বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কেন এত পোস্টার লাগান হাজী মিলন

  •    
  • ৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ২১:২৫

‘রাস্তায় বের হলেই আমারে দেখা যায়, এই জন্য অন্যদের খারাপ লাগে। আমার ছবি কেন রাস্তায় দেখা যায়, তাদের ছবি কেন দেখা যায় না– এ জন্যে তাদের খারাপ লাগে।’

‘ঢাকা শহরের রাস্তায় বের হলেই আমাকে দেখা যায়, কারণ আমি উঁচুতে পোস্টার লাগাই। নিচে পোস্টার লাগালে তো অন্যরা আমার পোস্টারের উপর পোস্টার মাইরা দিব। তখন তো কেউ আমারে দেখতে পারবে না,’ বললেন হাজী সাইফুদ্দিন আহম্মেদ মিলন, যিনি ‘পোস্টার বয়’ নামে পরিচিত হয়ে উঠেছেন।

ঢাকা শহরের যেদিকে চোখ যায়, সেদিকেই দেখা যায় হাজী মিলনের পোস্টার। জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে শুরু করে নানান উপলক্ষে ছাপানো পোস্টারে দেখা যায় তার হাস্যোজ্জ্বল মুখ। সম্প্রতি মেট্রোরেলের পিলারে পোস্টার লাগানো নিয়ে তিনি নতুন করে আলোচনায় এসেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

হাজী সাইফুদ্দিন আহম্মেদ মিলন পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য। ঢাকা দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী হয়ে হেরেছেন দুই বার।

নিউজবাংলার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘রাস্তায় বের হলেই আমারে দেখা যায়, এই জন্য অন্যদের খারাপ লাগে। আমার ছবি কেন রাস্তায় দেখা যায়, তাদের ছবি কেন দেখা যায় না– এ জন্যে তাদের খারাপ লাগে। ঢাকা শহরে দেড়-দুই কোটি মানুষ থাকে। এর মধ্যে দুই-তিন শ মানুষ সমালোচনা করে। কারণ তাদের খারাপ লাগে, আর বাকি মানুষ প্রশংসা করে। এই দুই-তিন শ লোকের ছবিসহ পোস্টার লাগায় দেন, দেখবেন তাদের কাছেও ভালো লাগবে।’

হাজী মিলন ঢাকা দক্ষিণে রাজনীতি করলেও উত্তর ঢাকাতেও তার পোস্টার ও প্রচারনা দেখা যায়। গত ২০ বছর ধরে তিনি নিজের পোস্টার লাগিয়ে আসছেন বলেন জানান হাজী সাইফুদ্দিন।

অতিরিক্ত পোস্টার লাগানোর কারণ জানতে চাইলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এগুলো আমি দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে মারছি। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পার্টি আমাকে রিকোয়েস্ট করে, তাই আমি পোস্টার লাগাই। আমি পার্টিতে টাকা দেই, ওরা পোস্টার লাগায়।’

পার্টির পোস্টার ছাড়াও ঈদসহ বিভিন্ন উপলক্ষেও তার পোস্টার দেখা যাওয়ার বিষয়টি জানানো হলে তিনি বলেন, ‘ওই মাঝে মাঝে পোস্টার লাগাই আরকি।’

মেট্রোরেলের পিলারে পোস্টার লাগানোর ব্যাপারে জানতে চাইলে হাজী সাইফুদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মেট্রোরেলের পিলারের পোস্টার তো উঠায় ফালাইছি আমরা। ওই ছেলেদের বারণ করার পরও তারা পোস্টার লাগায় ফালাইছিল। একদিন লাগায় ফালাইছে, এরপর আমরা যখন দেখছি, তহন আমরা বারণ করছি। পিলারে তো আমরা পোস্টার লাগাতে ওদের বলিনি। অশিক্ষিত লোক তো, তাই ওরা লাগায় ফালাইছে। এরপর কিছু কিছু জায়গায় আমরা এই পোস্টার তুলছিও। আরো পোস্টার তুলব, কিন্তু পোস্টার তোলার লোক খুঁজে পাচ্ছি না। কেউ এগুলো তুলতে চায় না। আঙ্গুল-টাঙ্গুল ছুইল্লা যাই তো, তাই।’

আগামীতেও পোস্টার লাগানোর পরিকল্পনা আছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, না, ওই রকমভাবে পোস্টার মারার পরিকল্পনা আমার নাই।’

পোস্টারের পেছনে বছরে তার খরচ জানতে চাইলে হাজী মিলন বলেন, ‘এটা তো বলতে পারব না। যখন যা লাগে, তখন সেটা খরচ করি।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার পোস্টার তো আমি লাগাই না, মানুষে লাগায়। আমার পোস্টার আমি রাস্তায় গিয়ে মারব, এটা হয় নাকি? আমি তো বছরে একবার পোস্টার লাগাই। আর অন্যরা তো সারা বছরই পোস্টার লাগায়।’

পোস্টার লাগানোর পেছনে কত জন কর্মী নিযুক্ত, জানতে চাইলে মিলন বলেন, ‘এগুলো বিভিন্ন মানুষ লাগায়, কত জন লাগায় এটা তো জানি না। এগুলো পার্টির মানুষ লাগায়।’

পোস্টার লাগানোর কারণে সিটি করপোরেশন তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও করেছে বলে জানান তিনি। পোস্টারে ব্যবহৃত ছবি সাম্প্রতিক কালের তোলা কিনা জানতে চাইলে হাজী মিলন বলেন, ‘এগুলো এখনকার ছবি। আর আগের পোস্টারে আগের ছবি।’

দক্ষিণ সিটির নির্বাচন করলেও উত্তর সিটি এলাকায় পোস্টার লাগানোর যৌক্তিকতা জানতে চাইলে হাজী মিলন বলেন, ‘পোস্টার মারলে সবাই চিনে। আর ওই পোলাপাইনরা সব জায়গায় পোস্টার মাইরা দেয়। আমি তো ওদের বলি না উত্তরে পোস্টার মারতে।’

ঢাকা শহরে পোস্টার মারা নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটির জনসংযোগ কর্মকর্তার মোহাম্মাদ আবু নাসের বলেন, ‘ঢাকা শহরে এই ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার অপসারণে দক্ষিণ সিটি বছরে পাঁচ-ছয়বার অভিযান চালায়। এটা হয়তো পর্যপ্ত নয়, তারপরও আমরা এগুলো অপসারণ করি এবং যারা এই পোস্টার মারে তাদেরকেও নোটিশ করি।’

পোস্টার মারা থেকে বিরত করতে হাজি মিলনের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে আবু নাসের বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা তাকে নোটিশ করেছি। শুধু হাজি মিলনই নয়, যারা যারা এই পোস্টার দিয়ে দূষণ করে, আমরা তাদের সবাইকেই নোটিশ করি। কোনো কোনো জায়গায় জরিমানা ও মামলাও করি।’

এ বিভাগের আরো খবর