পৌষের মাঝামাঝি সময়েই শীত জেঁকে বসেছে। সূর্যের দেখা না মেলায় দিনের উত্তাপ কমায় চারদিকে জবুথবু অবস্থা। এরই মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে ঘন কুয়াশায় দুপুরবেলাতেও অন্ধকার অবস্থা বিরাজ করে। এতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠা-নামায় বিঘ্ন ঘটছে।
বুধবার সকাল থেকে একটি ফ্লাইটকে ভারতের হায়দ্রাবাদে ডাইভার্ট করা হয়েছে। আর নির্ধারিত সময়ে উড়াল দিতে পারেনি অন্তত সাতটি ফ্লাইট।
বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘কুয়াশার কারণে সাতটি এয়ারলাইনসের ফ্লাইট বিলম্বে ছাড়তে হয়েছে। এগুলো হলো জাজিরা এয়ার, ইউএস বাংলা, এয়ার এরাবিয়া, ফ্লাই দুবাই, কাতার এয়ারওয়েজ, ওমান এয়ার এবং ইন্ডিগো এয়ারলাইনস।
তবে কোনো ফ্লাইটকেই যাত্রা বাতিল করতে হয়নি। তবে সবগুলো ফ্লাইটই নির্ধারিত সময়ের পরে পরিচালিত হয়েছে।’
কুয়াশায় কেন বিলম্বসাধারণত বৈরী আবহাওয়া কিংবা ঘন কুয়াশার কারণে পাইলট খালি চোখে রানওয়ে দেখতে না পারলে নিরাপদ অবতরণের জন্য বিমানবন্দরগুলোতে ইনস্ট্রুমেন্ট ল্যান্ডিং সিস্টেম বা আইএলএস প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।
এ পদ্ধতিতে প্রযুক্তির মাধ্যমে পাইলটকে এক ধরনের বেতার তরঙ্গ পাঠানো হয়। এর মাধ্যমে সহজেই রানওয়ের অবস্থান শনাক্ত করতে পারেন পাইলট।
বর্তমানে দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়া কোনোটিতেই নেই বৈরী আবহাওয়ায় উড়োজাহাজ ওঠানামার এ প্রযুক্তি। যে তিনটি বিমানবন্দরে এ প্রযুক্তি আছে তাও পুরোনো। ফলে ঘন কুয়াশা কিংবা ঝড়-বৃষ্টির কারণে দৃষ্টিসীমা কমে এলেই বিঘ্নিত হয় উড়োজাহাজ চলাচল।
ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যে আইএলএস আছে, তার দৃষ্টিসীমা ৬০০ মিটার। শীতকালে ঘন কুয়াশায় প্রায়ই বিমানবন্দরের রানওয়েতে দৃষ্টিসীমা নেমে আসে ৫০ থেকে শূন্য মিটারে। ফলে পুরনো আইএলএস দিয়ে ফ্লাইট ওঠানামা করানোয় বিঘ্ন ঘটছে।
কখনো কখনো উড়োজাহাজগুলোকে নিরাপদ অবতরণে পাঠানো হচ্ছে বিকল্প বিমানবন্দরে। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে এয়ারলাইন্সগুলো।
এদিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মধ্যরাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং এটি দেশের কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
সারা দেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা পার্থক্য কমে যাওয়ার কারণে দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চলে মাঝারি থেকে তীব্র শীতের অনুভূতি অব্যাহত থাকতে পারে।
মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেটি বুধবার আরও খানিকটা কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।