ভোর থেকে সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন। বেলা গড়িয়ে দুপুর হলেও নেই সূর্যের দেখা। খড়কুটো জ্বালিয়ে, মোটা কাপড় পরে চলছে শীত নিবারণের চেষ্টা।
দেশজুড়ে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির মধ্যে বৃহস্পতিবার এমন পরিস্থিতি দেখা গেছে মেহেরপুরে, যাতে বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা ও মেহেরপুর আবহাওয়া নির্ণয়কারী রকিবুল হাসান জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় মেহেরপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, তবে কুয়াশার সঙ্গে বাতাস থাকায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে। এমন আবহাওয়া আরও কয়েক দিন চলবে।
গাংনী উপজেলার বামন্দী গ্রামের ভ্যানচালক সৈকত আলী বলেন, ‘এবারের শীত একবারে হাড়ের মধ্যে ঢুইকি যাইছে, হাত-পা সব কালা হইয়ি যাইছে। তার ওপর এ বছর তো সরকার থেকে কোনো কিছু পাইওনি।’
ইটভাটা শ্রমিক মুকুল হোসেন বলেন, ‘কাজের জন্য খুব সকালে বের হতে হয়। আমি ভাটায় মাটি ছানি (মাখি)। সকালে কাদায় পানি দিতে গেলি মনে হয় বরফ নাড়ছি। খুব কষ্ট হয়; কিছু করার নেই।’
রোগী বাড়ছে হাসপাতালে
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে প্রতিদিনই জ্বর-সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া, আমাশয়, ডায়রিয়াসহ ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। ধারণক্ষমতার চেয়ে রোগী বেশি হওয়ায় অনেকের জায়গা হয়েছে হাসপাতালের মেঝেতে। আক্রান্তদের বেশির ভাগই শিশু ও বয়স্ক।
ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন সাব্বির হোসেন। তার মা জানান, চার দিন আগে তার ছেলের হঠাৎ করে ঠান্ডা লাগে। পরে শুরু হয় ডায়রিয়া।
ওই নারী জানান, ছেলেকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। হাসপাতালে শয্যা খালি না থাকায় মেঝেতে রেখে চিকিৎসা শুরু হয় তার। পরদিন সকালে বেড পান। এখন ছেলের অবস্থা ভালো।
বুধবার সকাল থেকে ৫০ নারী ও শিশু এবং ২৮ পুরুষ ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে ভর্তি হয় গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে জানতে চাইলে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুপ্রভা রানী জানান, শীত বাড়ায় ঠান্ডাজনিত রোগবালাই দেখা দিয়েছে। হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও নার্সরা সাধ্যমতো সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
রোগ থেকে বাঁচতে গরম কাপড় ও মাস্ক পরাসহ ঠান্ডাজাতীয় খাবার পরিহারের পরামর্শ দিয়েছেন এ কর্মকর্তা।