ধি করতে হবে।’

প্রকৌশলীদের সৎ থাকার পরামর্শ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশ সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে। আমাদের রেমিট্যান্স বাড়তে শুরু করেছে।’

‘দেশ আজ উন্নত বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে’এই দাবি করে সড়ক মন্ত্রী বলেন, ‘যেদিকেই তাকাবেন, দেখবেন বদলে যাওয়া বাংলাদেশ, বদলে গেছে মানুষের লাইফস্টাইল।

‘সড়কপথে যোগাযোগব্যবস্থা বৈপ্লবিক পরিবর্তন দৃশ্যমান। আমাদের এত অর্জন, পদ্মা সেতুর মতো প্রকল্প আমাদের সাহস ও স্বপ্নের প্রতীক, সক্ষমতার প্রতীক। এটা বিশ্বকে বিস্মিত করেছে। বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু থেকে সরে গিয়েছিল, তারাই আজ তারাই নিজেদের ভুল স্বীকার করেছে। বিশ্বব্যাংক সাম্প্রতিক উক্তি করেছে যে, বাংলাদেশের আজকের উন্নয়ন ও অর্জন বিশ্ব জেনে গেছে।

‘এমআরটি-৬ লাইনের প্রথম অংশের উদ্বোধন হয়েছে, এক্সপ্রেসওয়ে হয়েছে, সার্ভিস লেনসহ ৬ লেন হয়েছে শত সড়কের উদ্বোধন করা হয়েছে। ঢাকা-সিলেট চার লেন প্রকল্প, সিলেট-তামাবিল চার লেন প্রকল্প, জয়দেবপুর-এলেঙ্গা চার লেন, রংপুর থেকে বুড়িমারী, ওদিকে যাবে পঞ্চগড় পর্যন্ত।

‘ঢাকা থেকে সিলেট তামাবিল, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার, যশোর থেকে খুলনা, ভাঙ্গা থেকে পায়রা, পদ্মা সেতুর সঙ্গে বেনাপোলের সংযোগ চার লেন করা হবে।’

পাহাড়েও আজ উন্নয়ন পৌঁছে গেছে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘দূর-দূরান্তে চলে গেছে সড়ক নেটওয়ার্ক। পাহাড়ের উৎপাদিত পণ্য আগে পচে যেত, সেই দুর্দিন আজ নেই।’

‘রংপুরে শোচনীয়ভাবে হারলেও গাইবান্ধায় তো জিতেছি’রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বড় ব্যবধানে হারলেও গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে বড় ব্যবধানে জয় পাওয়ার কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সরকার কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি মৃত ইস্যু উল্লেখ করে তিনি বিরোধী দলের উদ্দেশে বলেছেন, সরকারের পরিবর্তন চাইলে নির্বাচনে আসতে হবে।

বিএনপি আন্দোলনের নামে সহিংসতা করলে জনগণের জানমাল রক্ষায় সমুচিত জবাব দেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক।

গত ২৭ ডিসেম্বর উত্তরাঞ্চলের রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জামানত হারানো ক্ষমতাসীন দলের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করে। এই ঘটনায় বিরোধী জোটের পক্ষ থেকে বক্তব্য আসে, আওয়ামী লীগের জামানত হারানোর যুগ শুরু হয়েছে। অর্থাৎ ক্ষমতাসীনদের জনপ্রিয়তা তলানিতে।

তবে আট দিন পর উত্তরেরই আরেক জেলা গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনের ভোটে বড় ব্যবধানে জয় পায় আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দল মনে করে, তাদের ভোট ব্যাংক অক্ষুণ্ন আছে।

গত ১২ অক্টোবর এই আসনে উপনির্বাচনে ভোটে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ভোটারদের জোট করে ভোট দিতে বাধ্য করার ঘটনাটি সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখে ভোট বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। প্রায় দুই মাস পরে নেয়া ভোটে কোনো অভিযোগই ওঠেনি।

কাদের বলেন, ‘গাইবান্ধা উপনির্বাচন হয়েছে। কেউ এ নিয়ে কোনো কথা বলতে পারছে না। রংপুরে আমরা শোচনীয়ভাবে হেরেছি। তার পরও নির্বাচনে জনগণের রায় মেনে নিয়েছি। এটাই গণতন্ত্র।

‘আগামী নির্বাচনও অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। নির্বাচন কর্তৃত্বপূর্ণ হবে, স্বাধীন থাকবে, যাতে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করা যায়। সরকার কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করবে না। কাজেই সরকারের পরিবর্তন চাইলে নির্বাচনে আসুন।’

নির্বাচনই সরকার পরিবর্তন করতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জনগণ চাইলে আমরা আছি, না চাইলে আমরা নেই। আমাদের নেত্রী যে কথা বলেছেন, আমি তারই প্রতিধ্বনি করছি।’

‘১০ আর ৩০ ডিসেম্বর ঘোড়ায় ডিম পারল’বিএনপির দাবি করা তত্ত্বাবধায়ক সরকার মেনে না নেয়ার ইঙ্গিত দিয়ে কাদের বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার, দিস ইজ আ ডেড ইস্যু। উচ্চ আদালতের রায়ে এই ইস্যু আর জীবিত নেই। কাজেই ডেড ইস্যু নিয়ে আবার নতুন করে তোড়জোড় হাঁকডাক এটা অবশ্যই গণতন্ত্র এলাউ করে না। দেশের জনগণও করে না।’

বিএনপির আন্দোলনের হুমকি নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতা বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থানকে স্বাগত জানাই। কিন্তু এটা সহিংস রূপ ধারণ করলে আমরা জনগণের জানমাল রক্ষায় সমুচিত জবাব দিতে প্রস্তুত। এটা আমি আবারও জানিয়ে রাখলাম।

‘আমরা ১০ ডিসেম্বর দেখেছি। ১০ ডিসেম্বরের পর আমরা আরও একটা দিবস দেখেছি। ৩০ ডিসেম্বর আমরা দেখেছি। অনেক হাঁকডাক। শেষ পর্যন্ত কী হলো, ঘোড়ায় ডিম পারল। এসব হাঁকডাকে ঘোড়াও হাসে। চারদিকে শঙ্কা, এই হবে, সেই হবে, দেশ সংঘাতের দিকে যাচ্ছে, শেষ পর্যন্ত কিছুই হলো না।

‘কাজেই হাঁকডাক, হুমকি-ধমকি, সরকার পতন- এসবকে শেখ হাসিনা ভয় পান না। আল্লাহপাক ছাড়া আর কাউকে ভয় করেন না।’আওয়ামী লীগ ঘরে গণতন্ত্র চর্চা করে এবং দেশে গণতন্ত্র বিকশিত করে দাবি করে কাদের বলেন, ‘গণতন্ত্র এই দেশে স্বৈরশাসকদের হাতে পিষ্ট হয়েছে। আজকে শেখ হাসিনা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন।’

বিরোধী দল শক্তিশালী হলে গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘কিন্তু বিরোধিতার কারণে বিরোধিতা, জ্বালাও-পোড়াও, আগুন সন্ত্রাস, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে গণতন্ত্রের ভাষা স্তব্ধ হয়ে যায়।’

সড়ক ও জনপথ প্রকৌশলী সমিতির সভাপতি সৈয়দ মঈনুল হাসানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ইসহাক ও সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী অমিত কুমার চক্রবর্তী।

এ বিভাগের আরো খবর