বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘গতবারের মতো এবার টানাটানি নাই’

  •    
  • ৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ১১:১৯

ভোটার হাবিজার রহমান বলেন, ‘গতবার ভোট দিবের পাই নেই। ওমরা জোর করি হামার ভোটটা মারি নিছিল। এবার ওংকা হয় নাই; ভোটটা নিজে দিবের পাছি। ভাল লাগতিছে।’

‘গতবার হাত ধরি টানাটানি। হামি দিম একঠাঁই ভোট; ওমরা জোর করি নিল আরেকঠাঁই। গতবারের ডউল এবার টানাটানি নাই। ভোট ভাল দিছি- আলহামদুলিল্লাহ।’

কথাগুলো বলছিলেন অনিয়মে বন্ধ হওয়া গাইবান্ধা-৫ আসনের দ্বিতীয় দফার উপ-নির্বাচনে ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া এমএইউ একাডেমি কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা ভোটার হাবিজার রহমান।

তিনি বলেন, ‘গতবার ভোট দিবের পাই নেই। ওমরা জোর করি হামার ভোটটা মারি নিছিল। এবার ওংকা হয় নাই; ভোটটা নিজে দিবের পাছি। ভাল লাগতিছে।’

একই কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পেরে মহাখুশি ষাটোর্ধ্ব মাজেদ আলী। তিনি বলেন, ‘এবার ভোট ভালো। কোনো সমেস্যা নাই।’

একই নির্বাচন কিন্তু ভোট দিলেন দুই দফায় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গতবার ভোট দিতে পারি নাই বাহে। প্রথম নখের (আঙুল) ছাপ আসে নাই; পরে আসি শুনি আমার ভোট নাকি হয়া গেছে।’

আরেক ভোটার রনজু মিয়া বলেন, ‘ওবার (গতবার) ভোট হচে টানাটানির; যাই যারটা মারি নিবের পায়। তবে এবার কোনো ঝামেলা নাই। ভালভাবে ভোট দিছি।’

চরম অনিয়মের কারণে বন্ধ গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনে দ্বিতীয় দফায় ভোটগ্রহণ বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শুরু হয়েছে। যা চলবে একটানা বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে আসনটিতে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা।

এর আগে মঙ্গলবার সকাল থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হয় ইভিএমসহ নির্বাচনী সব সরঞ্জাম। ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে এসব সরঞ্জাম সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

বুধবার সকাল থেকেই ভোট দিতে কেন্দ্রে আসেন ভোটাররা। তবে ঘন কুয়াশা ও শীতের কারণে প্রতিটি কেন্দ্রে সকাল থেকে ভোটারদের উপস্থিতি একেবারে কম ছিল। তবে সময়ের সঙ্গে কেন্দ্রগুলোতে বাড়তে থাকে ভোটারের উপস্থিতি।

গাইবান্ধা-৫ আসনটি ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ দুই উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৪ জন। ১৪৫টি কেন্দ্রে এসব ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন।

চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের কথা জানিয়েছেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম।

এছাড়া নির্বাচনে যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের কথাও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার (এসপি) কামাল হোসেন।

এই নির্বাচনে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মাঠে সক্রিয় আওয়ামী লীগের মাহমুদ হাসান রিপন (নৌকা) ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী (জাপা) এএইচএম গোলাম শহিদ রঞ্জু (লাঙল)। ভোটের মাঠে প্রচারণায় দেখা যায়নি বিকল্পধারা বাংলাদেশের জাহাঙ্গীর আলম (কুলা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবুর রহমানকে (ট্রাক)।

এছাড়া গত ২৫ ডিসেম্বর অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ (আপেল) গত ২৫ ডিসেম্বর বগুড়া প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে ভোট কারচুপির আশঙ্কায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।

গাইবান্ধা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী গত ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আসনটিতে ১২ অক্টোবর উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলাকালে প্রথমে গোপন কক্ষে একাধিক ব্যক্তি প্রবেশ করায় ভরতখালি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র, ফুলছড়ি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র এবং সাঘাটা উপজেলার রামনগর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে দফায় দফায় ৫১টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে ইসি।

অনিয়মের ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য কমিটি গঠন করা হয়।

তদন্ত শেষে ৪ জানুয়ারি গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

এ বিভাগের আরো খবর