চরম অনিয়মের কারণে বন্ধ ঘোষিত গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে কোনো অনিয়মকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব। জাতির সামনে একটি সুন্দর ইলেকশন উপহার দেয়ার প্রচেষ্টায় বর্তমান কমিশন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিকে অনিয়মের কারণে গত ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ আসনে উপনির্বাচন বন্ধ ঘোষণা করে ইসি। পরে ৪ জানুয়ারি এই আসনে ভোটের নতুন তারিখ ঘোষণা করে আউয়াল কমিশন। আগামীকাল এই আসনে ফের উপনির্বাচনে ভোট হবে।
গত ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ আসনে উপনির্বাচনে সবগুলো কেন্দ্র সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে ঢাকার নির্বাচন ভবনে বসে মনিটরিং করে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। ভোটে অনিয়ম ধরা পড়লে ভোট গ্রহণের চার ঘণ্টার মাথায় ১৪৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৫১টি ভোটকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে ভোট শেষের দেড় ঘণ্টা আগেই এই ভোট বন্ধ ঘোষণা করে।
ভোট বন্ধের ঘোষণার পর রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনা-সমালোচনার মুখে পড়ে বর্তমান কমিশন৷
এরপর এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই তদন্ত কমিটি করে আউয়াল কমিশন।
গত জুলাইয়ে সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার মৃত্যুতে এ আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে অনিয়ম ও দায়িত্ব অবহেলার প্রমাণ মেলায় রিটার্নিং কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশের পাঁচ উপপরিদর্শক (এসআই), ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাসহ ১৩৪ জনের বিরুদ্ধে বরখাস্তসহ নির্বাচন কর্মকর্তা বিশেষ আইন অনুসারে বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তির সিদ্ধান্ত দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেন, ‘গাইবান্ধা উপনির্বাচন সুষ্ঠু এবং অবাধভাবে করার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। অনিয়মের কারণে গাইবান্ধা উপনির্বাচনটা বন্ধ করা হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে সতর্কতার সঙ্গে গাইবান্ধার প্রত্যেকটা সিচুয়েশন আমরা মনিটর করছি এবং নির্দেশনা দিচ্ছি এবং অ্যাকশন নিচ্ছি। কোনো অনিয়মকে প্রশ্রয় একেবারে দেব না। জাতির সামনে একটি সুন্দর ইলেকশন উপহার দেয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি এবং আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত।’
নির্বাচন কমিশন কোনো প্রকার অনিয়ম পক্ষপাতিত্ব বা অস্বচ্ছতার প্রশ্রয় দেয় নাই বলে মনে করেন এই কমিশনার। বলেন, ‘ভবিষ্যতে দেব না। যেটার প্রতিফলন হয়েছিল গাইবান্ধা ইলেকশনে। এটা আবার ইলেকশন হতে যাচ্ছে। আমাদের কাছে কোনো ছাড় নাই।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং আমাদের রিটার্নিং অফিসার আমাদের কর্মকর্তারা তারা একযোগে কাজ করে সুন্দর একটা ইলেকশন উপহার দেয়ার জন্য প্রস্তুত।’
ভোটে প্রচারণা বন্ধ হওয়ার পর কেউ কেউ প্রচার চালানোর চেষ্টা করেছে জানিয়ে এই কমিশনার বলেন, ‘আমরা কিন্তু কঠিন হস্তে দমন করেছি। সঙ্গে সঙ্গে এনকোয়ারি করে অ্যাকশন নেয়া হয়েছে।’
অনিয়মের পুনরাবৃত্তি হলে তা দেখে পর্যালোচনা করে তারপর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান।