বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে ফের একের পর এক প্রাণীর মৃত্যু

  •    
  • ৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৭:২৯

গত বছরও শীতে সাফারি পার্কে একের পর এক প্রাণী মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ওই বছরের ২ জানুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১১টি জেব্রা, একটি বাঘ ও একটি সিংহের মৃত্যু হয়। ২৬ ফেব্রুয়ারি মারা যায় আফ্রিকান প্রাণী লেমুর। এবারও শীত পড়তে না পড়তেই তিনটি প্রাণীর মৃত্যু হলো।

গাজীপুরের শ্রীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে শেল বাহাদুর নামে হাতির মৃত্যুর কথা ১১ দিন গোপনের বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার মধ্যে জানা গেল, একটি সিংহী ও একটি ব্লু ওয়াইল্ড বিস্টও মারা গেছে, যেগুলোর কথা প্রচার হয়নি।

হাতিটি মারা যায় গত ২১ ডিসেম্বর। সেটি জানাজানি হয় ঘটনার ১১ দিন পর ১ জানুয়ারি সন্ধ্যায়। সেদিন পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, অন্য হাতির সঙ্গে ধাক্কায় মাথায় আঘাত পেয়ে মারা গেছে শেল বাহাদুর।

প্রাণীটির মৃত্যুর ঘটনায় করা সাধারণ ডায়েরির বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে বেরিয়ে আসে, তার ৫ দিন আগে মারা যায় একটি সিংহী। এরও আগে ১৯ নভেম্বর মারা যায় একটি ব্লু ওয়াইল্ড বিস্ট।

গাজীপুর জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (কালিয়াকৈর সার্কেল) আজমীর হোসেন বলেন, 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী বন সংরক্ষক এ সি এফ মো. রফিকুল ইসলাম তিনটি জিডি করেছেন। জিডিতে একটি ওয়াইল্ডবিস্ট, একটি সিংহী ও একটি হাতির মৃত্যুর ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে।'

যোগাযোগ করা হলে সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক ইমরান হাসান দাবি করেন, বার্ধক্যজনিত রোগে গত ১৯ নভেম্বর একটি ওয়াইল্ডবিস্ট মারা যায়।

পার্কের এক কর্মী জানান, ওয়াইল্ডবিস্টটি অসুস্থতায় ভুগছিল।

আফ্রিকা থেকে আনা এই প্রাণীটির গড় আয়ু ২০ বছরের মতো। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে এর চেয়ে বেশি বাঁচার উদাহরণ আছে। সাফারি পার্কের এই প্রাণীটির বয়স কত, সেটি অবশ্য জানানো হয়নি।

সিংহীটি কেন মারা গেল, এই প্রশ্নে সাফারি পার্কের কর্মকর্তা বলেন, ‘বেষ্টনীতেই মারা যায় সেটি। সেদিনই ময়নাতদন্ত করা হয়। প্রাথমিকভাবে সিংহীটির মৃত্যু হার্ট অ্যাটাকে হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।’

সাফারি পার্কে ঘুরে বেড়ানো বিভিন্ন প্রাণী। ছবি: নিউজবাংলা

আরও নিশ্চিত করতে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নমুনা রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাকেন্দ্রসহ বিভিন্ন পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘পরীক্ষাগারে পাঠানো নমুনার প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।’

এই ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক। বলেন, ‘কমিটি তদন্তের প্রয়োজনে আরও দুই সদস্যকে যুক্ত করে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন।’

পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, সিংহীটি ২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আনা হয়েছিল। এর বয়স ছিল ১৪ বছর। এটি মারা যাওয়ায় এখন সাফারি পার্কে সিংহী আছে মাত্র একটি। সিংহ আছে সাতটি।

তবে এ বিষয়ে পুরোপুরি গণমাধ্যমকে এড়িয়ে চলছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী বন সংরক্ষক রফিকুল ইসলাম। তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে জেব্রার দল। ফাইল ছবি

গত বছরও এই সময়ে সাফারি পার্কে একের পর এক প্রাণী মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ওই বছরের ২ জানুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১১টি জেব্রা, একটি বাঘ ও একটি সিংহের মৃত্যু হয়। ২৬ ফেব্রুয়ারি মারা যায় আফ্রিকান প্রাণী লেমুর।

এসব ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় হয়। এরপর দায়িত্বে অবহেলার কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী বন সংরক্ষক তবিবুর রহমানসহ চারজনকে বরখাস্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। সিআইডি এখনও মামলাটির তদন্ত করছে।

এ বিভাগের আরো খবর